দুলাল দে: তিনি সাংবাদিক সম্মেলনে এলেন না। কিন্তু বিকেলে বাঁশি হাতে নেমে পড়লেন কম্বোডিয়ার অনুশীলনে। তিনি আর কেউ নন, জাপানের প্রাক্তন বিশ্বকাপার, এসি মিলানে খেলা অ্যাটাকিং মিডফিন্ডার হন্ডা। এশিয়ান কাপের কোয়ালিফাইং রাউন্ডের প্রথম ম্যাচে সুনীলদের আটকানোর স্ট্র্যাটেজি এখন সেই হন্ডার হাতে।
Getting ready for tonight’s encounter 😁#INDCAM ⚔️ #AsianCup2023 🏆 #BackTheBlue 💙 #BlueTigers 🐯 #IndianFootball ⚽ pic.twitter.com/hqdtYnpShk
— Indian Football Team (@IndianFootball) June 8, 2022
ধারেভারে সুনীলদের থেকে অনেকটাই পিছিয়ে কম্বোডিয়া। তবুও গ্রুপের এই ম্যাচটাকেই ফাইনাল ম্যাচ বলছেন ভারতীয় দলের অধিনায়ক সুনীল ছেত্রী (Sunil Chetri)। এর একটাই কারণ, চার দলের গ্রুপে প্রথম ম্যাচে জিততে না পারলে, গ্রুপের শীর্ষস্থান পাওয়াটা শুধু কঠিনই হবে না, কঠিনতম কাজ হবে। তবে ফিফা (FIFA) র্যাঙ্কিংয়ে দু’দলের এই বিশাল পার্থক্যটা একদম মাথাতেই রাখতে চাইছেন না ভারতীয় দলের কোচ ইগর স্টিমাচ। এদিন সাংবাদিক সম্মেলনে বলছিলেন, “র্যাঙ্কিংয়ের পার্থক্যটা একদমই বড় ব্যাপার নয়। তাতে শক্তির দিক থেকে দু’দলের মধ্যে খুব একটা পার্থক্য থাকে না। সামান্য একটা ভুলে ফলাফল অন্যরকম হয়ে যেতে পারে। তাই এরকম ম্যাচে শুরুতেই গোল করে নিতে হবে। গোল পেতে দেরি হলেই ফুটবলাররা স্নায়ুর চাপে ভুগতে থাকে।” এদিন স্পষ্টভাবেই জানিয়ে দিয়েছেন, চোটের জন্য রাহুল ভেকেকে (Rahul Bheke) কম্বোডিয়া ম্যাচে পাওয়া যাবে না। “চোটের জন্য শেষ ১১দিন দলের সঙ্গে অনুশীলন করতে পারেনি রাহুল।” কিন্তু দীপক টাঙরি আর হরমোনজোৎ খাবরাকে কম্বোডিয়া ম্যাচে দলের বাইরে রাখা হয়েছে পারফরম্যান্সের জন্য।
এছাড়া দল মোটামুটি ভাবে তৈরি এশিয়ান কাপের (Asian Cup) কোয়ালিফাইং রাউন্ডের অভিযান শুরুর জন্য। এশিয়ান কাপের মূলপর্বে যাওয়ার জন্য ফেডারেশন যে কতটা গুরুত্ব দিচ্ছে তা প্রমাণিত হয়ে যাবে একটি মাত্র তথ্যে। কোয়ালিফাইং রাউন্ড খেলার জন্য প্রায় ৪৫ দিন জাতীয় শিবির করার সুযোগ পেয়েছেন কোচ ইগর স্টিমাচ (Igar Stimac)। ইদানিংকালে যে সময়টা যে কোনও জাতীয় কোচের কাছেই প্রায় স্বপ্নের মতো। ফলে এদিন সাংবাদিক সম্মেলনে স্টিমাচ বলছিলেন, “আমরা তৈরি। বাকিটা মাঠে দেখা যাবে।”
কলকাতায় পা দিয়ে জাতীয় অধিনায়ক সুনীল ছেত্রী শুনেছিলেন, মাঠে মাত্র পনেরো হাজার দর্শক প্রবেশের অনুমতি পাবেন। কলকাতায় এরকমটা হবে জেনে কিছুটা বিস্মিতই হয়েছিলেন তিনি। পরে অবশ্য পরিস্থিতি পুরোটাই পালটে যায়। যুবভারতীতে ৫০ হাজার দর্শকের উপস্থিতির অনুমতি দেওয়া হয়েছে। ৫০ হাজার দর্শকের অনুমতি হয়তো মিলল। কিন্তু শেষ মুহূর্তে এই অনুমতি আসায় শেষ পর্যন্ত সাধারণ দর্শকদের হাতে সেই টিকিট পৌঁছবে কি না, সেটাই ঘোর সন্দেহ।
