Advertisement
Advertisement
Qatar World Cup

শুধুই বিতর্ক নয়, উজ্জ্বল ভবিষ্যতের স্বপ্নও দেখাচ্ছে কাতার বিশ্বকাপ!

আগামী এক মাসে জিতবে ফুটবলই, আশা ভক্তদের।

Amidst controversy, here are some plus points of Qatar World Cup | Sangbad Pratidin
Published by: Anwesha Adhikary
  • Posted:November 22, 2022 7:49 pm
  • Updated:November 22, 2022 9:39 pm  

সৌভাগ্য চ্যাটার্জি ও সৌরাংশু: ফুটবলকে বলা হয় সত্যিকারের সর্বজনীন খেলা-আ ট্রুলি গ্লোবাল স্পোর্ট। তা সেক্ষেত্রে একই ধরণের সবকিছু হয় কী করে! সাম্প্রতিক বিতর্ক মদ্যপান নিয়ে। বহুদিনের গড়িমসির পর ফিফা বিশ্বকাপ (Qatar World Cup) শুরুর দিন কয়েক আগে ঘোষণা করেছে যে স্টেডিয়ামে বিয়ার খাওয়া যাবে না। বাডওয়াইজার, যাঁরা বিশ্বকাপের অন্যতম বড় স্পনসর, তারা খেয়েছে বিশাল ঝটকা। আর সেই নিয়ে ক্রীড়ামোদীদের অনুযোগের শেষ নেই।এমন কি আমাদের দেশেও বিতর্কের ঝড় উঠছে। কিন্তু একটা কথা কি আমরা খেয়াল করে দেখেছি? বিশ্বকাপ যদি আমাদের দেশে হত তাহলে আমাদের দেশে কি স্টেডিয়ামে বসে বিয়ার খাবার অনুমতি দিত সরকার?

আরও বিতর্ক উঠেছে সমকামিতা এবং পুলিশ প্রশাসনের কড়াকড়ি নিয়ে। আমাদের দেশেই ক’দিন আগে পর্যন্তও সমকামিতা নিয়ে সরকারিভাবে বেশ নাক শিঁটকানো ছিল না কি? অথবা, খেলা দেখতে যাওয়া দর্শকদের করুণ অবস্থা? বিয়ারের কথা ছেড়ে দিন যুবভারতী বা ইডেন উদ্যানে জলের বোতল, টিফিন বাক্স নিয়ে ঢোকা যায়? আসলে দিবারাত্র ক্লাব ফুটবল বা ইউরোপ অ্যামেরিকা বা লাতিন দেশগুলিতে খেলা দেখতে দেখতে ভুলে যাই যে ফিফার সদস্য দেশের সংখ্যা ২০৯। ভিন্ন ভিন্ন স্থানে ভিন্ন ভিন্ন বিষয় ভিন্ন ভিন্ন সামাজিক ও রাজনৈতিক অবস্থান নেওয়া হয়।

Advertisement

আমরা বরং অন্য কয়েকটা দিক দেখি। এই যে পুলিশি কড়াকড়ি, এতে মূলত ইউরোপীয় দেশগুলির তথাকথিত চরমপন্থী সমর্থকরা, যাদের ফুটবলীয় ভাষায় ‘আল্ট্রাস’ বলা হয়, তাদের হুজ্জুতি কমবে। আর সেটা আর যাই ফুটবলের জন্য সার্বিকভাবে কম মঙ্গলজনক তা বলা যায় না। তবে সমর্থকদের কথাই যখন উঠলো তখন বেশ কয়েকটা অভিযোগ উঠে আসছে ‘ফ্যানজোন’ নিয়ে। ফ্যানজোন, যেখানে যে সমস্ত সমর্থকরা নিজের দেশের খেলা দেখার জন্য টিকিট কেটে উঠতে পারেননি তাঁরা বড় পর্দায় খেলা দেখতে পারবেন। এবং গুরুত্বপূর্ণ হল সেখানে বাডওয়াইজার স্বচ্ছন্দে বিয়ার বিক্রি করতে পারবে। তবে এ সমস্ত অঞ্চলে জলের দাম বা প্রবেশের কড়াকড়ি নাভিশ্বাস উঠিয়ে দিতে পারে।

