সুলয়া সিংহ: তাঁর তত্ত্বাবধানে চারটে ডার্বি খেলেছে ইস্টবেঙ্গল। দু’টোয় জিতেছে। একটা ড্র। তবে, এবার ডার্বির রং বদলে দিয়েছেন বাবা দিওয়ারা (Baba Diawara) এবং বেইতিয়া (Joseba Beitia)। হারের পর অবশ্য ভাঙলেও মচকাচ্ছেন না লাল-হলুদ কোচ আলেজান্দ্রো। বরং হারের পর বেশ গর্বের সঙ্গেই নিজের কৃতিত্ব তুলে ধরার চেষ্টা করলেন স্প্যানিশ কোচ।
এদিনের ম্যাচে শুরু থেকে মোহনবাগানের পাল্লা ভারি থাকলেও শেষ ২০ মিনিটে কোলাডোরা যেভাবে খেলেছেন, তাতে খুশি আলেজান্দ্রো (Alejandro Menéndez)। বলেন, “আমরা ভাল ফুটবল খেলেছি। দ্বিতীয়ার্ধে বুঝিয়ে দিয়েছি কীভাবে বিপক্ষকে বক্সে আটকে রেখে খেলা ঘুরিয়ে দিতে হয়। ওদের রীতিমতো চাপে ফেলে দিয়েছিলাম আমরা। আর গোল তো হতেই পারত। একাধিক সুযোগ তৈরি হয়েছিল। বারে বল লেগে ফিরে আসে। তাছাড়া একটা পেনাল্টিও হতে পারত।” তাই মোহনবাগান জিতলেও তাঁর ছেলেরা যে কোনও অংশেই পিছিয়ে ছিলেন না, সেকথা বুঝিয়ে দিতে চাইলেন আলেজান্দ্রো। তবে একটা কথা স্বীকার করে নেন তিনি। শুরুতে ফুটবলাররা খানিকটা চাপে আর টেনশনে ছিলেন। যে কারণে শুরুটায় ধাক্কা খায় দল। আসলে পরপর দুটো ম্যাচ হেরে ভরা যুবভারতীতে ডার্বির মতো হাইভোল্টেজ ম্যাচে নামতে অতি বড় ফুটবলারেরও পা কাঁপার কথা। কোচের মতে, এদিন শুরুতে তেমনটাই হয়েছিল। কিন্তু জোড়া গোলে পিছিয়ে পড়ার পর খোঁচা খাওয়া বাঘের মতোই গর্জে ওঠেন মার্কোসরা। তাই তিনটে পয়েন্ট ঘরে আসেনি বলে হা-হুতাশ করতে নারাজ ইস্টবেঙ্গল কোচ। কিন্তু, জোড়া গোল হজম মানে তো দুর্বল ডিফেন্স। সাংবাদিক সম্মেলনে এমন কথা শুনেই মেজাজ হারালেন কোচ। ডিফেন্সের গলদ মানতে নারাজ তিনি। উলটে বলে দিলেন, “জিতলে তো এসব কথা বলেন না। কিন্তু আজ না জিতলেও আমরা ভাল খেলেছি।”
টানা ম্যাচ হারায় তো চ্যাম্পিয়নশিপের দৌড় থেকে ক্রমেই দূরে চলে যাচ্ছে দল! তার কী হবে? আলেজান্দ্রো এতেও চিন্তিত নন। তাঁর উত্তর, “গত মরশুমেও আমরা শুরুতে পিছিয়ে পড়েছিলাম। কিন্তু তারপর চ্যাম্পিয়ন হওয়ার খুব কাছাকাছি পৌঁছে গিয়েছিলাম। তাই এখনই এটা নিয়ে চিন্তা করছি না।” এখানেই শেষ করলেন না। ইস্টবেঙ্গলে যে তাঁর কোচিং গ্রাফ প্রশংসা করার মতো, সে কথাও মনে করিয়ে দিলেন। বলে গেলেন, “চারটে ডার্বির মধ্যে দুটোয় জিতেছি। ৪ জানুয়ারি পর্যন্ত ভাল ফর্মেই ছিলাম। অতীতে দলকে লিগ তালিকার শীর্ষেও পৌঁছে দিয়েছি। আমি দলকে যেখানে পৌঁছে দিয়েছি, গত ১৪ বছরে কেউ পারেনি।”
ডার্বি হারের পর কোচের এমন উক্তি বেশ অবাক করার মতোই। জেমস মর্গ্যানের গ্রাফ বোধহয় খেয়াল নেই তাঁর। তাঁর পরিসংখ্যান শুনে একটা প্রশ্ন মনে জাগতেই পারে, সমর্থকদের রোষ তাঁর উপর পড়ার আগে কি জেনেশুনেই নিজের গুণগান নিজে গেয়ে রাখলেন আলেজান্দ্রো?
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.