ফাইল ছবি
দুলাল দে: শনিবার দুপুর পর্যন্ত স্পেনে করোনায় আক্রান্ত ১ লক্ষ ৯১ হাজার ৭২৬। মৃত্যু ২০ হাজার ৪৩। নিঃসন্দেহে তিনি আতঙ্কিত। কিন্তু তারই মধ্যে আন্তোনিও লোপেজ হাবাস (Antonio López Habas) একমুঠো খোলা বাতাসের সন্ধান পেলেন, মোহনবাগানের আই লিগ জয়ের খবরে। শনিবার মাদ্রিদ থেকে ‘সংবাদ প্রতিদিন’-এর ফোনে আনপ্লাগড এটিকে-মোহনবাগান কোচ।
প্রশ্ন: কলকাতায় বসে রোজ স্পেনের খবর শুনছি আর শিউরে উঠছি।
হাবাস: শিউরে ওঠার মতোই ঘটনা। এক মাস হয়ে গেল আমাদের এখানে লকডাউন চলছে। আইএসএল ফাইনালের পর যখন মাদ্রিদে ফিরলাম, ততক্ষণে পুরো স্পেন জুড়ে লকডাউন শুরু হয়ে গিয়েছে। তারপর থেকে টানা লকডাউনের মধ্যেই রয়েছি। এদিন আবার সরকার ঘোষণা করেছে, এই লকডাউন চলবে ২৬ এপ্রিল পর্যন্ত। সত্যিই জানি না, এই ভয়াবহ অবস্থা থেকে কবে মুক্তি পাব। তবে তার মধ্যেই এদিন ইউরোপে কিছুটা স্বস্তির খবর এসেছে। যার নেতৃত্বে জার্মানি।
প্রশ্ন: কী রকম?
হাবাস: প্রতিদিন ঘুম থেকে উঠেই যেটা প্রথমে জানতে পারি, ইউরোপের কোন দেশে কতজন নতুন করে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হলেন। নাহলে কতজন মারা গেলেন। তার মধ্যেই এদিন শুনলাম, গতকাল জার্মানিতে একজনও আর নতুন করে করোনায় আক্রান্ত হননি। এটা ইউরোপের জন্য স্বস্তির খবর। মানে ধীরে ধীরে পুরো ব্যাপারটা নিয়ন্ত্রণে আনা যাচ্ছে।
প্রশ্ন: আপনি যেখানে থাকেন, সেই মাদ্রিদের কী অবস্থা?
হাবাস: সুপার মার্কেট আর ফার্মাসি ছাড়া সব কিছুই মোটামুটি বন্ধ। তবে দেশের অর্থনীতি যাতে ভেঙে না পড়ে তার জন্য কিছু দোকান অল্প করে খোলা দেখলেও দেখা যেত পারে। কিন্তু কী ভাবে, কতক্ষণ খোলা থাকবে, তার পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ রয়েছে সরকারের হাতে।
প্রশ্ন: দরকারে যাচ্ছেন বাড়ির বাইরে?
হাবাস: খুব দরকার পড়লে সুপার মার্কেট, নাহলে ফার্মাসিতে যেতেই হচ্ছে। তবে বাইরে বের হলে সবাই এখানে মাস্ক পরবেই। চেষ্টা করছি, যতবার সম্ভব স্যানিটাইজার দিয়ে হাত ধোয়ার। কলকাতায় আপনারাও নিশ্চয়ই একইভাবে চলছেন।
প্রশ্ন: প্রতিদিন মাঠে যাওয়া মানুষ তাহলে এই মুহূর্তে বাড়িতে বন্দিজীবন?
