দুলাল দে: ডার্বি নিয়ে কত গল্প শোনা গিয়েছে। ‘জানিস, অমুক ডার্বিতে সুরজিৎ সেনগুপ্ত কী করেছিল?” বড়দের মুখে এমন কথা শুনতে শুনতে না দেখা ম্যাচ চোখের সামনে ভেসে উঠেছে। কিন্তু স্মারক হিসাবে সেই ডার্বির টিকিট বাড়িতে আছে? শতকরা ৯০ ভাগ উত্তর আসবে, “নেই!” থাকবে কী করে? রেখে দেওয়ার ইচ্ছে থাকলেও সম্ভব হয়নি।
কিছুদিন আগেও আইএফএ’র লক্ষ্মী ভাণ্ডার ফুলে ফেঁপে ওঠার ম্যাচ ঘিরে কী অযত্নই না করেছে সংস্থা। মাঠ যখন ভরে যাচ্ছে তখন অন্য কিছু ভেবে লাভ কী! কিন্তু ভারতীয় ফুটবলের সেরা ব্র্যান্ড ডার্বিকে সমাজের নানা স্তরে ছড়িয়ে দেওয়ার ভাবনা ছিল না। ডার্বিকে বাংলার ব্র্যান্ড হিসাবে তুলে ধরার চেষ্টা কোনও মহল থেকে হয়নি। এর আগে বিশেষ চেষ্টা বলতে ম্যাচের আগেরদিন দুই প্রধানের কোচ আর ক্যাপ্টেনকে ঘিরে আইএফএ-তে নিরামিশ সাংবাদিক সম্মেলন।
আইএফএর চেয়ারে বসার এক মাসের মধ্যে ১ সেপ্টেম্বর লিগের ডার্বিকে বানিজ্যকরণ করার চেষ্টা শুরু করে দিয়েছেন সচিব জয়দীপ মুখোপাধ্যায়। সঙ্গে ডার্বির আগেই ফুটবল আর গ্ল্যামারের সহাবস্থান। ফুটবল জগতের বাইরের মানুষ মানসিকভাবে যেন জড়িয়ে পড়েন ১ সেপ্টেম্বরের ডার্বিতে। যার শুরু ৩০ আগস্ট থেকে। শুরুতেই ভাবনার বদল ডার্বির টিকিটকে কেন্দ্র করে। আইপিএল বা আইএসএলে যেমন ম্যাচ টিকিট থাকে, লিগের প্রথম ডার্বিতে তেমনই টিকিট আনছে আইএফএ। যা স্মারক হিসাবে যে কেউ নিজের কাছে রেখে দিতে পারেন। তার জন্য এই প্রথম ডার্বির টিকিট ব্র্যান্ডিং হচ্ছে।
বাঙালির যে ডার্বি নিয়ে এত উত্তেজনা, যে টিকিট নিয়ে মারামারি, সেই টিকিটের জন্য যে স্পনসর পাওয়া যেতে পারে, এতদিন সেই কথা কেউ ভাবেননি। নতুন আইএফএ সচিব যখন ডার্বির টিকিট ব্র্যান্ডিং করার জন্য পরিকল্পনা নিলেন, স্পনসরশিপ পেতে অসুবিধা হল না। তাই এবারই প্রথম ডার্বির টিকিট ব্র্যান্ডিং হচ্ছে। তাতে বদলে যাচ্ছে ডার্বির টিকিটের চেহারা। ম্যাচ ১ সেপ্টেম্বর। যা দুই প্রধানকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। সরকারি তরফে অনুমতিও মিলেছে। আইএফএ’র পরিকল্পনা একদিন আগে নয়। ডার্বির উত্তেজনা ফেরাতে দু’দিন আগে থেকে মাঠের বাইরে খেলা শুরু হয়ে যাবে। দুই প্রধানকে নিয়ে সাংবাদিক সম্মেলন ৩০ আগস্ট। সাংবাদিক সম্মেলন হবে পাঁচতারা হোটেলে। যেখানে কোচ, ফুটবলারদের পাশে থাকবেন টলিউডের গ্ল্যামার জগতের লোকজন। প্রসেনজিৎ এবং ঋতুপর্ণা দু’জনেই ৩০ আগস্ট ফাঁকা নেই। তবে ডার্বির সাংবাদিক সম্মেলনে থাকবেন বলে কথা দিয়েছেন টলিউডের হার্টথ্রব দেব। সঙ্গে আরও তারকা। যাদের নাম এখনই প্রকাশ করতে চাইছে না আইএফএ। সেদিনের অনুষ্ঠানটি ঘিরে গ্ল্যামারের ছটা বিচ্ছুরণের ভাবনাও হয়েছে। যেখানে সমাজের বিভিন্ন স্তরের মানুষ থাকবেন।
সচিবের দায়িত্ব নিয়ে ময়দানের ক্যান্টিনগুলির দেনা মিটিয়েছেন জয়দীপ। সঙ্গে ডেকরেটার্সের পাওনাও। এবার ঘুরে দাঁড়ানোর পরিকল্পনা ডার্বি থেকে। বাংলার ফুটবলকে বাণিজ্যকরণ করতে ডার্বির চেয়ে বড় অস্ত্র এখন নেই জয়দীপের হাতে। তাই এভাবেই তিনি পা ফেলতে চাইছেন, যাতে আইএফএ’র বিশাল দেনা থেকে মুক্তি পেতে পারেন।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.