স্টাফ রিপোর্টার: সুপার কাপ খেলার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিয়েই ফেললে ইস্টবেঙ্গল। যদিও কোয়েস ইস্টবেঙ্গল নয়, লাল-হলুদ জার্সি পরে ফুটবলাররা খেলবেন ইস্টবেঙ্গল প্রেসিডেন্ট একাদশ নামে। ইস্টবেঙ্গল ক্লাবের কার্যনির্বাহী কমিটি ৪৮ ঘন্টা সময় দিয়েছিল কোয়েসকে। অর্থাৎ এই সময়ের মধ্যে কোয়েসকে উত্তর দিয়ে জানাতে হবে, সুপার কাপ তারা খেলবে কিনা। সেই সময়সীমা পেরনোর আগেই ক্লাব সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেললো সুপার কাপে যোগ দেওয়া হবে। আইনের বেড়াজালে আটকে গিয়ে কোয়েস ইস্টবেঙ্গল নামে খেলা সম্ভব হচ্ছে না। তাই, বাধ্য হয়ে ইস্টবেঙ্গল প্রেসিডেন্ট নামে সুপার কাপে খেলবে ইস্টবেঙ্গল। সেই সঙ্গে আরও ঠিক হয়েছে, চন্দন দাস ও ফাল্গুনী দত্তকে কোচিংয়ের দায়িত্ব দিয়ে নতুন দল রাতারাতি গড়া হবে। সেই দল যাবে ভুবনেশ্বর খেলতে। নতুন দলের প্র্যাকটিস ডাকা হয়েছে শুক্রবার সকালে।
মজার ঘটনা হল, ক্লাব যখন নতুন দল গড়ে সুপার কাপ খেলার প্রস্তুতি নিচ্ছে তখন কোয়েস কর্তারা জানিয়ে দিল, তারাও শনিবার থেকে প্র্যাকটিসে নামবে। তারাও সুপার কাপ খেলতে প্রস্তুত। কিন্তু ফেডারেশন আলোচনায় বসতে চাইছে না বলে তাদের পক্ষে খেলা সম্ভব হচ্ছে না। তবে, ইস্টবেঙ্গল ক্লাবকে চিঠির উত্তর দিলেন না কোয়েস চেয়ারম্যান আইজ্যাক। তাই ক্লাবের কার্যকরী কমিটির দায়িত্ব দেওয়া ৫ সদস্যর কমিটি ঠিক করল, ‘ইস্টবেঙ্গল প্রেসিডেন্ট একাদশ’ নামে সুপার কাপে খেলবে ক্লাব। নিজেদের মাঠেই দলকে নিয়ে প্র্যাকটিস শুরু করবেন চন্দনরা।
ইস্টবেঙ্গল প্রেসিডেন্ট নামে খেললেও কোয়েস ইস্টবেঙ্গল এফসির কোনও ফুটবলারকেই লাল-হলুদ জার্সি পরে সুপার কাপে খেলাতে পারবে না ইস্টবেঙ্গল ক্লাব। যে কারণে নিজেদের অ্যাকাডেমির ফুটবলার এবং লোনে নেওয়া কিছু ফুটবলারের উপর নির্ভর করেই সুপার কাপে মাঠে নামতে চলেছে ইস্টবেঙ্গল। কিন্তু তাতে কী দল শক্তিশালী হবে? ক্লাবের অন্যতম শীর্ষকর্তা দেবব্রত সরকার বললেন, “হাজার হাজার সমর্থক দাবি করছেন, কোনওভাবেই যেন আমরা সুপার কাপে ওয়াকওভার না দিই। এখানে ফলাফলটা বড় ব্যাপার নয়। অংশগ্রহণটাই বড়।”
ইস্টবেঙ্গল প্রেসিডেন্ট একাদশ নামে খেলা কী সম্ভব? দেবব্রত সরকার বললেন, “অনেক আগে আমরা বরদোলুই এবং ডুরান্ডে ইস্টবেঙ্গল প্রেসিডেন্ট একাদশ নামে খেলেছি। সুপার কাপ আই লিগ এবং আইএসএলের জন্য হলেও নিয়মে রয়েছে, কোনও দলের বদলি হিসেবে বাইরের কোনও দলকে আমন্ত্রন জানানোই যায়।” ফেডারেশন এখন সব দিক খতিয়ে দেখছে, ১১টি হাতে থাকা দলের পাশাপাশি মহামেডান স্পোর্টিং এবং ইস্টবেঙ্গল প্রেসিডেন্ট একাদশ নিয়ে সুপার কাপ করা সম্ভব কী না। তবে কোয়েস থাকাকালীনও যে ভাবে ক্লাব কর্তারা প্রেসিডেন্ট একাদশ নাম দিয়ে আলাদা ফুটবল দল তৈরি করে মাঠে নামতে চাইছে, এরপর কোয়েসের সঙ্গে সম্পর্ক থাকা নিয়ে সংশয় আরও গাঢ় হল। এখন দু’পক্ষই আইনি দিক খতিয়ে দেখছে, কী ভাবে বিচ্ছেদ সম্ভব। কেন না, দিনের পর দিন কোয়েসের পক্ষ থেকে চিঠির কোনও জবাব না আসায় রীতিমতো অপমানিত বোধ করছেন কর্তারা। তাঁদের বক্তব্য, অজিত আইজ্যাক সময়ের অভাবে ক্লাবে এসে মিটিং করতে পারছেন না। অথচ চেন্নাইয়ে জোটের মিটিংয়ে দু’দিন বসে রয়েছেন।
এদিকে ন’দলের আই লিগের জোটে সকালে সই করে বিদ্রোহ প্রকাশ করলেও সন্ধ্যায় সরে দাঁড়াল রিয়েল কাশ্মীর। তারা চিঠি দিয়ে ফেডারেশনকে জানিয়ে দিল, সুপার কাপ খেলতে চায়। একটা দল জোট ভেঙে বেরিয়ে আসতেই আরও দল ভাঙানোর চেষ্টা শুরু করে দিয়েছে ফেডারেশন। অন্যদিকে, আইএসএল খেলা দলগুলো ফেডারেশনকে চিঠি দিয়ে জানতে চাইল সুপার কাপ খেলা হবে কিনা। তাদের জানার পিছনে একটাই কারণ, বিমানের টিকিট বুক করা। ফলে সুপার কাপের ভবিষ্যৎ ৪৮ ঘন্টার মধ্যেই চুড়ান্ত হয়ে যাবে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.