ফাইল ছবি
স্টাফ রিপোর্টার: ছিল চেন্নাইয়িন এফসি ম্যাচের সাংবাদিক সম্মেলন, কিন্তু সেখানেই একের পর এক বিস্ফোরক মন্তব্য করেন কার্লেস কুয়াদ্রাত। নিজেদের খেলা বেশ কয়েকটি ম্যাচকে তুলে ধরে জানালেন, ইতিমধ্যেই পাঁচ পয়েন্ট প্রভাবিত হয়ে গিয়েছে রেফারিদের সিদ্ধান্তে। নাহলে এতক্ষণে তাঁর দল সুপার সিক্সে ঢুকে পড়ত।
শুধু তাই নয়, আইএসএলে বিদেশি রেফারি নিয়োগের পরামর্শ দিলেন ইস্টবেঙ্গলের স্প্যানিশ কোচ। একই সঙ্গে এই মরশুমে খারাপ রেফারিংয়ের জন্য রেফারি কমিটির শীর্ষ কর্তাকে বরখাস্তের দাবিও জানিয়েছেন তিনি। কার্লেস বলেন, “বেশ কিছু সিদ্ধান্ত আমাদের খেলার ফলাফলকে প্রভাবিত করেছে। আমাদের শেষ ৫টি ম্যাচের মধ্যে ৩ ম্যাচে এমন সিদ্ধান্ত হয়েছে। ওড়িশা এফসি-র বিরুদ্ধে আমরা দুটো পেনাল্টি পাইনি। মোহনবাগানের বিরুদ্ধে বক্সের মধ্যে নন্দর ফাউল ছিল। শেষ ম্যাচেও ওটা ফাউল ছিল না। তাই আমরা হেরেছি। মানে আমরা পাঁচ পয়েন্ট হারিয়েছি এভাবেই। নয়তো আজ প্লে-অফে থাকতাম।”
এখানেই থেমে থাকেননি, তিনি আরও বলেন, “ইতিমধ্যেই চারজন কোচকে বরখাস্ত করা হয়েছে আইএসএলে। যদি কোচেরা খারাপ পারফর্ম করে, তাহলে তাদের চাকরি যায়। বিদেশি ফুটবলাররা খারাপ পারফর্ম করলে তাদের হয় লোনে অন্য দলে নয়তো ছেড়ে দেওয়া হয়। তাহলে রেফারিদের বেলায় হবে না কেন? তাদেরও এই মরশুমটা খারাপ চলছে। তাদেরও বস রয়েছে, তাকে কেন বরখাস্ত করা হবে না?”
ইদানীং ভারতীয় বেশ কয়েকজন রেফারি নাকি তাঁর দুঃস্বপ্নে আসছেন। এই প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “এখনও আমি ঘুমের মধ্যে দুঃস্বপ্নে রাহুল কুমার গুপ্তাকে দেখি। সেই স্বপ্নে দেখতে পাই তিনি ক্রিস্টাল জনকে ব্যাখ্যা দিচ্ছেন কেন নন্দ কুমারের ক্ষেত্রে ফাউল না দিয়ে খেলা চালিয়ে গিয়েছেন আর ক্রিস্টাল জন রাহুল কুমারের কাছে ব্যাখ্যা করছেন চিমার বিরুদ্ধে রাকিপকে কেন ফাউল দিয়েছেন। এটা ভয়ংকর দুঃস্বপ্ন।”
তিনি মনে করেন এমন পরিস্থিতিতে যাঁরাই মুখ খুলছেন তাঁরাই শাস্তি পাচ্ছেন। তাঁর মতে আইএসএলের উচিত তাঁদের সঙ্গে বৈঠকে বসে তাঁদের কথা শোনা। প্রসঙ্গক্রমে মুম্বই সিটি এফসি বনাম মোহনবাগান ম্যাচকেও টেনে এনেছেন কুয়াদ্রাত। তিনি বলেন, “যেখানে সোজাসুজি লাল কার্ড দেখানো উচিত ছিল সেখানে তিনি কার্ড দেখাননি অথচ মুম্বই-মোহনবাগান ম্যাচে তিনি সাতজনকে কার্ড দেখিয়ে দিলেন?” এরসঙ্গে তিনটি পরামর্শ দিয়েছেন ইস্টবেঙ্গল কোচ।
প্রথমত পেশাদারদের কথা শুনতে হবে আয়োজকদের। বিশেষ করে কোচ, ফুটবলারদের কথা। মরশুমের শুরুতে বৈঠক হওয়ার কথা ছিল বলে জানান কুয়াদ্রাত। সেই বৈঠক এক্ষুনি হওয়া উচিত বলে মনে করেন তিনি। দ্বিতীয়ত আইএসএলে বিদেশি রেফারি আনতে হবে বলে মনে করেন তিনি। যাঁরা মুক্তমনে ম্যাচ পরিচালনা করতে পারবেন। তৃতীয়ত যত দ্রুত সম্ভব ভিএআর আনতে হবে আইএসএল-এ।
অন্যদিকে সোমবার ঘরের মাঠে চেন্নাইয়িন এফসির বিরুদ্ধে জিতে ফের সুপার সিক্সের অঙ্কে ঢুকে পড়তে চায় ইস্টবেঙ্গল। ইতিমধ্যেই লিগ টেবিলের যা অবস্থা তাতে অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন, আদৌ কি এই মরশুমে সুপার সিক্সে থাকবে লাল-হলুদ ব্রিগেড? তবে সেই সব শঙ্কাকে দূর করেই লাল-হলুদ কোচের আস্থা নিজের দলের ফুটবলারদের উপর। এই অবস্থাতেও জোর গলাতেই তিনি বলেন, “ইস্টবেঙ্গলের পরবর্তী পর্বে যাওয়ার আশা রয়েছে পুরোপুরি। আমাদের এখনও সুযোগ রয়েছে। এই মুহূর্তে এক একটা পয়েন্ট আমাদের কাছে মূল্যবান। আমরা সেই পয়েন্টগুলো অর্জন করার দিকে লড়াই করে চলেছি। এই ক্লাব মরে না যাওয়া পর্যন্ত লড়াই করা বন্ধ করে না। তাই আমি আশ্বাস দিচ্ছি চেন্নাইয়িনের বিরুদ্ধে জয়ের জন্য আমরা আনাদের সবটা উজাড় করে দেব।” দলের সঙ্গে সদ্য যোগ দেওয়া সল ক্রেসপো রবিবার বল নিয়ে অনুশীলন করেন। তবে সোমবার তাঁর খেলার সম্ভাবনা খুবই কম। তবে আলেকজান্ডার পন্টিচ আলাদা করে অনুশীলন করেছেন।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.