স্টাফ রিপোর্টার : “টার্মশিট” আর “এগ্রিমেন্ট” ইস্যুতে মঙ্গলবার ফের শ্রী সিমেন্টকে চিঠি দল ইস্টবেঙ্গল ক্লাব। জানাল, “গত বছর ১৭ অক্টোবর ক্লাবের তরফে যে চিঠি পাঠানো হয়েছিল, সেখানে টার্মশিটের সঙ্গে এগ্রিমেন্টের ঠিক কোথায় কোথায় পার্থক্য রয়েছে, তা বিস্তারিত ভাবে জানানো হয়েছে। হয়তো কোনও ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে। দুই চুক্তিপত্রে মধ্যে যে পার্থক্য রয়েছে, সেগুলি নিয়ে সামাধানের জন্যই আলোচনায় বসতে চাইছি।” ইস্টবেঙ্গলের তরফে এই চিঠি পাওয়ার পর শ্রী সিমেন্টের পক্ষে তাদের ‘পরামর্শদাতা’ শ্রেণিক শেঠ বললেন, “ইস্টবেঙ্গল থেকে চিঠি এলেও ওরা কোনওদিনই টার্মশিট আর এগ্রিমেন্টের মূল কোথায় পার্থক্য তা নিশ্চিত করে বলেনি। ফলে আমরা বুঝতেই পারছি না, টার্মশিটের সঙ্গে মূল এগ্রিমেন্টের মূল কোথায় পার্থক্য রয়েছে।”
শ্রী সিমেন্টের পরামর্শদাতা এরকম দাবি করলেও, ১৭ অক্টোবর শ্রী সিমেন্টের মিঃ খান্ডেওয়ালকে ইস্টবেঙ্গল ক্লাবের পক্ষে আইনজীবী সুরেন্দ্র দুবে যে মেল করেছেন, সেই পাঁচ পাতার মেলের প্রতিলিপি সংবাদ প্রতিদিনের হাতে এসেছে। যেখানে দেখা যাচ্ছে, পাঁচ পাতার মেলে ইস্টবেঙ্গলের আইনজীবি একাধিক ‘ক্লজ’ উল্লেখ করে ব্যাখ্যা দিয়েছেন , ক্লাব ঠিক কি চাইছে। চুক্তির এই ক্লজগুলির ব্যাখ্য প্রসঙ্গেই এদিন ইস্টবেঙ্গল ক্লাব কর্তারা বলছেন, “আমরা সব কিছু সঠিক সময়ে, সঠিকভাবেই শ্রী সিমেন্টকে জানিয়েছি। এই বিষযগুলি নিয়েই আলোচনা চাইছি আমরা।” তবে ইস্টবেঙ্গলের এই দাবি নস্যাৎ করে শ্রী সিমেন্টের পরামর্শদাতা শ্রেণিক শেঠ বললেন, “ইস্টবেঙ্গল গত বছরের ১৭ অক্টোবরের যে চিঠির কথা বলছে, সেখানে আমাদের পাঠানো মূল চুক্তিপত্র নেই। ফলে ওরা ওদের মতো করে টার্মশিট আর মূল চুক্তিপত্রর মধ্যে কিছু পয়েন্টে আপত্তি জানিয়ে তা বদলের দাবি করছে। কিছু পাওয়ার জন্য দাবি যে কেউ করতে পারে। এবার সেই দাবি আমরা মানব কি না, সেটা আমাদের ব্যাপার। বরং আমরা দু’বার ওদের টার্মশিট আর এগ্রিমেন্ট পাঠিয়ে জানতে চেয়েছি, দুটো চুক্তিপত্রের মধ্যে ঠিক কোথায় কোথায় পার্থক্য রয়েছে।”
এদিকে দেখা যাচ্ছে, ১৭ অক্টোবর যে চিঠি ইস্টবেঙ্গল শ্রী সিমেন্টকে পাঠিয়েছিল, তাতে, লাল-হলুদের আইনজীবী, ক্লজ-২, ৩, ৫, ১১, ১২, ১৪-সহ বহু ক্লজ উল্লেখ করে টার্মশিট ও এগ্রিমেন্টের মধ্যে পার্থক্য বোঝাতে নিজেদের স্বপক্ষে যুক্তি দিয়েছেন। যদিও শ্রী সিমেন্টের পরামর্শদাতা বলছেন, “আমাদের পাঠানো মূল এগ্রিমেন্টটা দেখলেই বোঝা যাবে, ক্লাব থেকে যে চিঠি ১৭ অক্টোবর পাঠানো হয়েছিল, তার সঙ্গে এই চিঠির বক্তব্য মিলছে না।” এদিকে, এগ্রিমেন্টে সই না করলে শ্রী সিমেন্ট আর দল তৈরি করতে কোনওরকম অর্থ বিনিয়োগ করবে না।
এই প্রসঙ্গে ক্লাবের পক্ষে দেবব্রত সরকার বললেন, “গত মরশুমে ওরা যখন দল তৈরি করেছিল, তখনও আমাদের কিছু জানানো হয়নি। এখনও ওদের পক্ষ থেকে সরকারি ভাবে দল গঠন নিয়ে যখন কিছু বলা হয়নি, তার মানে ধরেই নিতে হবে, গতবারের মতো এবারেও ঠিকই দল গঠন করবে। আর স্পোর্টিং রাইটস ওদের কাছে রেখে দিয়ে শ্রী সিমেন্ট দল গঠন করবে না, বিশ্বাস করি না।” এই প্রসঙ্গে শ্রেণিক শেঠ বললেন, “শ্রী সিমেন্টের পক্ষ থেকে একটা কথা পরিষ্কার জানিয়ে দিচ্ছি, ক্লাব থেকে যতক্ষন না মূল এগ্রিমেন্টে সই করা হবে, ততক্ষন পর্যন্ত নতুন করে শ্রী সিমেন্ট এক টাকাও আর বিনিয়োগ করবে না।” আপাতত দু’পক্ষেরই যা অবস্থান, ভবিষ্যতের দিকে তাকিয়ে থাকা ছাড়া অন্য কোনও উপায় নেই।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.