Advertisement
Advertisement

Breaking News

East Bengal

শেষ মুহূর্তে ছন্দপতন, খালিদের জামশেদপুরের কাছে হেরে প্লে অফ কঠিন হল ইস্টবেঙ্গলের

এগিয়ে গিয়েও হার মানতে হল লাল-হলুদকে।

East Bengal lost to Jamshedpur FC in ISL । Sangbad Pratidin

ইস্টবেঙ্গল-জামশেদপুর ম্যাচের একটি মুহূর্ত। ফাইল ছবি।

Published by: Krishanu Mazumder
  • Posted:February 22, 2024 9:37 pm
  • Updated:February 22, 2024 10:33 pm  

 জামশেদপুর-২ ইস্টবেঙ্গল -১
(রেই, মানজোরো) (নন্দকুমার)
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক:
এ কোন ইস্টবেঙ্গল! সুপার কাপের সময়ে যে লাল-হলুদ বাহিনী মেঘের উপর দিয়ে হাঁটছিল, এ কি সেই ইস্টবেঙ্গল? 
সুপার কাপে সুপার শো। আর আইএসএলে এসে লাল-হলুদের কঙ্কাল বেরিয়ে পড়ছে। কুয়াদ্রাতের দলকে দেখে কে বলবে, এই দলটাই সুপার কাপে ফুল ফুটিয়েছিল।  টানা দুটো ম্যাচও জিততে পারছে না আইএসএলের মতো লম্বা লিগের টুর্নামেন্টে। কথায় বলে, বন্যরা বনে সুন্দর, শিশুরা মাতৃক্রোড়ে। তবে কি কুয়াদ্রাতের ইস্টবেঙ্গল নক আউট টুর্নামেন্টেই ভালো? লম্বা লিগের প্রতিযোগিতায় লাস্ট বেঞ্চের ছাত্র? এমন প্রশ্ন কিন্তু উঠতে শুরু করে দিয়েছে। 
বৃহস্পতিবার আইএসএলে (ISL) জামশেদপুরের কাছে বশ্যতা স্বীকার করল ইস্টবেঙ্গল (East Bengal)। অ্যাওয়ে ম্যাচ থেকে তিন পয়েন্টের জায়গায় খালি হাতে ফিরতে হচ্ছে কুয়াদ্রাত ব্রিগেডকে।  
প্লে অফে জায়গা করতে হলে সবকটি ম্যাচই ইস্টবেঙ্গলের কাছে এখন ‘ডু অর ডাই’ ম্যাচ। সেই ম্যাচে একসময়ে এগিয়ে গিয়েও শেষমেশ ২-১ গোলে হারল লাল-হলুদ। সেই সঙ্গে প্লে অফের রাস্তা কঠিন থেকে কঠিনতর হচ্ছে ইস্টবেঙ্গলের জন্য। 
ছবিটা বদলাচ্ছে না লাল-হলুদের। প্রথমে গোল করে এগিয়ে গিয়েও গোল ধরে রাখতে না পারার রোগে আক্রান্ত দলটা। প্রতিটি ম্যাচেই একই রোগে ভুগতে হচ্ছে লেসলি ক্লডিয়াস সরণির ক্লাবকে। মোক্ষম সময়ে ভুলের পর ভুল হয়ে চলেছে। বিপজ্জনক জায়গায় ফাউল করে বসছেন ক্লেটনরা। এদিন খেলার শেষ বেলায় বিপজ্জনক জায়গায় জামশেদপুরকে ফ্রি কিক উপহার দিল ইস্টবেঙ্গল। তার মাশুলও গুনতে হল। মানজোরোর ফ্রি কিক ইস্টবেঙ্গলকে নক আউট করে দিল। হোম ম্যাচ জিতে প্রথম ছয়ে ঢুকে পড়ল খালিদ জামিলের জামশেদপুর। 
এদিন প্রাক্তনী কাঁটায় বিদ্ধ হতে হল কুয়াদ্রাতের দলকে। খালিদ জামিল অতীতে লাল-হলুদের কোচ ছিলেন। সেই অধ্যায় ছিল বিতর্কে ভরা। এদিন খালিদ জামিল থামিয়ে দিলেন কুয়াদ্রাতের ইস্টবেঙ্গলকে। শুধু খালিদ কেন, সিভেরিও টোরো, চিমা, রেহনেশ এঁরা সবাই তো কোনও না কোনও সময়ে লাল-হলুদেই ছিলেন। তাঁরাই এদিন দৌড় থামিয়ে দিল ইস্টবেঙ্গলের। অথচ এই জামশেদপুরকেই সুপার কাপের সেমিফাইনালে মাটি ধরিয়েছিল ইস্টবেঙ্গল। সেই হারের মধুর প্রতিশোধও এদিন নিয়ে নিল জামশেদপুর। আইএসএলের দ্বিতীয় পর্বে বেরঙিন দেখাচ্ছে ইস্টবেঙ্গলকে। কুয়াদ্রাতের সামনে সমস্যা বাড়ছে নিত্যিদিন। সিভেরিও, বোরহার মতো ফুটবলারদের ছেড়ে দিতে হয়েছে। চোটের জন্য মাঠের বাইরে সল ক্রেসপো। ডিফেন্সকে নেতৃত্ব দিতে পারা লুকাস পার্দোও চোটের লাল চোখ দেখে ছিটকে গিয়েছেন। শূন্যস্থান পূরণ করার জন্য বিদেশি ফুটবলার নেওয়া হয়েছে ঠিকই। কিন্তু এদেশের জলহাওয়ার সঙ্গে তাঁরা মানিয়েই নিতে পারেননি এখনও। মেসির প্রাক্তন সতীর্থ ভিক্টর ভাসকোয়েজ এখনও নিজেকে মেলে ধরতে পারেননি। নব্য ডিফেন্ডার প্যানটিচের এটাই প্রথম ম্যাচ ছিল। আরও সময় দরকার তাঁর।  কোস্তারিকান স্ট্রাইকার ফেলিসিওকে এখনও বিবর্ণই বলা যায়। নানা সমস্যায় দীর্ণ কুয়াদ্রাত।   

