কৃশানু মজুমদার: ভারতে অনেকেই আমাকে চেনেন না। জানেন না আমার সাফল্য। হয়তো মনেও নেই। বছর তিনেক আগে এএফসি কাপের গ্রুপ স্টেজে চেন্নাইয়িন এবং মিনার্ভা পাঞ্জাবকে ছিটকে দিয়েছিলাম আমি। বাংলাদেশের কোনও ক্লাবের প্রথম কোচ হিসেবে এই নজির গড়েছিলাম। ২০১৯ সালের এএফসি কাপের প্রসঙ্গ উত্থাপ্পন করে হুঙ্কার দিলেন ঢাকা আবাহনীর কোচ মারিও লেমোস (Mario Lemos)।
২০১৯ সালের এএফসি কাপের (AFC Cup) ইন্টার জোন প্লে অফ সেমিফাইনালে পৌঁছেছিল ঢাকা আবাহনী। সেবার গ্রুপ ই-তে বেশ নাটকীয় পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল। গ্রুপের শেষ ম্যাচে মিনার্ভা পাঞ্জাবকে হারায় আবাহনী। আবাহনী জিতে যাওয়ায় নেপালের ক্লাব মানাং মার্শিআঙড়ি ক্লাবকে হারালেও পরের পর্বে আর পৌঁছাতে পারেনি চেন্নাইয়িন।ফলে মারিও লেমোসের দল ইন্টার জোন প্লে অফ সেমিফাইনালের পাসপোর্ট জোগাড় করে।
গতকাল শ্রীলঙ্কার ক্লাব ব্লু স্টারকে পাঁচ-পাঁচটি গোলে বিধ্বস্ত করার পরে এটিকে মোহনবাগানের (ATK Mohun Bagan) পরবর্তী প্রতিপক্ষ ওপার বাংলার ক্লাব ঢাকা আবাহনী (Dhaka Abahani)। যুবভারতী স্টেডিয়ামে সবুজ-মেরুন জার্সিধারীদের খেলা দেখে বুধবার সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটালকে মারিও বলছিলেন, ”এটিকে মোহনবাগানের খেলা দেখেছি। শ্রীলঙ্কার ক্লাবের বিরুদ্ধে আধিপত্য নিয়ে ম্যাচ জিতেছে এটিকে মোহনবাগান। এটিকে মোহনবাগান দলে ভারসাম্য রয়েছে। বেশ ভাল প্লেয়ার রয়েছে দলে। পজেশনাল ফুটবল খেলে। ওদের হারানো খুব কঠিন।” এটিকে মোহনবাগান সম্পর্কে সমীহ ঝরছিল তাঁর কণ্ঠে।
চলতি মাসের ১৯ তারিখ যুবভারতীতেই দুই বাংলার দুই ক্লাব মুখোমুখি হবে। ঘরের মাঠের সুবিধা পাবেন তিরি-জনি কাউকোরা। চেনা দর্শকদের সামনে খেললে, সমর্থন পেলে বাড়তি অ্যাড্রিনালিন ঝরে ফুটবলারদের মধ্যে। নিজেদের সেরাটা তুলে ধরার চেষ্টা করেন খেলোয়াড়রা। ১৯ তারিখ ঢাকা আবাহনীর সামনে দুই প্রতিপক্ষ। একদিকে এটিকে মোহনবাগান। অন্যদিকে যুবভারতীর দর্শক। মারিও বলছেন, ”আমাদের খেলোয়াড়রা বেশ অভিজ্ঞ। গ্যালারি ভর্তি দর্শকের সামনে বড় ম্যাচ খেলার অভিজ্ঞতা রয়েছে আমাদের প্লেয়ারদেরও। আমার মনে হয়, এই চাপ সামলে উঠতে পারবে আমাদের ছেলেরা।”
মারিওর দলে রয়েছেন ইস্টবঙ্গলে খেলে যাওয়া জনি অ্যাকোস্তার বন্ধু ড্যানিয়েল কলিনডার্স। রাশিয়া বিশ্বকাপে কোস্তা রিকা জাতীয় দলের সদস্য ছিলেন অ্যাকোস্তা ও কলিনডার্স। দুই কোস্তা রিকান ফুটবলারই প্রায় একই সময়ে খেলতে এসেছিলেন কলকাতা ও ঢাকায়। অ্যাকোস্তা ফিরে গিয়েছেন দেশে। কলিনডার্স খেলে চলেছেন বাংলাদেশের ফুটবলে। আইএসএলে খেলা রাফায়েল আগুস্তো এখন খেলছেন আবাহনীতে।
আবাহনী কোচের অধীনে বিভিন্ন সময়ে খেলেছেন আইএসএল কাঁপানো ফুটবলাররা। মারিও বলছিলেন, ”কেরল ব্লাস্টার্সে খেলা বেলফোর্ট, জামশেদপুরে খেলা ওয়েলিংটন, নর্থ-ইস্টের ভেলিজ, চেন্নাইয়িনে খেলা মেইলসন ও রাফায়েল আগুস্তো আমার অধীনে বিভিন্ন সময়ে খেলেছে। আইএসএল আমি ফলো করি।”
মারিওর বয়স ৩৫। এই বয়সে অনেকেই খেলেন। আবাহনীর বিশ্বকাপার কলিনডার্সই তাঁর কোচের থেকে বয়সে বড়। মারিও বলছিলেন, ”অল্প বয়সি কোচ হওয়া আমার কাছে অ্যাডভান্টেজই বলতে পারেন। বয়স কম হওয়ায় আমি প্রাণশক্তিতে ভরপুর। পরিশ্রম করতে পারি। অভিজ্ঞ কোচদের বিরুদ্ধে লড়ার চ্যালেঞ্জ নিতে পারি।” এটিকে মোহনবাগান কোচ জুয়ান ফেরান্দো আবাহনী কোচের থেকে বছর ছয়েকের বড়। ১৯ তারিখ যুবভারতীর সবুজ গালচেতে দুই তরুণ কোচের মগজাস্ত্রের লড়াই দেখা যাবে। জোর টক্কর হবে পর্তুগিজ ও স্প্যানিশ দর্শনের।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.