দুলাল দে: তিনি এরকমই। প্রতিপক্ষ দুর্বল হোক কিংবা শক্তিশালী। প্রতিপক্ষকে নিয়ে কিছু ভাবতেই রাজি নন তিনি। মানে সরকারি ভাবে। “শুধু এসসি ইস্টবেঙ্গল নয়। আমি কোনও সময়েই প্রতিপক্ষকে নিয়ে ভাবতে রাজি নই। যে সময়টায় বিপক্ষকে নিয়ে ভাবব, সেই সময়টায় নিজের দলকে কীভাবে আরও বেশি সংহত করা যায়, তারই পরিকল্পনা করি।”
নিজের দলকে সংহত করার জন্য হাবাসের এক এবং একমাত্র অস্ত্র, টিমস্পিরিট। কোনও কারণে যদি রয় কৃষ্ণ কিংবা হুগো বুমোসদের নাম দলকে টানার ক্ষেত্রে চলে আসে, সঙ্গে সঙ্গে প্রতিবাদ করেন তিনি। শুক্রবারই যখন রয় কৃষ্ণ আর হুগো বুমোসের জন্য এটিকে মোহনবাগানের (ATK Mohun Bagan) শক্তিশালী আক্রমণভাগের কথা উঠল, প্রতিবাদের সূরে তখনই বললেন, “শুধু রয় কৃষ্ণ কিংবা হুগো বুমোসের কথা বলছেন কেন? আমার দলে প্রীতম কোটাল, কার্ল ম্যাক হিউগ, তিরিরাও তো আছে। সবার মিলিত চেষ্টাতেই জয় আসা সম্ভব। আমার দলে কেউ একক তারকা নেই।”
একের বদলে সকলে। বছরজুড়ে এই স্লোগান দলের ধমনীতে ঢুকিয়ে দেওয়ার জন্যই বোধহয় আইএসএলের (ISL 2021) ইতিহাসে অ্যান্তোনিও লোপেজ হাবাস সফলতম কোচ।
প্রতিপক্ষ এসসি ইস্টবেঙ্গলকে (SC East Bengal) তো জামশেদপুরের বিরুদ্ধে দেখেছেন? প্রতিপক্ষ নিয়ে বলবেন না বলবেন না বলেও বললেন, “একটা দলের কোচ থেকে ফুটবলার, বিভিন্ন পজিশনে পরিবর্তন হয়েছে। এই দলটাকে সহজ ভাবে নেওয়ার প্রশ্নই উঠছে না।” কিন্তু আপনি তো এই এসসি ইস্টবেঙ্গলকেই গত মরশুমে হারিয়েছিলেন? হাবাস নির্লিপ্ত ভাবে উত্তর দিলেন, “গত মরশুম আর এই মরশুম তো এক নয়। একটা বছর আগের কথা বলছেন। সেই সময় ম্যাচের আগে দু’দলের যা পরিস্থিতি ছিল, এইবার ম্যাচের আগে তো পুরোপুরি বদলে গিয়েছে। একটু আগেই বললাম, যে ওদের দলে অনেক পরিবর্তন হয়েছে। ওদের দল হিসেবে আমি রীতিমতো সম্মান করি।”
কিন্তু শনিবারের ম্যাচের জন্য আলাদা করে নিশ্চয়ই কোনও পরিকল্পনা আছে? বিশেষ করে ম্যাচটা যখন লাল-হলুদের বিরুদ্ধে? হাবাস বললেন, “বিশ্বাস করুন, আমার আলাদা কোনও পরিকল্পনা নেই। প্রতিপক্ষ এসসি ইস্টবেঙ্গল বলে পরিকল্পনা করতে শুরু করব, আর অন্য দলের বিরুদ্ধে হাত গুটিয়ে বসে থাকব, এরকমটা হয় না। যে কোনও ম্যাচের আগেই প্রতিপক্ষকে নিয়ে যেভাবে পরিকল্পনা করি, এই ম্যাচ নিয়েও সেভাবেই পরিকল্পনা করছি। আপনাদের কাছে পার্থক্য থাকতে পারে। কিন্তু একজন কোচ হিসেবে আইএসএলের অন্য কোনও ম্যাচের থেকে এই ম্যাচটাকে আলাদা করে দেখতে পারি না।’’ কিন্তু সমর্থক? সবুজ-মেরুন সমর্থকদের কাছে তো এই ম্যাচটার মানে আরও অনেক বেশি কিছু। “অস্বীকার করছি না তো। সমর্থকদের কাছে ডার্বির কী অর্থ জানি। আর সমর্থকদের জন্যই ম্যাচটা জিততে চাইছি। তবে এটাও ঠিক, যে কোনও ম্যাচেই আমি জিততে চাই। শনিবারের ম্যাচটাও সেভাবেই জিততে চাইছি,” বললেন এটিকে মোহনবাগান কোচ।
প্রথম ম্যাচে একটা সময় কিন্তু কেরলের থেকে বল পজেশন বেশ পিছিয়ে ছিল সবুজ-মেরুন। ডার্বির আগে সেটা ভাবছেন কিনা জিজ্ঞাসা করা হলে হাবাস বললেন, “প্রতিপক্ষ গোটা ম্যাচে বল পজেশন রাখলেও ক্ষতি নেই। আমার তিন পয়েন্ট চাই। সেটাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।” কিন্তু চিমা আর পেরোসেভিচকে আটকানো নিয়ে নিশ্চয়ই কিছু ভেবেছেন? হাবাসের উত্তর, “প্রশ্নই নেই ওদের দু’জনকে নিয়ে আলাদা করে ভাবার। আমি তো পুরো এসসি ইস্টবেঙ্গল দলের বিরুদ্ধে খেলব। তাহলে শুধু শুধু দু’জন ফুটবলার নিয়ে ভাবতে যাব কেন?”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.