চন্দ্রশেখর চট্টোপাধ্যায়, আসানসোল: গ্রামের দামাল মেয়ে এবার বিশ্বকাপের দোরগোড়ায়। অনূর্ধ্ব-১৭ ফিফা মহিলা বিশ্বকাপ ফুটবলের জাতীয় দলের শিবিরে ডাক পেয়েছে রূপনারায়ণপুরের কিশোরী অদ্রিজা সরখেল। ৩১ জনের শিবিরে রাজ্যের একমাত্র প্রতিনিধি অদ্রিজা।
আসানসোলের প্রান্তিক এলাকা রূপনারায়ণপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের মহাবীর কলোনির বাসিন্দা অদ্রিজা। ছোট থেকেই মামার বাড়িতে মানুষ সে। দাদু-মামাকে দেখেই মাঠের প্রতি টান জন্মেছিল অদ্রিজার। ফুটবলের প্রাথমিক পাঠও তাঁদের কাছে শেখা। অদ্রিজা জানায়, সালানপুরের আছড়া রায় বলরাম গার্লস স্কুলে পঞ্চম শ্রেণিতে পড়াকালীন তার স্বপ্নের দৌড় শুরু। সেসময় থেকেই গোলকিপার হিসাবে অনেকের নজর কাড়ে। স্থানীয় ফুটবল প্রশিক্ষক সঞ্জয় বাউরি প্রশিক্ষণ দেওয়া শুরু করেন। এরপরেই স্কুলস্তর থেকে জেলা হয়ে রাজ্যস্তরে খেলার সুযোগ পায় অদ্রিজা।
জানা গিয়েছে, ২০১৪ সালে মণিপুরে হওয়া অনূর্ধ্ব ১৪-এর ন্যাশনাল মিটে প্রথম জাতীয় স্তরে খেলে অদ্রিজা। সেই টুর্নামেন্টেই গোলকিপিংয়ে চমকে দেয় সে। এরপর ২০১৮ সালে অনুর্ধ্ব-১৬ বাংলার হয়ে ত্রিপুরায় খেলার সুযোগ পায়। মাঝে তিন মাস কলকাতা লিগে শ্রীভূমি ক্লাবের হয়েও খেলে অদ্রিজা। সেখানেও তার পারফরম্যান্স চোখে পড়ার মতন ছিল। গোয়ায় প্রশিক্ষণের মাঝে কয়েকদিনের জন্য রূপনারায়ণুপের এসেছে অদ্রিজা। সে বলে, “শুধু অনুশীলন করে যাচ্ছি। গ্রামের মাঠেও আমার অনুশীলন চলছে। প্রশিক্ষণ শিবিরে ডায়েট চার্ট মেনে চলতে হচ্ছে। জাঙ্কফুড একেবারেই নিষিদ্ধ।” অদ্রিজার দাদু সমর ভট্টাচার্য বলেন, “আমরা একেবারেই সাধারণ মধ্যবিত্ত পরিবার। অদ্রিজার বাবা ঠিকাকর্মী। খেলার প্রচুর খরচ বহন করা ওর বাবার পক্ষে সম্ভব নয়। আমার পেনশনের টাকাতেই অদ্রিজার ব্যক্তিগত প্রশিক্ষণ, দেশের বিভিন্ন স্থানে যাওয়া আসার খরচ চলছে।” অদ্রিজার মা মানসী সরখেল বলেন, “এখনও কোনও জায়গা থেকে তেমন সহায়তা মেলেনি। ওর দাদুই নাতনিকে নিয়ে ছুটে ছুটে ঘুরে বেড়িয়েছেন। বিশ্বকাপে ওকে খেলতে দেখতে পেলে আমাদের স্বপ্নপূরণ হবে, সঙ্গে অদ্রিজারও।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.