বোরিয়া মজুমদার: বেঙ্গালুরু এফসির হয়ে আইএসএল (ISL) জিতেছেন তিনি। টিমকে দাপুটে ফুটবল খেলাতে পছন্দ করেন। তাঁর নিজস্ব একটা ব্র্যান্ডও রয়েছে। কিন্তু এই মুহূর্তে তাঁর সামনে প্রবল কঠিন চ্যালেঞ্জ। ভারতীয় ফুটবলের দুই প্রধানের এক, ইস্টবেঙ্গলের (East Bengal) কোচিং করা। ইস্টবেঙ্গল কোচ হিসেবে সুপার কাপ জিতে দারুণ শুরু করলেও আইএসএলে লাল-হলুদের অবস্থা বেশ সঙ্গীন। সেই বৈতরণী পার করতে পারবেন কুয়াদ্রাত? পারবেন ইস্টবেঙ্গলকে প্রথম ছয়ে রাখতে? একান্ত সাক্ষাৎকারে ইস্টবেঙ্গলের কোচ যা বললেন…।
এখনও পর্যন্ত আপনার প্রভাব মারাত্মক। কী বলবেন এখনও পর্যন্ত আপনার সফর নিয়ে?
কুয়াদ্রাত: আমি খুশি যে মোহনবাগানের (Mohun Bagan) বিরুদ্ধে ইস্টবেঙ্গল সর্বাত্মক উজাড় করে খেলেছে। এরকম হাড্ডাহাড্ডি খেলা ভারতীয় ফুটবল আর কলকাতার মানুষের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
সুপার কাপ জয় নিয়ে কিছু বলুন। আপনাকে এই জয় কতটা আনন্দ দিয়েছে?
কুয়াদ্রাত: এই জয় আমার কাছে একটা বিরাট পাওয়া। আমি সমর্থকদের মুখে হাসি আর চোখে জল দেখে বুঝেছিলাম, এই জয় তাদের কাছে কতটা গুরুত্বপূর্ণ ছিল।
কতটা শক্ত ছিল টিমকে চ্যাম্পিয়ন করা? কোন ম্যাজিকে দীর্ঘ ১২ বছর পরে ট্রফি এলো ইস্টবেঙ্গল তাঁবুতে?
কুয়াদ্রাত: কোনও ম্যাজিক নয়। কঠোর পরিশ্রম, অনুশীলন আর স্ট্র্যাটেজি, এই তিন মন্ত্রেই সাফল্য এসেছে। কিন্তু, এই ক্লাবে মূল জিনিসটা হলো, বিশ্বাস। কর্মকর্তা, প্লেয়ার থেকে শুরু করে সমর্থক। সবাইকে বিশ্বাস করানো যে ট্রফি জয় সম্ভব। আর আমরা সকলে মিলে সেই অভিমুখে এগিয়ে গিয়েছি।
গত ডার্বির আগে, অনেকেই বলছিল মোহনবাগানের থেকে ইস্টবেঙ্গল ফেভারিট। অনেক মোহন সমর্থকও বলেছিল সে কথা। এই কথাগুলো আপনাকে অতিরিক্ত চাপে রেখেছিল?
কুয়াদ্রাত: না। আমি প্রেশার ভালই ম্যানেজ করি। আমি বার্সেলোনা যুব দলের হয়ে রিয়াল মাদ্রিদের বিরুদ্ধে খেলেছি যখন, তখন আমার মাত্র দশ বছর বয়স! তাই আমি এরকম পরিস্থিতির সম্মুখীন হয়েছি আগে। প্রেশারের মধ্যে খেলতে আমার চিরকাল খুব ভাল লাগে।
ইস্টবেঙ্গল নিয়ে আপনার আগামী এক মাসের পরিকল্পনা কী?
কুয়াদ্রাত: আমরা কোনওদিন আই লিগ জিতিনি। তার পর টিম যখন আইএসএল (ISL) খেলতে শুরু করে, তখন খুব একটা ভাল মানের প্লেয়ার ছিল না ইস্টবেঙ্গলে। আমি ক্লাবকে তাই পরিষ্কার জানাই, আমার তিন বছর সময় চাই। এই সময় আমায় দেওয়া হোক।
আপনি ভারতীয় প্রতিভা তৈরিতেও গুরুত্ব দিচ্ছেন। সেই ব্যাপারে যদি কিছু বলেন।
কুয়াদ্রাত: এটা খুবই জরুরি। ক্লাব নিজের অ্যাকাডেমিতে এত টাকা খরচ করছে, যাতে সেখান থেকে তরুণ প্রতিভা উঠে আসে। সময় লাগবে। আমি মনে করি আমাদের দু-তিনজন প্লেয়ার আছে, যারা জাতীয় দলে সুযোগ পাবে।
সমর্থকদের উদ্দেশ্যে কী বলবেন? লিগ টেবিলের প্রথম ছয়ে উঠতে পারবে লাল হলুদ? পরপর দুটো ম্যাচ তো হেরে গেল টিম।
কুয়াদ্রাত: আমি সমর্থকদের কাছে কৃতজ্ঞ আমায় এই ভালোবাসা দেওয়ার জন্য। আমাকে এভাবে সমর্থন করার জন্য। আমাদের অনেক কাজ করতে হবে। অনেক কাজ করা বাকি আছে। খেলাও বাকি আছে বেশ কয়েকটা। প্লে-অফ এখনও দেরি আছে। প্রথম ছয়ে ওঠার জন্য আমাদের সুযোগ তৈরি করতে হবে। এই মরশুমে না হলেও, সামনের মরশুমে হবেই। আমরা ভবিষ্যতের জন্য নিজেদের তৈরি করছি, গড়ে তুলছি। আমার বিশ্বাস সমর্থকরা এই কথা বুঝবেন, যে সব ক্ষেত্রে সাফল্য আসবে না। কিন্তু সঠিক পথে এগোলে সাফল্য আসবেই। আর আমার বিশ্বাস, আমরা ঠিক পথেই এগোচ্ছি। জয় ইস্টবেঙ্গল!
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.