স্টাফ রিপোর্টার: দিনভর চিঠি-চাপাটির পর পরিস্থিতি যে দিকে গিয়েছে তাতে বৃহস্পতিবার নির্দিষ্ট সময়ে নৈহাটি স্টেডিয়ামে রেফারি উপস্থিত থাকবেন। বড় ম্যাচ আয়োজনের জল থেকে সবকিছুই ব্যবস্থা থাকবে। দল নিয়ে মাঠে নেমে পড়বে ইস্টবেঙ্গলও (East Bengal)। কিন্তু এখনও পর্যন্ত যা খবর, তাতে মোহনবাগান হয়ত ফুটবলারদের নিয়ে শেষ মুহূর্তে মাঠে পৌঁছাবে না। সেক্ষেত্রে ম্যাচ না খেলেই ওয়াকওভার পেয়ে বৃহস্পতিবার তিন পয়েন্ট নিয়ে বাড়ি ফিরবে ইস্টবেঙ্গল।
বৃহস্পতিবারের ডার্বিতে মোহনবাগান (Mohun Bagan) খেলবে কি খেলবে না তা নিয়ে গত কয়েক দিন ধরে আইএফএ-মোহনবাগানের মধ্যে চিঠি-চাপাটি চলছে। বারবার করে ম্যাচের দিন পরিবর্তনের অনুরোধ করলেও মোহনবাগান কিন্তু এখনও জানায়নি যে বৃহস্পতিবার ডার্বি খেলবে না। এর আগে অন্যান্য ম্যাচের ক্ষেত্রে যা হয়েছে, এক্ষেত্রে সেভাবে ডার্বি শুরুর আগেই ইস্টবেঙ্গলকে ওয়াকওভার দিতে পারছে না আইএফএ (IFA)। এদিন প্রথম চিঠিতে ইস্টবেঙ্গল-মোহনবাগান-আইএফএর মধ্যে ত্রিপাক্ষিক বৈঠক চেয়ে বাংলা ফুটবলের নিয়ামক সংস্থাকে চিঠি দেয় মোহনবাগান সুপার জায়ান্ট। আইএফএর তরফে পালটা চিঠি দিয়ে পরিষ্কার জানিয়ে দেওয়া হয়, নতুন করে আর কোনও ত্রিপাক্ষিক বৈঠক হবে না। বৃহস্পতিবার নির্দিষ্ট সময়ে ডার্বি ম্যাচ নৈহাটি স্টেডিয়ামে হবে। যার অর্থ, বৃহস্পতিবারের বড় ম্যাচ ইস্যুতে নিজের অবস্থান থেকে সরবেন না আইএফএ সচিব অনির্বাণ দত্ত (Anirban Dutta)।
আইএফএর এই চিঠি পাওয়ার পর মোহনবাগান এসজির কর্তারা নিজেদের মধ্যে আলোচনা করেন পরবর্তী পদক্ষেপ নিয়ে। তারপর সন্ধ্যায় বিশাল আরেকটি চিঠি পাঠায় মোহনবাগান। যে চিঠিতে মোহনবাগান জানিয়েছে, বড় ম্যাচ আয়োজন করার ক্ষেত্রে আইএফএর পেশাদারি মনোভাব নেই। তারা জানেই না কীভাবে পেশাদারি মনোভাব নিয়ে ডার্বি আয়োজন করতে হয়। এরপর বিভিন্ন পয়েন্ট উল্লেখ করে মোহনবাগান লিখেছে, বৃহস্পতিবারের ডার্বিতে পুলিশ পারমিশন, দমকলের পারমিশন, সঙ্গে নিজেদের সমর্থকদের টিকিট বণ্টনের পূর্ণাঙ্গ তালিকা, এমনকি ভিভিআইপি হিসাবে কাদের আমন্ত্রণ জানানো হচ্ছে সেই তালিকাও চায় মোহনবাগান। কিন্তু খেলবে না এই রকম কোনও উল্লেখ নেই সেই চিঠিতে। এর সঙ্গেই মোহনবাগান আরও লিখেছে, কিছু সমর্থক নৈহাটি স্টেডিয়ামে গিয়েছিলেন ডার্বির টিকিটের খোঁজে। কিন্তু স্টেডিয়াম কর্তৃপক্ষ তাদের জানিয়ে দেন, বৃহস্পতিবারের ডার্বি নিয়ে তাদের কাছে কোনও তথ্য নেই। এই প্রসঙ্গে জানতে চাইলে আইএফএ সচিব অনির্বাণ দত্ত বলেন, “আমরা ডার্বির ম্যাচে বিনামূল্যে প্রবেশের ব্যবস্থা রেখেছি। সেক্ষেত্রে যারা প্রথমে আসবে তারাই ঢুকবে, যতক্ষণ বসার জায়গা থাকবে ততক্ষণ। স্বাভাবিক কারণেই নৈহাটি স্টেডিয়ামে টিকিট বিক্রি হয়নি। তবে স্টেডিয়াম কর্তৃপক্ষের কাছে ডার্বি নিয়ে যাবতীয় তথ্যই রয়েছে।” পুলিশ আর ফায়ার ব্রিগেডের ছাড়পত্র এবং আমন্ত্রিত বিশেষ অতিথিদের তালিকা প্রসঙ্গে জানতে চাইলে আইএফএ সচিব বলেন, “আমার ম্যাচে কোন অতিথিদের আমন্ত্রণ জানাব, এটাতো সম্পূর্ণ আইএফএর আভ্যন্তরীণ বিষয়। তার সঙ্গে ডার্বি খেলা না খেলার সম্পর্ক কি? আর পুলিশ, ফায়ার ব্রিগেড পারমিশন সবই রয়েছে।”
আইএফএ সচিব নিজের বক্তব্য রাখলেও মোহনবাগান এসজিকে নতুন করে আর কোনও চিঠির উত্তর দিচ্ছেন না। তার পরিবর্তে বৃহস্পতিবারের ম্যাচের যাবতীয় আয়োজন রাখছে। দু’দলের ফুটবলারদের জন্য টিফিনেরও ব্যবস্থা রাখা হবে। সিআরএকেও জানিয়ে দেওয়া হয়েছে সেরা রেফারিকেই ডার্বি পরিচালনার দায়িত্ব দিতে। এরপর বেশি রাতে ফের পরপর দুখানি পত্রবোমা আইএফএ-কে পাঠায় সবুজ-মেরুন কর্তৃপক্ষ। একটি মোহনবাগান এসজি-র পক্ষ থেকে, আরেকটি মোহনবাগান ক্লাবের পক্ষ থেকে। বৃহস্পতিবার দুপুর দু’টোয় ‘ইনস্পোর্টসে’ ডার্বি দেখানো হবে বলে নিজেদের পেজে ঘোষণা করে আইএফএ। এখানেই প্রশ্ন তুলেছে মোহনবাগান। ঠিক একদিন আগেই কেন সরকারিভাবে ডার্বির কথা ঘোষণা করা হল? ক্লাব থেকে আবার চিঠি দিয়ে ফের বকেয়া অর্থ চাওয়া হয়েছে। এখন দেখার বৃহস্পতিবার নির্দিষ্ট সময়ে মোহনবাগান ডার্বি খেলতে উপস্থিত হয় কি না। তবে এখনও পর্যন্ত যা খবর, ম্যাচ না খেলেই নৈহাটি স্টেডিয়াম (Naihati Stadium) থেকে তিন পয়েন্ট নিয়ে বাড়ি ফিরবে ইস্টবেঙ্গল।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.