[আরও পড়ুন: কেন খেলছেন না কেএল রাহুল? চোট না অন্য কারণ? ধোঁয়াশা বজায় রাখলেন ব্যাটিং কোচ]

শুরু দেখে অনেক সময়েই বলা যায় দিনটা কেমন যাবে। এদিন শুরু থেকেই জামশেদপুর আধিপত্য দেখায়। তখনই মনে হচ্ছিল দিনটা বোধহয় তাদেরই। রেফারির শেষ বাঁশির পরে দেখা গেল সত্যিই দিনটা জামশেদপুরেরই। ম্যাচের বল গড়ানোর পর থেকেই আক্রমণের সুনামিতে ভেসে যাওয়ার জোগাড় ইস্টবেঙ্গলের। খেলার সাত মিনিটে পেনাল্টি পেলেও পেতে পারত জামশেদপুর। ইমরানের বিপজ্জনক দৌড়ে কেটে যান ইস্টবেঙ্গলের তিন ডিফেন্ডার। লাল-হলুদের পেনাল্টি বক্সের ভিতরে হিজাজির পায়ে লেগে পড়েও যান ইমরান।
পেনাল্টির আবেদন করে হায়দরাবাদ। কিন্তু রেফারি সেযাত্রায় পেনাল্টি দেননি। পেনাল্টি দিলেও বলার কিছু ছিল না। এর পরেও মুহুর্মুহু আক্রমণ তুলে আনে জামশেদপুর। ইস্টবেঙ্গলের প্রাক্তনী চিমার শট অল্পের জন্য লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। ইস্টবেঙ্গলের ডিফেন্সে কাঁপুনি ধরিয়ে দিয়েও গোল করতে পারেনি জামশেদপুর। কখনও বাইরে মারেন জামশেদপুরের ফুটবলাররা, কখনও গিলকে হার মানাতে পারেননি খালিদ জামিলের ছেলেরা। 
বিরতির ঠিক আগে জামশেদপুরের ডিফেন্ডার মুইরাংয়ের পাহাড়প্রমাণ ভুলে গোল করে যান নন্দকুমার। ফুটবলে এরকমই হয়। একটা ভুলের মাশুল দিতে হয়। এদিন সেটাই হল। মুইরাং বলের গতিপথটাই ধরতে পারেননি। বল নন্দকুমারের কাছে এলে জামশেদপুরের গোলকিপার রেহনেশের পায়ের ফাঁক দিয়ে গোল করে যান। যদিও ১৭ মিনিটে গোল করার মতো আরও একটি সুযোগ পেয়েছিলেন নন্দকুমার।
দ্বিতীয়ার্ধে জামশেদপুরের আক্রমণের তীব্রতা বজায় থাকলেও গোল করার মতো পরিস্থিতি তৈরি করেছিল ইস্টবেঙ্গলও।  সেই সময়ে পিছিয়ে থাকা জামশেদপুর সমতা ফেরানোর জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছিল। ৮০ মিনিটে সমতা ফেরায় জামশেদপুর। নিখিল বারলার সেন্টার থেকে হেডে সমতা ফেরান রেই। 
ইস্টবেঙ্গলও অবশ্য গোল করার মতো পরিস্থিতি তৈরি করেছিল। বিষ্ণুর হেড পোস্টে লেগে প্রতিহত হয়। নবাগত ডিফেন্ডার প্যান্টিচের হেড থেকে অল্পের জন্য রক্ষা পায় জামশেদপুর। দেশীয় ফুটবলাররা সুযোগ পাচ্ছেন। কিন্তু আসল সময়ে কাজের কাজটাই করতে পারছেন না। গোলগুলো হয়ে গেলে অবশ্য ম্যাচের ছবিটাই বদলে যেত। উলটে শেষ মুহূর্তে জামশেদপুরই এক ঝটকায় ম্যাচ নিয়ে যায় নিজেদের সাজঘরে। ম্যাচ জেতার জন্য মরণকামড় দিয়েছিল জামশেদপুর। এই মরিয়া ভাবটাই ইস্টবেঙ্গলের মধ্যে দেখা যাচ্ছে না। শেষ লগ্নে মানজোরোর ফ্রিকিক গিলকে পরাস্ত করে ইস্টবেঙ্গলের জালে জড়়িয়ে যায়। মাথা নীচু করে মাঠ ছাড়তে হয় ক্লেটনদের।
কুয়াদ্রাত কি দেওয়াললিখন পড়ে ফেলেছেন? প্লে অফের আশা জাগিয়েও কি ভেঙে যাবে সেই স্বপ্ন? পরিস্থিতি কিন্তু মোটেও ইস্টবেঙ্গলের অনুকূলে নেই। প্লে অফের রাস্তা কণ্টকাকীর্ণ হচ্ছে লাল-হলুদের জন্য। 

Advertisement

[আরও পড়ুন: প্রকাশ্যে আইপিএলের সূচি, উদ্বোধনী ম্যাচেই ধোনি বনাম বিরাটের ডুয়েল]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement