দুলাল দে: কেরালা ব্লাস্টার্স আপাতত তৃতীয় স্থানে। সেখানে আইএসএলের লিগ টেবিলে ইস্টবেঙ্গলের স্থান নবমে। সেই কেরলের বিরুদ্ধে ম্যাচের আগে বৃহস্পতিবার সাংবাদিক সম্মেলনে ব্যর্থতার একরাশ কারণ তুলে ধরলেন ইস্টবেঙ্গল কোচ স্টিফেন কনস্ট্যান্টাইন। অবশ্য স্টিফেনের যুক্তি মানলে, এই মরশুমের আইএসএলে ইস্টবেঙ্গল ব্যর্থও বলা যাবে না। স্টিফেন বললেন, ‘‘এই মরশুমে ইস্টবেঙ্গল আপাতত চারটে ম্যাচ জিতেছে। এবার বলুন তো, আগের দুটো মরশুমে এত ম্যাচ কখনও জেতা সম্ভব হয়েছে? এই মুহূর্তে আমরা নবম স্থানে। এটাও বলছি, এই পজিশনে আমরা থাকব না।’’
ভারতীয় দলের কোচ থাকাকালীন স্টিফেনের যে দাপট ছিল, আইএসএলের (ISL 2022-23) শেষ পর্বে এসে সেই দাপট কোথায়? স্টিফেন বলছেন, ‘‘তখন তো পরিস্থিতিটাই অন্যরকম ছিল। কোনও ফুটবলারের পারফরম্যান্স ভাল না হলে বাদ দিয়ে দিতাম। এখানে কী করে তা সম্ভব হবে? তার উপর বিকল্প নেওয়ার কোনও সুযোগ নেই। টাকা তো আর আমি দেব না। আমার অসহায়তার কথা কেউ বুঝবে না।’’ আর এই অসহায়তার কথা বলতে গিয়ে কেরল ম্যাচের আগে সুপার মার্কেটের তুলনা টানলেন। ‘‘ভাবুন, সুপার মার্কেট বন্ধ হবে রাত দশটায়। আপনি কিছু কেনাকাটা করতে গেলেন, দশটা বাজার পাঁচ মিনিট আগে। কোনও ভাল জিনিস পাবেন? সবাই তো আগে এসে সব নিয়ে নিয়েছে। আমিও শেষ মুহূর্তে যা পেয়েছি, তা নিয়েই চালাচ্ছি। তারপরেও সমালোচনা করা যায়, যদি আমাকে পুরো মরশুমটা সময় দেওয়া হত। তাহলে এই দল নিয়েই নিশ্চয়ই পরের মরশুমে ভাল ফল পেতাম। ভাল ফুটবলার পাওয়া যাবে না। সময় পাওয়া যাবে না। শুধু সমালোচনা পাওয়া যাবে। খেয়াল করে দেখুন, শেষ দশজন কোচ পরিবর্তন হয়েছে গত কয়েক বছরে। তাতেও সাফল্য কোথায়? ভাল ফুটবলার তুলে না দিলে, সাফল্য আনার জন্য কোচকে সময় তো দিতে হবে।’’
নিজের পক্ষে তখন একের পর এক যুক্তি দিয়ে যাচ্ছেন ইস্টবেঙ্গল (East Bengal) কোচ। ‘‘আইএসএলের প্রথম ছয়ে থাকতে হলে ভাল মানের শুধু চারজন বিদেশিতে হবে না। কম করে দশ-এগারোজন ভাল মানের ভারতীয় ফুটবলার দরকার। আমার দলে সেই মানের দশ-এগারো জন ভাল ফুটবলার রয়েছে? জ্যাককে অনেক আগে সই করাব ভাবলাম। ম্যানেজমেন্টের সমস্যায় সই করানোই গেল না। এই সমস্যাগুলি তো আমি নিয়ন্ত্রণ করতে পারি না। তারপরেও বলছি, গত তিন বছরের মধ্যে এবারের দলই সেরা পারফর্ম করছে।’’
শেষ মুহূর্তে সুপার মার্কেটে গিয়ে যে ফুটবলার তুলতে হবে, সেটা তো ইস্টবেঙ্গলের কোচ হওয়ার সময়েই জানতেন। তাহলে দায়িত্ব নিলেন কেন? স্টিফেন বললেন, ‘‘সমস্যা যে আছে জানতাম। তবে সমস্যাগুলি এত বড় আকারের বুঝিনি। ভেবেছিলাম, সমস্যা সমাধান করে দলকে ঠিক ছয়ে রাখতে পারব। বলতে পারেন, একটা ঝুঁকি নিয়েছিলাম। এটাও ঠিক, দলকে টানা জিততে না দেখলে, কোচের উপরই সমর্থকরা অখুশি হবেন। কিন্তু শুধু আমিই তো নই। কত বছর ধরে জাতীয় স্তরের ট্রফি আসছে না, সেটাও একবার বিচার করুন। দল গড়ার সময় আমাকে পূর্ণ সহযোগিতা করে, তারপর আমাকে ব্যর্থতার তকমা দিন। তারপরেও বলছি, আমাদের দল এখানেই পড়ে থাকবে না।’
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.