The last training session for the #BlueTigers 🐯 before they face off against Cambodia 🇰🇭#BackTheBlue 💙 #IndianFootball ⚽ pic.twitter.com/FiSch8Ifgy
— Indian Football Team (@IndianFootball) June 7, 2022
ফেডারেশনের (AIFF) পক্ষ থেকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, ৫০ হাজার টিকিটই বিনামূল্যে দেওয়া হবে। অথচ আজ দুপুরে স্টেডিয়ামের টিকিট কাউন্টারে গিয়েও টিকিট পাননি ফুটবল সমর্থকরা। পরিস্থিতি ঘিরে উত্তেজনা তৈরি হলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে হস্তক্ষেপ করতে হয় পুলিশকে। ক্লাবগুলিকে দেওয়ার জন্য আইএফএর (IFA) প্রাপ্য টিকিটও আসে মঙ্গলবার রাতের দিকে। ফলে নতুন করে ছেপে আসা ৩৫ হাজার টিকিট কীভাবে দর্শকরা পাবেন, কেউ জানেন না। তবে স্টেডিয়ামে দর্শক সংখ্যাবৃদ্ধি পাওয়ায় স্বাভাবিকভাবেই খুশি কোচ ইগর স্টিমাচ। বলছিলেন, “দর্শকপূর্ণ গ্যালারি আমাদের ভাল খেলার জন্য আরও বেশি করে সাহায্য করবে।” একই মত দলের তারকা ফুটবলার সন্দেশ জিঙ্ঘানেরও। “ফুটবলাররা সব সময় দর্শকভরতি স্টেডিয়ামেই খেলতে চায়। অতিরিক্ত দর্শক এলে তা আমাদের জন্যই ভাল হবে,” বলেছেন তিনি।
স্টপারে সন্দেশের সঙ্গী কে হবেন, এদিন অনুশীলনেও তা চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি। সন্দেশের সঙ্গে কখনও খেলানো হয়েছে প্রীতমকে (Pritam Kotal)। কখনও শুভাশিস বসুকে। তবে ইগর বললেন, “যারাই খেলুক, শুরু থেকেই আমরা প্রেসিং ফুটবল খেলে ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নিতে চাই। এটুকু বলতে চাই, কম্বোডিয়া ম্যাচ খেলার জন্য আমরা সবদিক থেকে তৈরি।” আর সন্দেশ (Sandesh Jinghan) বলছেন, “ভারতীয় দল প্রতিটা এশিয়ান কাপ খেলবে, এটা ভারতীয় ফুটবলের নিয়ম হয়ে যাওয়া উচিত। আমরা যখনই এরকম কোয়ালিফাইং রাউন্ডের ম্যাচে মাঠে নামব, সবার মাথায় একটাই ভাবনা থাকা উচিত, এশিয়ান কাপের মূলপর্বে খেলার জন্যই আমরা মাঠে নামছি।”
এশিয়ান কাপের কোয়ালিফাইং রাউন্ড (Asian Cup Qualifying) খেলার আগে বাহরিন, বেলারুশ, জর্ডনের মতো দলগুলির বিরুদ্ধে ম্যাচ খেলার সুযোগ পেয়েছে ভারতীয় দল (Indian Football Team)। কাম্বোডিয়ার থেকে যারা প্রত্যেকেই অনেকটা এগিয়ে। ইগর বলছিলেন, “এই দলগুলি টেকনিক্যালি আমাদের থেকে অনেকটা এগিয়ে থাকলেও, আমরা কিন্তু গোল করার সুযোগ পেয়েছি। তবে বুধবার কম্বোডিয়ার বিরুদ্ধে কে গোল করবে, সেটা আমার জন্য গুরুত্বপূর্ণ নয়। প্রথম ম্যাচে ভারতীয় দল জিততে পারছে কি না, সেটাই গুরুত্বপূর্ণ।” কিন্তু উলটোদিকে না থেকেও আছে হন্ডার মস্তিষ্ক। সেটাই যা চিন্তার।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.