দুলাল দে: ইস্টবেঙ্গল (East Bengal) কোচ হোসে ম্যানুয়েল দিয়াজকে বরং অনেকটা বব হাউটনের সঙ্গে তুলনা করা যায়। মানে, যে যে ফুটবলাররা এর আগে হাউটনকে কাছ থেকে দেখেছেন, আর এখন ম্যানুয়েল দিয়াজকে দেখছেন, তাঁরাই মনে করছেন আর কী। আর দুই কোচের এই মিলটা টেকনিক্যাল কারণে নয়। মাঠের বাইরের কারণে। হাউটনের মতোই প্র্যাকটিস শেষে হোটেলে ফিরে একদমই ফুটবলারদের কাছাকাছি থাকেন না ডিয়াজের। এক্ষেত্রে তাঁর ব্যাখ্যা হল, মাঠের ভিতরে ফুটবলারদের থেকে একশো ভাগ নিংড়ে নেওয়ার পর, হোটেলে ফিরেও যদি সেই কোচের মুখোমুখি হতে হয়, তাহলে আর ফুটবলাররা রিল্যাক্স করবেন কখন? তাই কোচের সঙ্গে ফুটবলারদের যাবতীয় কথোপকথন যা হয়, সবই মাঠে, প্র্যাকটিসে।
হাবাস যেরকম ফুটবলারদের প্র্যাকটিসের জন্য বিকেলের সময়টাকেই বেছে নিয়েছেন, ম্যানুয়েল দিয়াজ সেখানে উলটো। অরিন্দম, পেরোসেভিচদের নিয়ে সকাল সকাল তাঁর প্র্যাকটিস শেষ। এটিকে মোহনবাগানের কোচ থেকে ফুটবলাররা যে, রবি ফাউলারের এসসি ইস্টবেঙ্গলের থেকে তাঁর দলকে বেশি শক্তিশালী মনে করছেন, সেই খবর কিন্তু ইতিমধ্যেই ডিয়াজের কানে এসে পৌঁছেছে। যেরকম ভাবে লাল-হলুদের বিদেশি ফুটবলারদের কানে পৌঁছে গিয়েছে কলকাতা ডার্বির মাহাত্ম্য। তাই শনিবারের ডার্বি নিয়ে লাল-হলুদ শিবিরও কিন্তু সতর্ক হয়ে উঠেছে।
এদিন ডার্বি নিয়ে ফুটবলারদের সঙ্গে হোসে ম্যানুয়েল দিয়াজের যা আলোচনা হয়েছে, তাতে মোটামুটি একটা ব্যাপার পরিষ্কার, জিততে না পারলেও, অন্তত হারা চলবে না। এক পয়েন্ট পেতেই হবে। সবুজ-মেরুন আর লাল-হলুদের মাঝে এই পয়েন্ট পাওয়ার সবচেয়ে বড় বাধা দু’জন। হুগো বুমোস আর রয় কৃষ্ণ। গোলে অরিন্দম ভট্টাচার্য আছেন বলে লাল-হলুদ শিবিরে লাস্ট ডিফেন্স নিয়ে চিন্তাটা একটু কমই। তবে এদিনও প্র্যাকটিসে প্রথম ম্যাচের গোলদাতা, দলের স্টপার ফ্র্যাঞ্জোর সঙ্গে অনেকক্ষণ আলোচনা করেন ম্যানুয়েল দিয়াজ। দলের বিদেশি ডিফেন্ডারের সঙ্গে আলাদা করে আলোচনা করার একটাই অর্থ, রয় কৃষ্ণকে থামানোর পরিকল্পনা করা। জামশেদপুর ম্যাচের মতো শনিবার এটিকে মোহনবাগানের বিরুদ্ধেও দু’জন বিদেশি স্টপার নিয়ে খেলতে চাইছেন এসসি ইস্টবেঙ্গলের কোচ।
যতটা ভাবা গিয়েছিল, প্রথম ম্যাচের পর চিমাকে নিয়ে কিন্তু লাল-হলুদ সমর্থকদের সেই প্রত্যাশা পূরণ হয়নি। ফলে চিমাও নিজেকে ডার্বিতে প্রমাণ করার জন্য যেন একটু বাড়তি সচেষ্ট। এক্ষেত্রে লাল-হলুদ শিবিরের ব্যাখ্যা হল, আইএসএল শুরুর আগেই যেভাবে চিমাকে নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছিল তাতে জামশেদপুর শুরু থেকেই কড়া মার্কিংয়ে রাখে এই নাইজেরিয়ান স্ট্রাইকারকে। মিডফিল্ড থেকে সেভাবে বল সাপ্লাই হয়নি চিমার জন্য। এদিন তাই মিডফিল্ডারদের নিয়ে নানারকম সিচুয়েশন প্র্যাকটিস করানো হয়। যেখানে চিমাও ডিফেন্ডারদের এড়ানোর জন্য অনেকটা নেমে আসেন। তবে দিয়াজের প্র্যাকটিসের পর যা জানা গিয়েছে, তাতে হুগো বুমোসের সঙ্গে রয় কৃষ্ণর বোঝাপড়াটা আটকাতে চাইছেন তিনি। চাইছেন, হুমোসের বল সাপ্লাই কেটে দিতে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.