স্টাফ রিপোর্টার: কঠিন তবে অসম্ভব নয়, স্পষ্ট বার্তা দিয়ে রাখলেন জুয়ান ফেরান্দো (Juan Ferrando)। আজ সেমিফাইনালের দ্বিতীয় লেগে হায়দরাবাদ এফসির (Hyderabad FC) মুখোমুখি হবে এটিকে মোহনবাগান (ATK-Mohun Bagan)। যেখানে সবুজ-মেরুন শিবিরকে ফাইনালে যেতে গেলে তিন গোলে জিততেই হবে। সবুজ-মেরুন সমর্থকরা বুঝে গিয়েছেন, দলের পক্ষে ঘুরে দাঁড়ানো বেশ কঠিন। স্প্যানিশ কোচও তাই মনে করছেন। তবে হতাশায় আবার ভেঙেও পড়ছেন না। তাঁর ধারণা, সকলে যদি সম্মিলিতভাবে প্রয়াস চালায় তাহলে সাফল্য আসতে বাধ্য।
আজ এটিকে মোহনবাগানকে শুধু তিন গোল দিলে চলবে না, নিজেদের গোল অরক্ষিত রাখতে হবে। একটা গোল হজম করা মানে জয়ের ব্যবধান রাখতে হবে কমপক্ষে চার গোলের। সত্যিই কি সম্ভব? প্রশ্নের জবাব দিতে গিয়ে ফেরান্দো বলেন, “কঠিন ঠিকই, তবে অসম্ভব নয়। আসলে পরিকল্পনা করে এগোতে হবে। হায়দরাবাদের দিকে যেমন নজর দিতে হবে, পাশাপাশি আমাদের পরিকল্পনার উপর জোর দেওয়াও জরুরি। সোজা কথা, জিততে গেলে ফোকাস নড়ানো চলবে না।”
আরও পড়ুন: ICC Women’s World Cup: ঝুলনের রেকর্ড গড়ার দিনে ইংল্যান্ডের কাছে বিধ্বস্ত ভারতের মহিলা দল
স্প্যানিশ কোচ বুঝে গিয়েছেন, পরিস্থিতি সত্যি খুব জটিল। অথচ এই দলটাই টানা ১৫ ম্যাচ অপরাজিত ছিল। গত দু’টো ম্যাচে তাহলে মনসংযোগ ব্যাঘাত ঘটল কেন? জবাবে ফেরান্দো বলেন, “ডিসেম্বর মাসে যখন এই দলের দায়িত্ব নিই তখন সব ম্যাচ জেতা ছিল জরুরি। এমন পরিস্থিতিতে ২-৩টে ম্যাচ খেলা যায়। কিন্তু ক্রমাগত খেলে যাওয়া অসম্ভব। ১৬তম ম্যাচে তাই হয়তো ক্লান্তি অনুভব করেছে ফুটবলাররা। তাছাড়া ভাগ্য সঙ্গী হয়নি। জামশেদপুরের বিপক্ষে গোল লক্ষ্য করে একটার বেশি শট নিতে পারিনি। সেট পিসে মার খেয়েছি হায়দরাবাদের কাছে।”
দ্বিতীয় লেগে ঘুরে দাঁড়াতে গেলে রয় কৃষ্ণদের মনে আস্থা ধরে রাখা জরুরি বলে জানিয়েছেন ফেরান্দো। ৯০ মিনিটের মধ্যে তিন গোল করার মানসিকতা নিয়ে ঝাঁপাতে হবে। কিন্তু গত ম্যাচে সেট পিসে মার খেয়ে গিয়েছে দল। কর্নার থেকে দু’টো গোল হয়েছিল। তাছাড়া হায়দরাবাদ উইং ধরে খেলে বাজিমাত করে যায়। সেখানে এটিকে মোহনবাগান ডিফেন্ডারদের দেখা যায়নি প্রতিপক্ষের উইং প্লে আটকানোর কৌশল প্রয়োগ করতে। ফেরান্দো শুধু এটুকু বুঝিয়ে দিয়েছেন, বিশেষ পরিকল্পনা নিয়ে অবশ্যই তাঁরা আজ নামবেন। সেইসব ভাবনা নিয়ে ম্যাচের আগে বিস্তারিত আলোচনা করতে নারাজ। কিন্তু কোন কোন জায়গায় দলের উন্নতি করার প্রয়োজন রয়েছে?
“অনেক জায়গায় উন্নতির প্রয়োজন। আমার কাছে গুরুত্বপূর্ণ হল মানসিকতা। এক গোলে এগিয়ে থাকলে দু’গোলের জন্য ঝাঁপাতে হবে। আবার ২-০ হলে তিন গোলের দিকে এগনো দরকার। এই মানসিকতা না আনতে পারলে হবে না।” স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন ফেরান্দো। প্রশ্ন হল, হায়দরাবাদের সঙ্গে প্রথম লেগের ম্যাচে ডিফেন্সের হাল এমন হল কেন? শুধুই ক্লান্তি বা ফোকাস নড়ে যাওয়া কি কারণ? জবাবে স্প্যানিশ কোচ বলেন, “কিছু কিছু সময় খেলোয়াড়দের মধ্যে বোঝাপড়ার অভাব ধরা পড়ে। এমনটা হতেই পারে। তাই বলে সব সময় এই অজুহাত দিলে চলবে না। দলের প্রত্যেককে চিনি। জানি কে কতটা ক্লান্ত। তাছাড়া ছোটখাটো ভুলও অনেক সময় হয়। তাই প্রথম লেগের খেলায় এইসব সমস্যা দেখা দিয়েছিল।”
ডেভিড উইলিয়ামস, তিরি, হুগো বুমোস, মনবীর, প্রতে্যকেই কম বেশি চোট-আঘাতে জর্জরিত। তাই ফেরান্দো জোর দিয়ে বলতে পারছেন না কাকে কার বদলে খেলাবেন। তবে হায়দরাবাদ কোচ ম্যানুয়েল মার্কেজ বুঝে গিয়েছেন, তাঁদের প্রচন্ড চাপ সামলাতে হবে। কিন্তু ফাইনালে ওঠার পথ তাঁদের সামনে যে প্রশস্ত তাও বলতে ভুলছেন না তিনি। এটিকে মোহনবাগান তো বুধবার শুরু থেকে গোল পাওয়ার লক্ষ্যে ঝাঁপাবে। কীভাবে ব্যাপারটা সামাল দেবেন? প্রশ্নের জবাবে ম্যানুয়েল বলেন, “জানি ওরা শুরু থেকে গোল করার জন্য মরিয়া হয়ে উঠবে। ওদেরকে আটকাতে হবে। এইসব ম্যাচে দক্ষতার চেয়ে মানসিকতা বেশি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে। গত ম্যাচের মতো পরিস্থিতি সামাল দিতে পারলে চলবে। তবে এমন জায়গায় আমরা থেকেও যদি এটিকে মোহনবাগান ফাইনালে খেলার সুযোগ পায় তাহলে আমিই প্রথম এগিয়ে যাব তাদের অভিনন্দন জানাতে। তাই আমরা ফাইনাল নিয়ে ভাবছি না। ভাবছি শুধু এই ম্যাচটাকে নিয়েই।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.