সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: আবেগে ভাসল আনন্দের শহর কলকাতা। সকাল থেকেই যুদ্ধকালীন প্রস্তুতিতে তোড়জোড় ইস্টবেঙ্গল শিবিরে। লাল-হলুদ রঙে ঢেকে গিয়েছে ক্লাব প্রাঙ্গণ। আর কিছুদিন পরেই শতবর্ষে পদার্পণ করবে শতাব্দী প্রাচীন এই ক্লাব। রবিবার বলা যেতে পারে তারই খুঁটিপুজো হল। আর এদিনই গোষ্ঠ পাল হয়ে উঠলেন অন্যতম মধ্যমণি। তাঁকে ক্লাবের তরফে শুধু যে সম্মান জ্ঞাপন করা হয়েছে তা নয়। বিতর্কেও উঠে এসেছেন তিনি। তাঁর ছেলে নিরংশু পাল বলেছেন, “মোহনবাগান বাবাকে যে সম্মান দিতে পারেনি, সেই সম্মান দিল ইস্টবেঙ্গল।”
১ আগস্ট, ১৯২০ সালে ময়দানে আত্মপ্রকাশ ঘটেছিল এই ক্লাবের। এবছর ১ আগস্ট ১০০ বছরে পড়বে ইস্টবেঙ্গল। এই নিয়ে আজ, ২৮ জুলাই এক শোভাযাত্রার আয়োজন করেছিল ক্লাব কর্তৃপক্ষ। শতবর্ষ উপলক্ষে রবিবার কুমোরটুলি পার্ক থেকে ময়দানে নিজেদের তাঁবু পর্যন্ত একটি শোভাযাত্রার আয়োজন করেছিল ক্লাব কর্তৃপক্ষ। ক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা সুরেশচন্দ্র চৌধুরির বাড়ি ছিল কুমোরটুলি পার্কের কাছে। তাই শোভাযাত্রা শুরুর জন্য এই জায়গাটিকেই বেছে নেওয়া হয়। ইস্টবেঙ্গলের প্রতীকী মশাল জ্বালিয়ে অনুষ্ঠানের শুভ সূচনা করেন ক্রীড়ামন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস। অনুষ্ঠানে ছিলেন মন্ত্রী শশী পাঁজাও। এছাড়া সুকুমার সমাজপতি, মনোরঞ্জন ভট্টাচার্য, বাইচুং-সহ অনেক প্রাক্তন ফুটবলাররাও ছিলেন এদিনের অনুষ্ঠানে। শোভাবাজার, হাতিবাগান, বিধান সরণি, কলেজ স্ট্রিট, ভিক্টোরিয়া হাউস, সেন্ট্রাল অ্যাভিনিউ হয়ে শোভাযাত্রা শেষ হয় ময়দানের ক্লাব প্রাঙ্গণে।
ইস্টবেঙ্গলের শতবর্ষ উপলক্ষে তিলোত্তমার রাস্তায় এদিন ছিল লাল-হলুদের জনজোয়ার। র্যালির শুরুতেই পথপ্রদর্শক হিসেবে ছিল বিশাল বাইক মিছিল। এছাড়া ক্লাবের ধ্বজা উড়িয়ে অনেককেই ক্লাবের নামে জয়ধ্বনি দিতে শোনা যায়। রাস্তার দু’পাশে লাল-হলুদ নিশান হাতে দাঁড়িয়ে থাকতেও দেখা যায় অনেককে। ফুটবলার ও ক্লাবের সদস্য ছাড়াও এদিনের শোভাযাত্রায় হাঁটেন ইস্টবেঙ্গলপ্রেমী প্রচুর মানুষ। বেশিরভাগের পোশাকই ছিল লাল-হলুদের যুগলবন্দি। শোভাযাত্রা ক্লাবে এসে পৌঁছনোর পর মশালের আগুন ক্লাবের মশালে ধরিয়ে দেন প্রাক্তন ফুটবলার সুভাষ ভৌমিক। উপস্থিত ছিলেন ইস্টবেঙ্গলের বর্তমান কোচ আলেজান্দ্রো মেনেনজেস।
শতবর্ষের সূচনার পাশাপাশি দেশের প্রথম পদ্মশ্রীপ্রাপ্ত ফুটবলার গোষ্ঠ পালকে শ্রদ্ধা জানায় ইস্টবেঙ্গল। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন তাঁর ছেলে নিরংশু পাল। তিনি বলেন, “মোহনবাগান বাবাকে যে সম্মান দিতে পারেনি, সেই সম্মান দিল ইস্টবেঙ্গল।” প্রসঙ্গত, পদ্মশ্রী ও মোহনবাগান রত্ন-সহ গোষ্ঠ পালের সমস্ত পদক এতদিন ছিল মোহনবাগানের কাছে। অভিযোগ উঠেছিল, সেগুলির যথাযথ দেখভাল হচ্ছে না। কিছুদিন আগে সেগুলি ফিরিয়ে দেওয়া হয় প্রয়াত ফুটবলারের পরিবারকে। দেখা যায়, পদকগুলির অবস্থা বেশ সঙ্গীন। এই নিয়ে ক্ষোভপ্রকাশ করে পরিবার। অনেকে মনে করছে, সেই কারণেই আজ ইস্টবেঙ্গলের অনুষ্ঠানে একথা বলেন গোষ্ঠ পালের পুত্র।
এদিনই নিজের প্রিয় ক্লাবকে শুভেচ্ছাবার্তা পাঠালেন অভিনেতা বরুণ ধাওয়ান ও রেমো ডি’সুজা। ভিডিওর মাধ্যমে যেমন নিজেদের প্রিয় ক্লাবের শুভকামনা তাঁরা করেছেন, তেমনই ফুটবলপ্রেমীদেরও উৎসাহিত করেছেন। ভিডিও বার্তায় বরুণ বলেছেন, আগামী ১ আগস্ট ইস্টবেঙ্গল ১০০ বছরে পদার্পণ করতে চলেছে। গোটা ইস্টবেঙ্গল টিমকে তাঁর তরফ থেকে শুভেচ্ছা। কোরিওগ্রাফার ও পরিচালক রেমো ডি’সুজাও ভিডিও বার্তায় ইস্টবেঙ্গলকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। তিনিও বলেছেন ১ আগস্ট ১০০ বছরে পদার্পণ করতে চলেছে ইস্টবেঙ্গল। সেই জন্য গোটা দলকে তাঁর শুভেচ্ছা। এরপরই রেমোর গলায় শোনা যায় ‘EBRC- ইস্টবেঙ্গল দ্য রিয়েল চ্যাম্পিয়ন’।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.