হাবাস: কী করব বলুন। তবে ঘরের বাইরে যাওয়া ছাড়া আমার জীবনে লকডাউন খুব একটা প্রভাব ফেলছে না। আগেও যেভাবে জীবন কাটাতাম, সেভাবেই কাটাচ্ছি। সকালে ঘুম থেকে উঠে শরীরচর্চা। তারপর বাড়ির কাজে হাত লাগানো। মাঝে সময় পেলে বই পড়া। তার মধ্যে পরের মরশুমের জন্য ফুটবলারও দেখছি।
প্রশ্ন: নিজেই যখন প্রসঙ্গ তুললেন জিজ্ঞাসা করছি, মোহনবাগানের কোন ফুটবলারকে পরের মরশুমের জন্য বাছলেন?
হাবাস: দেখুন, আমি এটিকে-মোহনবাগানের কোচ। শুধু মোহনবাগান নিয়ে জিজ্ঞাসা করবেন না।
প্রশ্ন: গত মরশুমে মোহনবাগানের কোনও ম্যাচ দেখেছেন?
হাবাস: মোহনবাগান কোচ কখনও এটিকে দল নিয়ে মন্তব্য করেছেন বলে শুনিনি। তাহলে আমি কেন মোহনবাগান নিয়ে আলোচনা করব?
প্রশ্ন: ঠিক আছে, গত মরশুমে মোহনবাগানের কোন ফুটবলারকে ভাল লেগেছে বলুন।
হাবাস: প্লিজ, আমাকে এটিকে (ATK)-মোহনবাগান নিয়ে প্রশ্ন করুন।
প্রশ্ন: পরের মরশুমের দল নিয়ে কর্তাদের সঙ্গে কথা হচ্ছে?
হাবাস: এটিকে-মোহনবাগান ম্যানেজমেন্টের সঙ্গে প্রতিদিন কথা হচ্ছে। এই মুহূর্তে কোন ফুটবলারদের দলে রাখা উচিত, ফুটবলারদের নাম ধরে ধরে বিশ্লেষণ চলছে।
প্রশ্ন: কথা হয় ফুটবলারদের সঙ্গে?
হাবাস: যে ফুটবলারদের সঙ্গে চুক্তি আছে, কলকাতা ছাড়ার আগে সবাইকে বলে এসেছি, ফিরে গিয়ে সবার ফ্যাট চেক করব। সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে সব ফুটবলারের সঙ্গে যোগাযোগ আছে। ঠিক করেছি, কিছুদিনের মধ্যেই সব ফুটবলারকে কিছু ট্রেনিং শিডিউল পাঠিয়ে দেব। ফলে যখন মরশুম শুরু হবে, কেউই ফিটনেসের বাইরে চলে যাবে না।
প্রশ্ন: শনিবারই আই লিগের বাকি ম্যাচগুলি বাতিল করে দিল ফেডারেশন।
হাবাস: ঠিকই করেছে। কম করে আরও দু’মাস সব ধরনের ফুটবল বন্ধ রাখা উচিত ভারতে। যা পরিস্থিতি, তাতে ফুটবল ম্যাচ হওয়া সম্ভব নয়।
প্রশ্ন: একই সঙ্গে এ দিন মোহনবাগানকেও (Mohun Bagan) চ্যাম্পিয়ন ঘোষণা করে দেওয়া হল।
হাবাস: দারুণ খবর। আইএসএলে এটিকে চ্যাম্পিয়ন। এবার আই লিগে মোহনবাগান। আমার মতে এই জয় এটিকেরও। দুই ক্লাবের ফ্যানদের জন্যই দারুণ ব্যাপার। তবে এবার কিন্তু দু’দলের ফ্যানরা সবাই মিলে এটিকে-মোহনবাগান নিয়েই ভাববে।
প্রশ্ন: কলকাতায় আপনার সমর্থকদের জন্য কোনও বার্তা দেবেন?
হাবাস: আমরা এখানে মাদ্রিদে বসে যা করছি, সেটাই আপনারাও করুন। যতবার সম্ভব স্যানিটাইজার দিয়ে হাত ধোবেন। আর মাস্ক পরুন। সঙ্গে সোশ্যাল ডিসট্যান্স বজায় রাখুন। ভ্যাকসিন আবিষ্কারের আগে এর বাইরে অন্য কোনও উপায় নেই।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.