স্টাফ রিপোটার: অ্যারোজের ফুটবলারদের সই আটকে যাওয়ার পর ‘স্পোর্টিং রাইটস’ না থাকায় আপাত ঘোষিত ইস্টবেঙ্গল ফুটবলারদের ভবিষ্যৎ নিয়েও বড় সড় প্রশ্ন চিহ্ন দেখা দিল। বলবন্ত সিং (Balwant Singh) থেকে বিকাশ জাইরু, প্রত্যেকের এজেন্টরা তাঁদের ফুটবলারদের ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তিত হয়ে যোগাযোগ শুরু করলেন ইস্টবেঙ্গল কর্তাদের সঙ্গে। ফলে পরের মরশুমের জন্য আপাতত যে যে ফুটবলারের নাম ঘোষণা করেছিল ইস্টবেঙ্গল (East Bengal), ভুল চুক্তিপত্রে সই করানোর জন্য কারও চুক্তিই আর বৈধ বলে গণ্য হচ্ছে না ফেডারেশনে। এই অবস্থায় কোনও ফুটবলার অন্য কোনও ক্লাবে সই করে দিলেও আইনত ভাবে তা আটকানোর জায়গায় নেই ইস্টবেঙ্গল। সব মিলিয়ে ১ জুন থেকে যে মুক্তির আনন্দে ভাসার স্বপ্ন দেখেছিল লাল–হলুদ, তা বদলে উল্টে কোয়েসের ফাঁস গলায় আরও চেপে বসেছে ইস্টবেঙ্গলে।
নিয়ম করে প্রায়ই ফুটবলারদের সঙ্গে চুক্তির ঘোষণা হচ্ছিল ইস্টবেঙ্গলে। যেখানে কোয়েস এখনও তাদের ‘স্পোর্টিং রাইটস’ ক্লাবের কাছে ফিরিয়ে দেয়নি, সেখানে নতুন ফুটবলারদের সঙ্গে তাহলে চুক্তি হয়েছে কোন চুক্তিপত্রে? খোঁজ নিয়ে যা জানা গেল, বলবন্ত, রিনো অ্যান্টো (Rino Anto), শেহনাজ সিং থেকে শুরু করে বিকাশ জাইরু, চুলোভা প্রত্যেক ফুটবলারের সঙ্গে ইস্টবেঙ্গলের চুক্তি হয়েছে ক্লাবের ‘লেটারহেডে’। সেখানে ফুটবলারদের সই থাকলেও, ক্লাবের তরফে কোনও প্রতিনিধির সই নেই। চুক্তির সময় ফুটবলারদের জানানো হয়েছিল, ১ জুন থেকে কোয়েসের ‘স্পোর্টিং রাইটস’ চলে আসবে ক্লাবের কাছে। তাই ১ জুনের পর ফের নতুন ভাবে চুক্তিপত্র তৈরি করে ফুটবলারদের কাছে তাঁদের কপি পাঠিয়ে দেওয়া হবে। কিন্তু ১ জুন কেটে যাওয়ার পরেও যখন ক্লাবের তরফ থেকে কোনও চুক্তিপত্রের কপি পেলেন না ফুটবলাররা, তখন উদ্বিগ্ন হয়েই ক্লাবের সঙ্গে যোগাযোগ করেন চুক্তিবদ্ধ ফুটবলারদের এজেন্টরা। জানতে চান, তাঁদের ফুটবলারদের ভবিষ্যৎ কী? এর উপর সবাই জেনে গিয়েছেন, অ্যারোজের ফুটবলারদের সই করতে বারণ করেছে খোদ ফেডারেশন। তাহলে তাঁদের ফুটবলারদের ক্ষেত্রে কী হবে? তবে বিকাশ জাইরুর মতো অনেক ফুটবলারেরই চুক্তিপত্রে লেখা রয়েছে, ৩১ আগস্টের মধ্যে ইস্টবেঙ্গল যদি আইএসএলে না খেলে, তাহলে চুক্তি ভেঙে অন্য ক্লাবে চলে যেতে পারেন ফুটবলাররা।
ফেডারেশনে নাম নথিভুক্ত রয়েছে ‘কোয়েস ইস্টবেঙ্গল এফসি’ নামে। তাহলে ইস্টবেঙ্গল ক্লাবের লেটারহেডে চুক্তিবদ্ধ হওয়া ফুটবলারদের চুক্তির গুরুত্ব কতটা, তা নিয়ে এদিন দিনভর আলোচনা ভারতীয় ফুটবলে। গুরুত্ব বুঝেই এদিন নিজেদের ফুটবলারদের ভবিষ্যৎ নিয়ে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন ফুটবল এজেন্টরা। ক্লাব থেকে জানানো হয়েছে, খুব শীঘ্রই কোয়েসের সঙ্গে মিটে যাবে সমস্যা। চলে আসবে ‘স্পোর্টিং রাইটস’। ফুটবলারদের চিন্তিত হওয়ার কোনও কারণ নেই। ক্লাব কর্তাদের তরফে এই অভয়বানী শুনেই আপাতত কিছুদিন পরিস্থিতির দিকে নজর রাখবেন এজেন্টরা। তারপর তাঁরাও পরিকল্পনা শুরু করবেন ফুটবলারদের ভবিষ্যৎ নিয়ে। পাশাপাশি ফেডারেশনের থেকেও নেওয়া হবে প্রয়োজনীয় পরামর্শ। তবে এখনও যেহেতু কোয়েস ইস্টবেঙ্গল এফসির নামে ফেডারেশনে লাইসেন্স রয়েছে, তাই ফুটবলাররা বেরিয়ে গেলেও কিছু করতে পারবে না ইস্টবেঙ্গল। একই সঙ্গে ফুটবলারদের জানানো হয়েছে, যেদিন থেকে মরশুম শুরু হবে, সেদিন থেকেই আর্থিক চুক্তির প্রক্রিয়া শুরু হবে। তাই ফুটবলারদের সই করালেও, কাউকেই কোনও অর্থ ধরানো হয়নি। ক্লাবের পক্ষে একটাই সুবিধের দিক, যে যে ফুটবলারদের সই করানো হয়েছে, আইএসএলের ক্লাবগুলিতে সেভাবে সুযোগ না পেয়েই ইস্টবেঙ্গলে খেলার জন্য রাজি হয়েছেন। এই টাকায় আবার আই লিগের অন্য ক্লাবে যাওয়ার সুযোগ কম।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.