[আরও পড়ুন: বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচে ষষ্ঠবার হার আর্জেন্টিনার, মারাদোনার সঙ্গে জুড়ল মেসির নাম]

সমস্ত বিতর্ক নিয়েই বিশ্বকাপ শুরুর মাত্র কয়েকঘন্টা আগে ফিফার সভাপতি জিয়ান্নি ইনফান্তিনো যে ভাবে বিস্ফোরক বিবৃতি দিয়েছেন সেটা চমকে দেবার মতো। কাতারের বিশ্বকাপ, গত আটটি বিশ্বকাপ মিলিয়ে যত খরচ হয়েছে তার থেকেও বেশি খরচে আয়োজিত হচ্ছে। কাতার, মূলত একটি নগর রাষ্ট্র, যা দোহাকে ঘিরেই গড়ে উঠেছে। কাতারের মানবাধিকার ইস্যু, কাতারের পরিযায়ী শ্রমিকদের অধিকার খর্বের প্রচেষ্টা, শ্রমিক মৃত্যু, চড়া মূল্য এগুলো যেমন সত্যি, যেমন সত্যি যে ২০১০এ কাতারকে বিশ্বকাপ আয়োজক হিসাবে নির্ধারণ করা ফিফার কার্যনির্বাহী কমিটির ১৫জনের মধ্যে ১০জনকেই বিভিন্ন সময়ে দুর্নীতির অভিযোগে বহিষ্কার করা হয়েছে, তেমনই সত্যি যে এই বিশ্বকাপ আগের সমস্ত বিশ্বকাপের থেকে আলাদা। সময়ের দিক থেকে, ব্যবহারিক দিক থেকে এবং সংস্কৃতির দিক থেকে।

কাতারের বিশ্বকাপ পাওয়া নিয়ে প্রশ্নচিহ্ন থেকেই যায়, কিন্তু এটাও সত্যি যে বিশ্বকাপ প্রথমবারের জন্য পৃথিবীর এই অঞ্চলে হচ্ছে এবং সেই কারণে অনেক রকম পরিবর্তনের মধ্যে দিয়ে যেতে হচ্ছে প্রত্যেককেই। এর আগে উত্তর বা দক্ষিণ অ্যামেরিকায় বিশ্বকাপ হলে আমাদের মধ্য থেকে উত্তর রাত পর্যন্ত খেলা দেখতে হয়েছে। জাপান-কোরিয়ায় যখন হয়েছে তখন আবার স্কুল কলেজ বন্ধ হয়নি আমাদের দেশে। প্রত্যেকটি অবস্থার সঙ্গে মানিয়ে নিয়ে ফুটবলপ্রেমীরা খেলায় মনোনিবেশ করেছে, বিশ্বকাপ ফুটবল দেখে দুঃখ-আনন্দ-হতাশা-উচ্ছ্বাস অনুভব করেছে। কাতারের ক্ষেত্রেও হবে। ফুটবলটা শুরু হয়ে গেছে, এখন দুপুর গড়িয়ে বিকেলের দিকে যেতে শুরু করলেই দেখবেন সবাই ফুটবল নিয়েই কথা বলছে।

এই যে প্রথম ম্যাচেই ভিএআর নিয়ে প্রশ্ন উঠল, কিন্তু বিতর্ক হল না, এটা একটা ভালো দিক। ঠিক যেমন পাঁচজন পরিবর্তের কারণে এই বিশ্বকাপে খেলার মাঝেই কোচেদের ট্যাক্টিকাল লড়াই আরও ক্ষুরধার রূপ পাবে। ফুটবল আসলে সবাইকে মিলিয়ে দেবার খেলা, আর বিশ্বকাপ হল সবথেকে বড় মিলনস্থল। বিতর্ক পেরিয়ে আশা করছি আগামী এক মাসে ফুটবলই বিজয়ী হবে শেষপর্যন্ত। কী বলেন?

[আরও পড়ুন:মেসির আটকে যাওয়া নাকি রক্ষণের দুর্বলতা, কেন হারল আর্জেন্টিনা? রইল ৫ কারণ]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement