স্টাফ রিপোর্টার: কর্পোরেট জগতে ইস্টবেঙ্গল নিজেরাই নিজেদের কালিমা লেপন করল বলে মনে করছেন বাইচুং ভুটিয়া। ভারতীয় ফুটবলের অন্যতম আইকন মনে করেন, ইস্টবেঙ্গল (East Bengal) যেভাবে কোয়েসের সঙ্গে বিবাদে জড়িয়ে সরে দাঁড়িয়েছে, তা মোটেই সমর্থনযোগ্য নয়। এতে যেমন ইস্টবেঙ্গলের ক্ষতি হয়েছে, পাশাপাশি নিজেদের সুনামের প্রতি অবিচার করেছে কোয়েসও। শুধু বাইচুং নন, ফেডারেশন সচিব কুশল দাসও মনে করছেন, কোয়েসের (Quess) সঙ্গে সম্পর্ক ত্যাগ করার আগে অনেক বেশি সচেতন হওয়া উচিত ছিল লাল-হলুদ শিবিরের।
শনিবারই শতবর্ষ উৎসব পালিত হয়েছে ইস্টবেঙ্গল টেন্টে। প্রাক্তন ফুটবলার থেকে শুরু করে কর্মকর্তারা পর্যন্ত বলে গিয়েছেন, ইস্টবেঙ্গল নয়, আইএসএলকে এগিয়ে আসতে হবে ইস্টবেঙ্গলকে খেলানোর জন্য। কিন্তু জমানা যে পালটে গিয়েছে তা অনেকে বোধহয় উপলব্ধি করতে পারেননি। আসলে কোয়েসের সঙ্গে বিচ্ছেদ হওয়ার পর নতুন ইনভেস্টর এখনও পর্যন্ত খুঁজে পাননি লাল-হলুদ কর্তারা। বাইচুংও (Bhaichung Bhutia) মানছেন, ইস্টবেঙ্গলের অবশ্যই আইএসএলে খেলা উচিত। পাশাপাশি এও বলতে ছাড়েননি বাইচুং, “কোয়েসের সঙ্গে সম্পর্কের বিচ্ছেদ ঘটায় নিজেদের সুনামের অনেক বেশি ক্ষতি করে ফেলল ইস্টবেঙ্গল। কর্পোরেট জগতে ইস্টবেঙ্গলের সুনামের চেয়ে দুর্নাম হল বেশি। কোয়েসের সঙ্গে সম্পর্ক নষ্ট হওয়ায় এখন অনেক বেশি সতর্ক হয়ে এগোতে হবে ইস্টবেঙ্গলকে। দু’জনের পক্ষে ব্যাপারটা মোটেই ভাল হয়নি। না ইস্টবেঙ্গল, না কোয়েস, কারও পক্ষে বিষয়টা ঠিক হল না।”
এখন ক্রীড়া জগৎ যে সম্পূর্ণ পালটে গিয়েছে তা বলেই ফেললেন বাইচুং। তাঁর মতে, “বিশ্বে খেলাধুলোর মানচিত্র পুরো পালটে গিয়েছে। ইস্টবেঙ্গলের উচিত ছিল বর্তমান পরিস্থিতিকে মেনে নিয়ে এগোনো। অথচ সেটাই কিনা মানা হল না। আমাদের খেলার সময় আর বর্তমান খেলার জগৎ এক নয়। সম্পূর্ণ আলাদা।” ইস্টবেঙ্গলের যে আইএসএলে খেলা উচিত, তা মনে করছেন লাল-হলুদের অন্যতম ঘরের ছেলে। তাঁর মতে, “আইএসএল খেলা উচিত ইস্টবেঙ্গলের। দুই পক্ষের কাছে মঙ্গলজনক হবে। ভারতের অন্যতম বড় ক্লাব হল ইস্টবেঙ্গল। যে কোনও ইনভেস্টর চাইবে ইস্টবেঙ্গল ফুটবল দলের যতটা সম্ভব শেয়ার কিনতে। কিন্তু প্রশ্ন হল, ক্লাব কি সেই শেয়ার ছাড়তে রাজি হবে? এবছর বা পরের বছর যখনই আইএসএল (ISL) খেলুক ইস্টবেঙ্গল, তার জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে। যাতে সুযোগ পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে যেন নিজেদের তুলে ধরতে সক্ষম হয় তারা।”
বাইচুংয়ের সুরে সুর মিলিয়ে একই কথা বলতে শোনা যায় কুশল দাসকে। ফেডারেশন (AIFF) সচিব কুশলের ধারণা, ইনভেস্টর সম্পর্কে অনেক বেশি সচেতন হওয়া উচিত ছিল ইস্টবেঙ্গলের। শতবর্ষ অতিক্রান্ত ইস্টবেঙ্গলকে শুভেচ্ছা জানিয়ে কুশল বলেন, “একটা ক্লাব শতবর্ষ অতিক্রম করছে। নিঃসন্দেহে এটা একটা বড় ব্যাপার। সেই জন্য ক্লাবকে অবশ্যই শুভেচ্ছা জানাব। ভারতীয় ফুটবলে তাদের অবদান কোনও অংশে কম নেই। আশা করি তারা ভবিষ্যতে একইভাবে এগিয়ে যাবে। এখনও বলছি কোনও কিছু অসম্ভব নয়।”
কোয়েসের সঙ্গে অনেক বেশি পেশাদারিত্ব মনোভাব নিয়ে এগোনো উচিত ছিল লা-হলুদের বলে মনে করছেন কুশল। “এখন সময় বদলেছে। পেশাদারিত্ব মনোভাব নিয়ে ভবিষ্যতে এগোতে না পারলে আবার বিপদে পড়বে ইস্টবেঙ্গল। বিভিন্ন দপ্তর খোলা উচিত।” বলেন কুশল।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.