দু’দুটো বিশ্বকাপ চ্যাম্পিয়ন (World Cup)। একটিতে রানার্স। কোপা আমেরিকায় (Copa America) চ্যাম্পিয়ন দু’বার। জিতেছেন ফিফা কনফেডারেশন কাপও।
এই সব ক’টি তথ্যর যে কোনও একটি, কোনও ফুটবলারের তকমা হিসেবে থাকলে, বিশ্ব ফুটবলে বন্দিত হতেন তিনি। সেখানে এই সব ক’টি সম্মানের অধিকারী ব্রাজিলিয়ান কাফু। প্রাক্তন এই তারকা বিশ্বচ্যাম্পিয়ন অধিনায়ককে শতদ্রু দত্ত ইনিসিয়েটিভ কলকাতায় নিয়ে আসছে শুক্রবার সকালে। তার আগেই সাওপাওলো থেকে কলকাতার উদ্দেশ্যে বিমান ধরার আগে প্রাক্তন ব্রাজিলিয়ান অধিনায়ক কাফু (Cafu) কথা বললেন একমাত্র ‘সংবাদ প্রতিদিনের’ সঙ্গে। তবে খুবই কম সময়ে সামান্য কথা বার্তার মধ্যে সযত্নে এড়িয়ে গেলেন ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডোর প্রসঙ্গ।
আপনি কি জানেন, শুক্রবার সকাল ৮.৪৫ মিনিটে যে শহরে পা দিচ্ছেন, সেই শহরকে কলকাতা না বলে ব্রাজিলের যে কোনও শহরের নাম ধরে ডাকতে পারেন?
কাফু: ঠিক বুঝলাম না..।
মানে, সাওপাওলো কিংবা রিও ডি জানেইরো’তে ব্রাজিলের জাতীয় ফুটবল দলের জন্য যে সমর্থন নেমাররা পেয়ে থাকেন, কাতার বিশ্বকাপে কলকাতার মানুষের থেকেও একই সমর্থন পাবে তিতের দল?
কাফু: ওহ…। রিয়েলি? কলকাতার মানুষ ব্রাজিলকে এতটা ভালবাসে?
শুক্রবার সকালে বিমানবন্দরে পা দিলেই বুঝতে পারবেন।
কাফু: সংগঠকরা অবশ্য আমাকে বলেছেন, কলকাতায় ব্রাজিলের জনপ্রিয়তার কথা। কিন্তু আমার সত্যিই এতটা ধারণা ছিল না। ভেবেছিলাম, বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে ব্রাজিল দলকে নিয়ে যে পরিমাণ ভালবাসা উপচে পড়ে, এখানেও বোধহয় সেরকম। তবে এখন যা খবর-টবর পাচ্ছি, তাতে মনে হচ্ছে নিজের ‘হোম গ্রাউন্ডে’ যাচ্ছি।
এমন সময় আপনি কলকাতায় আসছেন যে, তার কিছুদিন পরেই কাতারে বিশ্বকাপ অভিযান শুরু করবে ব্রাজিল।
কাফু: এখনও পর্যন্ত যা দেখতে পাচ্ছি, ব্রাজিল নিয়ে আশাবাদী হওয়া যায়।
পরিষ্কার বলুন, তিতের দল এবার বিশ্বকাপ জিততে পারবে ?
কাফু: তিতের কোচিংয়ে ব্রাজিল দল দারুণ শেপে রয়েছে। আমার মতো সব ব্রাজিলিয়ানরাই মনে করছে, তিতের কোচিংয়ে এবার আমাদের বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হওয়ার ভীষণই সুযোগ রয়েছে। তবে এই সমর্থন বা প্রত্যাশাটা শুধুই আবেগ থেকে নয়। তিতের দলকে নিয়ে বাজি ধরা যায় কারণ, এবার আমাদের দলটা ভীষণই ব্যালান্সড। তিতের কোচিংয়ে টেকনিক্যালি দারুণ শক্তিশালী। প্রতিপক্ষ দেশগুলিকে মাথায় রেখেই বলছি, এবার আমাদের বিশ্বকাপ পাওযার সুবর্ণ সুযোগ রয়েছে।
পেলের পর ব্রাজিল জিকোকে পেয়েছে। তারপর রোমারিও, রোনাল্ডোরা ব্রাজিলিয়ান সমর্থকদের হৃদয়ে তারকার আসন পেয়েছে। নেমারকে এই তারকাদের পাশে কীভাবে দেখতে চান?
কাফু: আপনি যাঁদের নাম বললেন, তাঁদের পাশে নেমারও যে অসাধারণ ফুটবলার, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। এই ফুটবলাররা শুধুই ব্রাজিল নন। সারা পৃথিবীর ফুটবল মানচিত্রে তারকার আসন পান। তবে এঁদের মধ্যে পেলে, রোমারিও আর রোনাল্ডো সুযোগ পেয়েছে বিশ্বকাপ স্পর্শ করার। জিকোর আর সেই সুযোগ নেই। তবে এবার কাতারে বিশ্বকাপ স্পর্শ করার জন্য নেমারের সামনে কিন্তু দারুণ সুযোগ রয়েছে।
শেষ দুটো বিশ্বকাপ শুরুর আগেই নেমারকে ঘিরে প্রচুর প্রত্যাশা তৈরি হয়েছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ব্রাজিল-রাশিয়া দুটো বিশ্বকাপ থেকেই ব্যর্থতার তকমা কপালে জুটেছে ব্রাজিলিয়ান তারকার। আপনার কি মনে হয়, তারকা হওয়ার জন্য কাতার বিশ্বকাপটাই নেমারের সামনে শেষ সুযোগ?
কাফু: ব্রাজিল-রাশিয়া দুটো বিশ্বকাপের সময়েই নেমারের উপর অযথা প্রত্যাশার চাপটা বেশি তৈরি করা হয়েছিল। আগের দুটো বিশ্বকাপেই কিন্তু নেমার প্রত্যাশা পূরণের মতো তারকা ছিল না। এবার কিন্তু পরিস্থিতি পুরো আলাদা। নেমার এখন ‘স্টার’ ফুটবলার। ও জানে, কঠিন পরিস্থিতির মোকাবিলা কীভাবে করতে হয়। আর এবারের কাতার বিশ্বকাপে নিজেকে প্রমাণ করার সুযোগটা নেমার ছাড়বে বলে মনে হয় না। বিশ্বকাপের আসরে নেমার নিশ্চয়ই বোঝাবে, নেমার কে? মাঠের ভিতর ব্রাজিল দলের জন্য নেমার কী করতে পারে।
শেষ পর্যন্ত কোপা জিতলেও মেসির হাতেও কিন্তু এখনও বিশ্বকাপ ওঠেনি। আর এটাই কিন্তু মেসির শেষ সুযোগ?
কাফু: মেসি সম্পর্কে অসাধারণ বললেও কম বলা হবে। বিশ্বফুটবলের অসামান্য প্রতিভা। এটা ঠিক, মেসিও নিশ্চিতভাবেই অপেক্ষা করবে, কেরিয়ারের শেষবেলায় বিশ্বকাপ হাতে নিয়ে মুহূর্তটাকে স্মরণীয় করে রাখতে। বড় ফুটবলাররা যেরকমটা চায়।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.