দুলাল দে: গ্রুপের শেষ ম্যাচে মালদ্বীপের মাজিয়ার (Maziya FC) বিরুদ্ধে জিতে পরের রাউন্ডে যাওয়ার জন্য সবদিক থেকে প্রস্তুত রয় কৃষ্ণরা। কিন্তু গ্রুপের পরিস্থিতি এখন এমন জায়গায় গিয়ে পৌঁছেছে যে, নিজেদের প্রস্তুতির চূড়ান্ত জায়গায় রেখেও পরের রাউন্ডে যাওয়ার জন্য তাকিয়ে থাকতে হবে গোকুলাম-বসুন্ধরা ম্যাচের দিকে। যা শুরু হবে বিকেল সাড়ে চারটেয়। মঙ্গলবার একই দিনে রাত সাড়ে আটটায় মোহনবাগানের ম্যাচ মাজিয়ার বিরুদ্ধে। কিন্তু প্রথম ম্যাচে কোনওভাবে গোকুলাম যদি বসুন্ধরাকে (Bashundhara kIngs) হারিয়ে দেয়, তাহলে মাজিয়ার বিরুদ্ধে মোহনবাগানের ম্যাচটা হয়ে দাঁড়াবে স্রেফ নিয়ম রক্ষার।
পরের রাউন্ডে যাওয়ার জন্য মোহনবাগানের সামনে অঙ্ক হল, যদি প্রথম ম্যাচে গোকুলাম আর বসুন্ধরা ড্র খেলে, তাহলে শেষ ম্যাচে মাজিয়ার বিরুদ্ধে ড্র করলেই গোল পার্থক্যে পরের রাউন্ডে সবুজ-মেরুন। আর প্রথম ম্যাচে বসুন্ধরা যদি গোকুলামকে (Gokulam FC) হারিয়ে দেয়, তাহলে মাজিয়ার বিরুদ্ধে জিততেই হবে মোহনবাগানকে। ফলে ম্যাচ সাড়ে আটটায় হলেও, মোহনবাগান (Mohun Bagan) ফুটবলারদের মানসিক ভাবে ম্যাচ খেলা কিন্তু শুরু হয়ে যাবে বিকেল সাড়ে চারেটেতে।
গ্রুপ লিগের প্রথম ম্যাচে যে দলটা গোকুলামের কাছে চার গোল খেল, সেই দলটাই পরের ম্যাচে বসুন্ধরাকে চার গোল দিল। কোনও এক আশ্চর্য ম্যাজিক দণ্ডের ছোঁয়ায় আমূল বদলে গেল পুরো দলটা। মোহনবাগান কোচ জুয়ান ফেরান্দো অবশ্য ড্রেসিংরুমের এই বদলে যাওয়ার পিছনে কোনও জাদুদণ্ড নয়, বরং কিছু টেকনিক্যাল কারণের কথাই বলছেন। “প্রথম ম্যাচ হেরে যাওয়ার পর দলের সবাইকে বলি, দ্রুত গোকুলাম ম্যাচের ঘটনা ভুলে যেতে। সবাই যদি গোকুলাম ম্যাচের হারের কারণ খুঁজতেই ব্যস্ত থাকত, তাহলে ফুটবলারদের মধ্যে হতাশা আসতই। আর তার প্রভাব পড়ত বসুন্ধরা ম্যাচে। দ্বিতীয় ম্যাচ খেলতে নামার আগে চেয়েছিলাম, ফুটবলাররা শুধুই সামনের দিকে তাকাক। কারণ, জানতাম বসুন্ধরা ম্যাচটা জিততে গেলে, ফুটবলারদের শুধু জেতার কথা ভাবতে হবে। আর তার ফল আমরা হাতে হাতে পেয়েছি।”
মঙ্গলবার একই দিনে দু’টো ম্যাচ হলেও, ম্যাচ শুরু হবে ভিন্ন ভিন্ন সময়ে। তা নিয়ে বাংলাদেশের বসুন্ধরা কিংসের কোচ অস্কার ব্রুজো অল্প বিস্তর অভিযোগও শুনিয়ে গেলেন। “দুটো ম্যাচই যখন গুরুত্বপূর্ণ, তখন একসঙ্গে শুরু হবে না কেন?” অস্কার ব্রুজোর এই অভিযোগকে অবশ্য পাত্তা দিলেন না ফেরান্দো (Juan ferrando)। এসব নিয়ে আলোচনা না করে বরং প্রতিপক্ষ মাজিয়া এফসি সম্পর্কে বললেন, “ওদের খেলা দেখেছি। যথেষ্ট ভাল দল। তবে পরের রাউন্ডে যাওয়ার জন্য ম্যাচটা জেতা ছাড়া আমরা অন্য কিছুই ভাবছি না।”
গোকুলামের বিরুদ্ধে রিজার্ভে থাকলেও সন্দেশকে ম্যাচে খেলাননি মোহনবাগান কোচ। আবার সেই সন্দেশই বসুন্ধরা ম্যাচে নেমে ডিফেন্সকে ভরসা দিলেন। প্রথম ম্যাচে সন্দেশকে না খেলানোর জন্য ফেরান্দোর ব্যাখা হল, “আমাকে প্রতি ম্যাচে প্রতিপক্ষ দেখে দল তৈরি করতে হয়। গোকুলাম ম্যাচে যেভাবে খেলতে চাইছিলাম, তাতে সন্দেশকে ভাবনায় ছিল না। কিন্তু বসুন্ধরার বিরুদ্ধে যেভাবে ডিফেন্স সাজাতে চেয়েছি, তাতে সন্দেশ ছিল অটোমেটিক চয়েস।” দলের অধিনায়ক প্রীতম কোটাল তিরি (Tiri) এবং সন্দেশের সঙ্গে অনেকদিন ধরে খেললেও সন্দেশ প্রসঙ্গে বলছিলেন, “২০১৪থেকে সন্দেশের সঙ্গে খেলছি। ওর সঙ্গে খেলতে খেলতে বোঝাপড়া এখন এমন জায়গায় চলে গেছে, ও ডানদিক বললে কিছু না ভেবে চলে যাই। তিরির সঙ্গেও আমার দারুণ বোঝাপড়া।” মঙ্গলবারের মাজিয়া ম্যাচ নিয়ে প্রীতমের ব্যাখ্যা হল, “ওদের বেশ কিছু ফুটবলারের বিরুদ্ধে অনেকদিন ধরেই খেলছি। চেনা প্রতিপক্ষ বলে কোনও অসুবিধা হবে না।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.