সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ডুরান্ড কাপ ফাইনাল হল সাতদিন হয়ে গেল। কিন্তু ভারতীয় ফুটবলপ্রেমীদের মনের কোনে একটা প্রশ্নএখনও উঁকি ঝুঁকি মারছে। ফেডারেশন অনুমোদিত ডুরান্ড কাপের (Durand Cup) ফাইনাল হল কলকাতার যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে। অথচ ফাইনালে প্রাইজ দেওয়ার সময় খোদ ফেডারেশন সভাপতি কল্যাণ চৌবেকেই (Kalyan Chaubey) দেখা গেল না? তিনি যে বহু দূরে ছিলেন এরকমও নয়। যুবভারতী থেকে ঢিল ছোঁড়া দূরত্বে পাঁচাতারা হোটেলে ফেডারেশনের কার্যকরী কমিটির অন্যান্য সদস্যদের সঙ্গেই বসে ছিলেন তিনি। তাহলে কেন এলেন না ডুরান্ড ফাইনালে সদ্য নির্বাচিত ফেডারেশন সভাপতি (AIFF President)? যেখানে প্রতিযোগিতা হচ্ছে খোদ ফেডারেশনের অনুমোদন নিয়ে?
খোঁজ খবর নিতে অবশ্য অন্য গল্প বেরিয়ে আসছে। ১৮ সেপ্টেম্বর বেঙ্গালুরু বনাম মুম্বইয়ের ডুরান্ড ফাইনালে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যপাল লা গনেশন। রাজ্যের ক্রীড়ামন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস। কিন্তু ফেডারেশন সভাপতি কোথায় গেলেন? অনেকে বলছিলেন, ডুরান্ড ফাইনালে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি ফেডারেশন সভাপতিকে। অনেকে বলছেন, ফেডারেশনের অন্যান্য ব্যক্তিদের ফাইনালের ভিভিআইপি টিকিট দেওয়া হয়নি। কিন্তু আসল সত্যটা কী?
ডুরান্ড সেনাবাহিনীর প্রতিযোগিতা হলেও, ফেডারেশন অনুমোদিত প্রতিযোগিতা। সেখানে ফেডারেশন সভাপতিকেই আমন্ত্রন জানানো হবে না, এই ব্যাপারটিও কারও হজম হচ্ছে না। তাহলে কেন ডুরান্ড ফাইনালের দিন স্টেডিয়াম থেকে ঢিল ছোঁড়া দূরত্বে হায়াত রিজেন্সিতে ফেডারেশনের সভাপারিষদদের নিয়ে বসে রইলেন কল্যাণ চৌবে?
খোঁজ-খবর করে যা জানা যাচ্ছে, তাতে গল্পটা অন্য রকম। এবার ডুরান্ড আয়োজনের জন্য যেভাবে রাজ্য সরকার বিশেষ করে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় উদ্যোগী হয়েছিলেন, তাতে ডুরান্ড কর্তৃপক্ষ ভীষণই খুশি। মুখ্যমন্ত্রীর উদ্যোগে রাজ্যের ক্রীড়ামন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস শুরু থেকে ডুরান্ডকে সফল করার জন্য বিশেষভাবে উদ্যোগী হয়ে উঠেছিলেন। ফিফার নির্বাসনের খাঁড়া নেমে আসায় ভারতীয় ফুটবল ঘিরে তখন অন্ধকার নেমে এসেছে। ডুরান্ড কর্তৃপক্ষও তখন বুঝে উঠতে পারছিলেন না কীভাবে প্রতিযোগিতার আয়োজন হবে। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে তখন সিওএ-রা চালাচ্ছেন ফুটবল ফেডারেশন।
সুনন্দ ধর ছিলেন ফেডারেশনের কার্যকরী সচিব। তিনিই ফেডারেশনের তরফে পুরোটা দেখাশোনা করছিলেন। আর কলকাতায় ম্যাচ আয়োজনের জন্য রাজ্যের ক্রীড়ামন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস। রাজ্য সরকারের তরফে ফুটবলের আয়োজনের এই প্রচষ্টা দেখে অভিভূত হয়ে যান সেনা কর্তারা। ফলে যেদিন ডুরান্ড ফাইনাল হয়, সংগঠকদের তরফ থেকে ফেডারেশনের ডেপুটি সেক্রেটারি জেনারেল সুনন্দ ধরকে জানানো হয়, ডুরান্ড ফাইনালে চ্যাম্পিয়নের প্রাইজ দেবেন রাজ্যের ক্রীড়ামন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস।
সেক্ষেত্রে ফেডারেশন প্রেসিডেন্ট কল্যাণ চৌবে ট্রফি তুলে দেবেন রানার্স দলের হাতে। ডুরান্ড কর্তৃপক্ষর বার্তা ফেডারশন সভাপতিকে পৌঁছে দেন সুনন্দ ধর। তিনি ফেডারেশন সভাপতি। ডুরান্ড ফেডারেশন অনুমোদিত প্রতিযোগিতা। অথচ তাঁকে বলা হচ্ছে ডুরান্ডের রানার্স ট্রফি দেওয়ার জন্য। এটা ভালভাবে নিতে পারেননি কল্যাণ। আর সেই কারণেই ডুরান্ড ফাইনাল চলাকালীন যুবভারতীতে না গিয়ে স্টেডিয়ামের পাশেই হায়াত রিজেন্সিতে বসে থাকেন কল্যাণ চৌবে। আর ফেডারেশন অনুমোদিত প্রতিযোগিতার ফাইনালের মঞ্চে খোদ ফেডারেশন সভাপতিকে না দেখে, অবাক হয়ে যান সবাই। যা এখন বাংলার ফুটবলে রীতিমতো আলোচনার বিষয়।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.