দুলাল দে: নতুন কোম্পানি করে ISL খেলার জন্য যে জট তৈরি হয়েছে, তা ছাড়াতে ১১ দফার শর্ত ইস্টবেঙ্গল ক্লাবকে দিল অল ইন্ডিয়া ফুটবল ফেডারেশন বা AIFF। এমনকী বেঁধে দেওয়া হয়েছে সময়সীমা। ইস্টবেঙ্গল ক্লাবকে জানানো হয়েছে, আইএসএল খেলতে হলে ১৩ অক্টোবরের মধ্যে শর্ত পূরণ করে ফেডারেশনের কাছে আবেদন করতে হবে। যা এখনও পর্যন্ত করেনি ইস্টবেঙ্গল ক্লাব।
‘ইস্টবেঙ্গল ক্লাব প্রাইভেট লিমিটেড’–এর অন্যতম ডিরেক্টর সৈকত গঙ্গোপাধ্যায়কে ফেডারেশন সচিব কুশল দাস যে চিঠি দিয়েছেন, তাতে ইস্টবেঙ্গলের (East Bengal) পাশাপাশি জানানো হয়েছে, শ্রী সিমেন্ট কর্তৃপক্ষকেও কী করতে হবে। আর সেখানেই ৬ নম্বর পয়েন্টে ফেডেরশন সচিব জানিয়েছেন, ‘শ্রী সিমেন্ট ইস্টবেঙ্গল ফাউন্ডেশন’ নামে নতুন যে কোম্পানির মাধ্যমে আইএসএল খেলার পরিকল্পনা হচ্ছে, সেই কোম্পানিকে আগের কোম্পানির যদি কোনও বকেয়া থাকে, তার দায়িত্ব নিতে হবে।
ফেডারেশন সচিবের এই চিঠি পেয়ে শ্রী সিমেন্ট কর্তৃপক্ষ পরবর্তী পদক্ষেপ ঠিক করতে আইনজীবিদের সঙ্গে আলোচনায় বসেছেন। তবে অন্যান্য শর্তর সঙ্গে ইস্টবেঙ্গলকে দেওয়া ফেডারেশনের অন্যতম শর্ত হল, IFA-তে দ্রুত নিজেদের নাম পরিবর্তন করে ‘শ্রী সিমেন্ট ইস্টবেঙ্গল ফাউন্ডেশন’ করতে হবে। বৃহস্পতিবার এই চিঠি পেয়ে রাতেই নাম পরিবর্তনের আবেদন করে আইএফএ সচিব জয়দীপ মুখোপাধ্যায়কে চিঠি দিয়েছেন ইস্টবেঙ্গল কর্তা সৈকত গঙ্গোপাধ্যায়।
শ্রী সিমেন্ট ইনভেস্টর হিসেবে নিশ্চিত হওয়ার পরেই এখন নিয়ম মেনে কাগজপত্র তৈরির চেষ্টা চলছে। আর তা করতে গিয়েই বিপদ। প্রতি পদে দেখা যাচ্ছে, বহু কাগজপত্র পরিবর্তন দরকার। যা এই মুহূর্তে তৈরি নেই। তবে এফএসডিএল এবং ফেডারেশন দু’পক্ষই সাহায্যর হাত বাড়িয়ে দিয়েছে। AFC-র সঙ্গেও কথা বলছেন কুশল দাস। ১৩ অক্টোবর ফেডারেশন এবং এএফসির কাছে আবেদন করার জন্য প্রাথমকি ভাবে যে কাগজপত্র দরকার, তার ১১ টি পয়েন্ট বিস্তৃত ভাবে সৈকত গঙ্গোপাধ্যায়কে জানিয়েছেন কুশল দাস। পয়েন্টগুলো এরকম।
১) লাইসেন্সিং নিয়মের ১৩.এ. ১১ অনুযায়ী ফেডারেশনকে জানাতে হবে, ইস্টবেঙ্গল ক্লাব প্রাইভেট লিমিটেড এবং তার নতুন এনটিটি কী করতে চাইছে?
২) ফেডারেশন জানিয়ে দেবে কীভাবে আগের লাইসেন্সিং পোর্টাল বন্ধ করে নতুন লাইসেন্সিং পোর্টাল খুলতে হবে।
৩) এসব হওয়ার পর, ইস্টবেঙ্গল ক্লাব প্রাইভেট লিমিটেড তাদের ফুটবল রাইটস, লোগো, সব কিছু ফের ইস্টবেঙ্গল ক্লাবের কাছে ফিরিয়ে দিতে হবে।
৪) এরপর ইস্টবেঙ্গল ক্লাবকে আইএফএর কাছে আবেদন করে জানাতে হবে নতুন কোম্পানির নাম এবং তার ঠিকানা।
(যা চিঠি পাওয়ার পরেই করে দেওয়া হয়েছে।)
৫) ইস্টবেঙ্গলের আবেদনের ভিত্তিতে নতুন কোম্পানির নাম এবং ঠিকানা আইএফএ নথিভুক্ত করবে।
৬) এবার নতুন কোম্পানি ‘শ্রী সিমেন্ট ইস্টবেঙ্গল ফাউন্ডেশন’কে মুচলেকা দিতে হবে যে, ইস্টবেঙ্গল ক্লাব, কোয়েস ইস্টবেঙ্গল, এমনকি ইস্টবেঙ্গল ক্লাব প্রাইভেট লিমিটেডের কোনও কর্মী, ফুটবলার, কর্তা, ফুটবল এজেন্ট এমনকী কর সংক্রান্ত কিছু বকেয়া বাকি থাকলে সব কিছু মেটাতে হবে।
৭) এএফসি, এআইএফএফ, এবং ইস্টবেঙ্গল ক্লাব এই বন্ডে সম্মত হওয়ার পর চুক্তিপত্র তৈরি করে ১০০০ টাকার স্টাম্প পেপারে নোটারি করতে হবে।
৮) এবার নতুন কোম্পানির লোগো, ডিরেক্টর এবং শেয়ার হোল্ডারদের নাম ফেডারেশনে জমা দিতে হবে।
৯) এএফসি নিয়ম হচ্ছে, নতুন কোম্পানি গঠনের ২ বছর পর যাবতীয় ‘স্পোর্টস অ্যাকটিভিটি’ নিয়ে লাইসেন্স দেয়। কিন্তু ফেডারেশন অনুরোধ করলে এই ছাড় পাওয়া যায়। যেমনটা পেয়েছে এটিকে মোহনবাগান ক্লাব। সেরকম শ্রী সিমেন্ট ইস্টবেঙ্গল ফাউন্ডেশনের ছাড়ের জন্যও এএফসির কাছে আবেদন করবে ফেডারেশন।
১০) এএফসি অনুমতি দেওয়ার পর শ্রী সিমেন্ট ফাউন্ডেশনের জন্য নতুন লাইসেন্স পোর্টাল দেবে ফেডারেশন।
১১) ইস্টবেঙ্গল প্রাইভটে লিমিটেডের যাবতীয় কাগজপত্র এরপর থেকে শ্রী সিমেন্ট ইস্টবেঙ্গল ফাউন্ডেশনের নামে করতে হবে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.