জুয়ান ফেরান্দো কেন অজুহাত দিচ্ছেন? মেগা ডার্বির আগে প্রশ্ন তুলে দিলেন সঞ্জয় সেন
সব্যসাচী বাগচী: দুই দলই চায় ট্রফি জিততে। আর সেটাই স্বাভাবিক। তবে ডুরান্ড কাপের ফাইনালে (Durand Cup Final 2023) ইস্টবেঙ্গলের (East Bengal) বিরুদ্ধে নামার আগে ফুটবলারদের চোট ও ক্লান্তি নিয়ে বেশ চিন্তিত জুয়ান ফেরান্দো (Juan Ferando)। মরশুমের দ্বিতীয় ডার্বিতে নামার আগে সবুজ-মেরুন শিবিরের দাবি জেসন কামিন্স (Jasson Cummins)-হুগো বুমোসদের (Hugo Boumas) ১০ দিনে ৪ ম্যাচ খেলতে হয়েছে। যদিও এটা অজুহাত বলেই মনে করেন সঞ্জয় সেন (Sanjoy Sen)। রবিবাসরীয় মহারণের আগে সেটাই সংবাদ প্রতিদিন.ইন-কে সেটাই জানালেন আই লিগ জয়ী কোচ।
সঞ্জয় বলেন, “মরশুমের শুরুতেই জুয়ান ফেরান্দো কেন অজুহাত দিচ্ছে? মাথায় আসছে না। যে সব ফুটবলার জাতীয় দলে আছে তারা কি মোহনবাগানের প্রথম একাদশের ফুটবলার! দলটা সবে কয়েকটি ম্যাচ খেলেছে। এরমধ্যে যদি কোচ চোট ও ক্লান্তির কথা বলে তাহলে তো কিছু বলার নেই। কামিন্সের জায়গায় সাদিকু আছে। সাদিকুর জায়গায় পেত্রাতোস আছে। এত দ্রুত যদি ফুটবলাররা যদি চোট পায় তাহলে তো দায়ী টিম ও ক্লাব ম্যানেজমেন্ট। ৩৩টি ফুটবলার দলে রয়েছে। বছরের শেষ দিকে এগুলো শুনলে মেনে নেওয়া যায়। কিন্তু মরশুমের শুরুতে এমন অজুহাত শুনতে ভাল লাগে না। আশিক খেলতে না পারলে লিস্টন আছে। লিস্টন না খেলতে পারলে মনবীর আছে। মনবীর কোনও কারণে খেলতে না পারলে আব্দুল সাহাল আছে। তাহলে অসুবিধা কোথায়? ভারতের এত সেরা ফুটবলারের সঙ্গে বিশ্বকাপার আছে। এরপরেও কোচ অজুহাত দিচ্ছে!”
মরশুমের প্রথম ডার্বিতে সবাই মোহনবাগানকে ফেভারিট হিসেবে ধরে নিলেও, নন্দকুমারের গোলে বাজিমাত করেছিল লাল-হলুদ। আর তাই সঞ্জয় এবারের ডার্বিতে কোনও দলকে ফেভারিট হিসেবে ধরতে রাজি নন। তিনি ফের বলেন, “এভাবে ফেভারিট বেছে নেওয়া একেবারেই বোকামি। গত ডার্বির আগেই সবাই মোহনবাগানকে জয়ী হিসেবে ধরে নিয়েছিল। ফলাফল সবাই জানেন। তাই আমি অন্তত ডুরান্ডের ফাইনালে কাউকে ফেভারিট আখ্যা দিতে রাজি নই। তবে এই মুহূর্তে মোহনবাগানের সবচেয়ে ইতিবাচক দিক হল দুটি শক্তিশালী দলকে হারিয়ে এসেছে। আইএসএল-এর নিরিখে মোহনবাগানের পরেই কিন্তু এফসি গোয়া ও মুম্বই সিটি এফসি। দুই দলের বিরুদ্ধে মোহনবাগান যেমন লড়াই করেছে, তেমনই ভাগ্য সহায় ছিল। মুম্বই ও গোয়া, দুটি দলের বিরুদ্ধেই জ্যাসন কামিন্স পেনাল্টি থেকে গোল করেছিল। তেমনই গোয়ার বিরুদ্ধে মোহনবাগান যে পেনাল্টি পেয়েছিল সেটা নিয়ে অনেক আলোচনা-সমালোচনা হয়েছে। এইসব চ্যান্স ফ্যাক্টর তো কাজ করেছে। সেটা তো অস্বীকার করার উপায় নেই।”
কেউ বাজি ধরেনি। তবুও সবাইকে চমকে দিয়ে মরসুমের প্রথম ডার্বি জিতেছিল ইস্টবেঙ্গল। আট ম্যাচ পর ডার্বি জয়ের স্বাদ পেয়েছিল লাল-হলুদ। টানা নবম ডার্বি জয়ের স্বপ্ন ভেঙেছিল সবুজ-মেরুনের। সেই হারের বদলা কি ফাইনালে সুদে-আসলে তুলবে মোহনবাগান? এমন প্রেক্ষাপটে মহারণের আগে বড় মন্তব্য করে দিলেন সঞ্জয়। তাঁর প্রতিক্রিয়া, “ইস্টবেঙ্গলকে কেউ পাত্তা দিচ্ছে না। সবার দাবি হল এই দলটা ধারে ও ভারে মোহনবাগান থেকে অনেক পিছিয়ে। তবে এটাও ঠিক যে ইস্টবেঙ্গল দীর্ঘদিন কোনও ট্রফি পায়নি। তাই কুয়াদ্রাতের দল যখন ফাইনালে উঠেছে। তখন ট্রফি জয়ের চেষ্টা তো করবেই। ফলে আমার মনে হয় দুটি দলের কাছেই ম্যাচ কঠিন হবে।”
তাঁর আমলে ২০১৫-১৬ মরশুমে আই লিগ জিতেছিল মোহনবাগান। ডার্বি যুদ্ধের আবহে নিজের সেরা দুটি বড় ম্যাচের কথাও জানিয়ে দিলেন তিনি। বলছিলেন, “আমার কাছে দুটি ডার্বি জয় স্পেশ্যাল। ২০১৫-১৬ মরশুমে আই লিগ জেতার নেপথ্যে ডার্বি জয় বড় ভূমিকা নিয়েছিল। সেবার বলবন্ত সিংয়ের গোলে জিতেছিলাম। এরপর ২০১৭ সালে সনি নর্দি ও আজহার উদ্দিন মল্লিকের গোলে আমরা জিতেছিলাম। সেই জয়টাও আমার কাছে স্মরণীয়। কারণ লাল-হলুদের গড় শিলিগুড়িতে আমরা জিতেছিলাম।”
এবার কি সবুজ-মেরুন প্রথম ডার্বি হারের বদলা নিয়ে ডুরান্ড কাপ তুলতে পারবে? আর মাত্র কয়েক ঘণ্টার অপেক্ষা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.