২০১১ সালের সেপ্টেম্বরে লিও মেসির আর্জেন্টিনা খেলতে এসেছিল শহর কলকাতায়। তার ঠিক একবছর পরে আর্জেন্টিনা থেকে ‘সিটি অফ জয়’-এ চলে এসেছিলেন স্যান্টোস নিকোলাস রোমানো পাচেকো। বন্ধুমহলে তিনি নিকো নামেই পরিচিত। কলকাতার সংস্কৃতি, মানুষজনের মুখে বাংলা ভাষা শুনে প্রেমে পড়ে যান এই শহরের। স্থির করেন বাংলা শিখবেন। গত চার বছর ধরে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলা শিখছেন নিকোলাস ও তাঁর স্ত্রী জুলিয়া। আর্জেন্টিনা-ক্রোয়েশিয়া সেমিফাইনালের ফলাফল কী হবে? কেমন খেলবেন লিওনেল মেসি? সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটালকে বাংলায় যা বললেন নিকো…
আমরা সবাই উত্তেজিত। আশা করছি, ক্রোয়েশিয়াকে (Croatia) হারিয়ে আরও একটা বিশ্বকাপের ফাইনালে উঠতে পারবে আর্জেন্টিনা (Argentina)। সেই সম্ভাবনা যথেষ্টই রয়েছে। আর্জেন্টিনা ও ক্রোয়েশিয়া ম্যাচটা যে খুব কঠিন হতে চলেছে, তা বলার আর অপেক্ষা রাখে না। ক্রোয়েশিয়ার মিডফিল্ডাররা খুব ভালো। ওরা খুব ভাল করে ডিফেন্স করে। আক্রমণে যে খুব একটা বেশি যায়, সেটা বলব না। তবে আক্রমণে উঠলে ওরা প্রতিপক্ষের ক্ষতি করতে পারে। এর জন্যই খুব সতর্ক হয়ে খেলতে হবে আর্জেন্টিনাকে। আর্জেন্টিনা বল নিয়ন্ত্রণে রেখে খেলতে পছন্দ করে। বল পজেশন বেশি থাকবে স্কালোনির দলের। কিন্তু ভুল করলে চলবে না। ভুল করলে কাউন্টার অ্যাটাক করতে পারে ক্রোয়েশিয়া। তা থেকে গোল হতে পারে।
দেশ থেকে ফিরেছি তিন-চার দিন হল। কলকাতায় ফেরার পরে অনেকেই প্রশ্ন করছেন, আর্জেন্টিনা কতটা উত্তেজিত? কী বলব বুঝতে পারছি না। দেশের সবাই ফুটছে। আর্জেন্টিনার কাছ থেকে ভাল কিছু আশা করছে দেশের মানুষ। আমরা মনে করি, ব্রাজিলের থেকে অপেক্ষাকৃত কম শক্তিশালী ক্রোয়েশিয়া। কিন্তু ওরাও বড় দল। এই পর্যায়ে এসে প্রত্যেকটা টিমই দারুণ শক্তিশালী। প্রতিটি ম্যাচই কঠিন। ম্যাচ একেবারেই সহজ হবে না। লড়াই করতে হবে।
সেমিফাইনালের আগে আমরা ফাইনালের কথা ভাবছি না। কারণ আগে ক্রোয়েশিয়া-ম্যাচ।পরে ফাইনাল। ফাইনালের কথা যদি আগে ভাবতে বসে প্লেয়াররা, তাহলে হেরেও যেতে পারে। একশো শতাংশ মনোযোগ দিতে হবে সেমিফাইনালে। ক্রোয়েশিয়াকে হারালে তখন ফাইনালের কথা ভাবা যাবে।
মেসিকে (Lionel Messi) নিয়ে জোর চর্চা হচ্ছে। আজ মেসি গোল করতে পারে আবার গোলের পাসও বাড়াতে পারে। টুর্নামেন্ট যত এগোচ্ছে, ততই লড়াই কঠিন হচ্ছে। মেসিকে ঘিরে ধরবে ক্রোয়েশিয়া। ওকে খেলতে দেবে না। একজন নয়, দু’ জন, তিনজন, চারজন মিলে মেসিকে আটকানোর চেষ্টা করা হবে।
একটা জিনিস দেখা গিয়েছে। মেসিকে সবাই যখন ঘিরে ধরে,তখন বাকিরা ফাঁকা জায়গা পেয়ে যায়। তারাও গোল করার জায়গায় পৌঁছে যায়।তারা গোল করে দলকে জেতায়।সেই কারণে আজকের ম্যাচে মেসি খুব গুরুত্বপূর্ণ একজন ফুটবলার।
প্রথম সেমিফাইনালে মাঝমাঠ যার, ম্যাচ তার। ডি’ মারিয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একজন খেলোয়াড়। ক্রোয়েশিয়ার বিরুদ্ধে ডি’ মারিয়া শুরু থেকে হয়তো খেলবে না। পরে নামবে। আর ডি’ মারিয়া নামলে মেসি অনেকটা ফাঁকা জায়গা পেয়ে যায়। আর মারিয়া না খেললে চাপ এসে পড়ে মেসির উপরে। ডি’ মারিয়ার সঙ্গে আমি ম্যাক অ্যালিস্টারের কথাও বলবো। ম্যাক অ্যালিস্টারের বাবা বোকা জুনিয়র্সে মারাদোনার সঙ্গে খেলেছে। আর ছেলে এখন খেলছে মেসির সঙ্গে।
আর্জেন্টিনার অনেকের মধ্যেই সংস্কার রয়েছে। কেউ একা বসে খেলা দেখে। তবে আমি সংস্কারাচ্ছন্ন নই। আমি আমার স্ত্রী জুলিয়া, আমাদের বান্ধবী ভেরোনিকার সঙ্গে খেলা দেখব। আমি মেসি-ভক্ত।
পর পর ফাইনালে হারের পরে মেসিকে নিয়ে প্রবল সমালোচনা শুরু হয়েছিল আর্জেন্টিনায়। কিন্তু কোপা আমেরিকায় ব্রাজিলকে হারানোর পরে মানুষজনের চিন্তাভাবনা বদলে গিয়েছ। মেসি-ময় এখন আর্জেন্টিনা।
আমাকে অনেকেই জিজ্ঞাসা করছেন, খেলা দেখার সময়ে স্পেশ্যাল কিছু খাওয়াদাওয়া সঙ্গে থাকবে কিনা। বিশ্বাস করুন, স্পেশ্যাল কোনও ডিস নেই আজ। ভাল খাওয়াদাওয়া করে কি খেলা দেখা যায় নাকি? মন বলছে আমরা ১-০ গোলে হারাব ক্রোয়েশিয়াকে। গোল করবে ম্যাক অ্যালিস্টার।
মেসিদের জন্য একটা কথাই বলব, ভামোস আর্জেন্টিনা। এগিয়ে চলো আর্জেন্টিনা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.