সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বিশ্বকাপে (Qatar World Cup) খেলতে নেমে জাতীয় সংগীতে গলা না মেলানো-দেশের ফুটবলারদের এহেন দুঃসাহস মানতে পারেননি ইরানের (Iran) কট্টরপন্থী শাসকরা। সরাসরি শাসানি দেওয়া হয়, পরের ম্যাচ থেকে যদি ফুটবলাররা ‘কথা না শোনেন’, তাহলে তাঁদের পরিবারের সদস্যদের উপরে নির্যাতন চালানো হবে। এখানেই না থেমে ইরানি ফুটবলারদের পরিবারের সদস্যদের আটক করা হয়েছে। সূত্র মারফত প্রকাশ্যে এল এহেন বিস্ফোরক খবর। আরও জানা গিয়েছে, অপহরণ করে আটক করে রাখা হতে পারে ফুটবলারের পরিবারের সদস্যদের। প্রসঙ্গত, হিজাব বিরোধী আন্দোলনে সমর্থন জানিয়ে মুখ খুলেছিলেন একাধিক ইরানি ফুটবলার। তবে এখনও পর্যন্ত প্রকাশ্যে তাঁদের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেয়নি ইরানের প্রশাসন।
ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে ম্যাচের আগে জাতীয় সংগীত গাননি ইরানের ফুটবলাররা। তার পরের দিনই ইরানি সেনার বিশেষ বিভাগের তরফে ফুটবলার ডেকে পাঠানো হয়। সেখানেই ফুটবলারদের স্পষ্ট জানিয়ে দেওয়া হয়, দেশের নিয়ম মেনে চলতে হবে। তা না হলে ফল ভুগতে হবে তাঁদের পরিবারকে। মার্কিন সংবাদমাধ্যমের দাবি, ফুটবলারের পরিবারের সদস্যদের উপরে নির্মম অত্যাচার চালানো হবে, এমন হুঁশিয়ারি দিয়েছে ইরানের প্রশাসন। দলের কোচ কার্লোস কুইরোজকেও আলাদা করে ডেকে পাঠানো হয়। ফুটবলারদের আচরণে লাগাম পরাতে বিশেষ নির্দেশ দেওয়া হয় তাঁকে, এমনটাই শোনা গিয়েছে।
ফুটবলারদের শুধু নির্দেশ দিয়েই থেমে থাকেনি রাইসি প্রশাসন। জানা গিয়েছে, কাতারের মাটিতে বিশেষ বাহিনী মোতায়েন করেছে ইরান। প্রত্যেক ফুটবলারের গতিবিধির উপরে নজর রাখছে ইরানের নিরাপত্তা বাহিনীর এই আধিকারিকরা। তাছাড়াও দেশে কোথায় কার সঙ্গে যোগাযোগ করছেন ফুটবলাররা, সমস্ত তথ্য চলে যাচ্ছে এই বাহিনীর হাতে। এমনিতেই কাতারে কার্যত বন্দি করে রাখা হয়েছে ইরানের ফুটবলারদের। অন্য দলগুলি যেখানে নানা জায়গায় ঘুরে বেড়াতে পারছে, সেখানে ইরানকে অনুশীলন ও ম্যাচ ছাড়া বেরনোর অনুমতি দেওয়া হয়নি।
ইতিমধ্যেই ইরানের জাতীয় দলের ফুটবলার ভোরিয়া ঘাফুরিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। হিজাব বিরোধী আন্দোলনে একাধিকবার সমর্থন জানিয়েছিলেন তিনি। ওয়াকিবহাল মহলের অনুমান, বিশ্বকাপের ফুটবল দলকে বার্তা দিতেই গ্রেপ্তার করা হয়েছে। দেশে ফিরে এসে সর্দার আজমৌনদেরও একই দশা হতে পারে বলেই মনে করা হচ্ছে। প্রসঙ্গত, বিশ্বকাপে আমেরিকার কাছে হেরে বিশ্বকাপ থেকে বিদায় নিয়েছে ইরান। টুর্নামেন্টের শেষ দু’টি ম্যাচে অবশ্য জাতীয় সংগীত গেয়েছেন ইরানের ফুটবলাররা। যেহেতু বন্দি রয়েছেন তাঁদের পরিবারের সদস্যরা, তাই দেশে ফিরতে বাধ্য চেসমিরা। দেশে ফিরে কোন ঝড়ের মুখে পড়বেন তাঁরা?
View this post on Instagram
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.