Advertisement
Advertisement

আজ বিশ্বকাপের এল ক্লাসিকো, নজর কাড়বে দুই কোচের দর্শন যুদ্ধ

বিশ্বকাপের হালহকিকত জানাতে কলম ধরছেন সম্পাদক সৃঞ্জয় বোস।

Football World Cup: Belgium Vs France match is all about coaches' duel
Published by: Sangbad Pratidin Digital
  • Posted:July 10, 2018 11:22 am
  • Updated:July 10, 2018 11:22 am  

সৃঞ্জয় বোস,রাশিয়া: পিটার অ্যান্ড পল এমবাঙ্কমেন্ট। পৎসেলুয়েভ ব্রিজ। সামার গার্ডেন। উইন্টার প্লেস চ্যানেল। কাজানকে যেমন রাশিয়ার স্পোর্টিং ক্যাপিটাল বলে। তেমনই সেন্ট পিটার্সবার্গ শহরের নিজস্ব এক পরিচয়পত্র আছে। মোস্ট রোম্যান্টিক সিটি অব রাশিয়া। প্রেমের শহর, প্রেমে পড়ার শহর। পিটার অ্যান্ড পল এমবাঙ্কমেন্টে উঠে সূর্যাস্ত না দেখলে বলা হয়, জীবন নাকি অপূর্ণ থেকে যাবে। সামার গার্ডেন রাশিয়ার বিখ্যাত সাহিত্যিক, কবিদের অনুপ্রেরণা জুগিয়ে গিয়েছে চিরকাল। উইন্টার প্লেস চ্যানেল আবার ময়কা আর নেভা  দুই নদীর মোহনা। যা মাত্র ২২৮ মিটার লম্বা, কিন্তু পরের পর ব্রিজ। উইন্টার প্লেস চ্যানেলের সবচেয়ে বড় আকর্ষণ তার দৃশ্যপট। পুরনো দিনের বাড়ি, হার্মিটেজ থিয়েটার আর প্যালেস স্কোয়ার মিলে মায়াবী পরিবেশ সৃষ্টি করে। শোনা গেল, প্রেমের গ্রন্থিতে আবদ্ধ তরুণ-তরুণীদের নাকি সবচেয়ে টানে পৎসেলুয়েভ ব্রিজ। রুশিরা বিশ্বাস করে, পৎসেলুয়েভ ব্রিজে গিয়ে চুম্বন করলে সম্পর্ক আরও দৃঢ় হয়।

[ব্রাজিল টিম বাসে ডিম ও পাথর ছোঁড়ার ভিডিও ভাইরাল, সত্যিটা জানেন?]

সেন্ট পিটার্সবার্গ স্টেডিয়ামে মঙ্গলবার যে দু’টো টিম বিশ্বকাপ সেমিফাইনাল খেলতে নামছে, তাদের প্রেমিক-প্রেমিকা বললে অত্যুক্তি হয় না!  ফ্রান্স-বেলজিয়াম সম্পর্ক ঠিক এতটাই ভাল। কূটনৈতিক সম্পর্কের কথা বলছি। বেলজিয়ানরা এমনিতে ডাচ-ভাষী। কিন্তু দেশটার দাক্ষিণাত্যে ওয়ালোনিয়া বলে জায়গাটা আছে, যারা ফরাসিতে কথা বলে! তাও বেলজিয়ান জনসংখ্যায় ওয়ালোনিয়ার তেমন প্রভাব না থাকলে একটা ব্যাপার ছিল। কিন্তু বেলজিয়াম জনসংখ্যার পঞ্চান্ন শতাংশই থাকে ওয়ালোনিয়ায়। অদ্ভুত, তাই না? দাঁড়ান, অদ্ভুত ব্যাপারস্যাপার আরও আছে। বেলজিয়ামের এক নম্বর অস্ত্র এডেন হ্যাজার্ড ছোটবেলায় ফ্রান্সকেই সমর্থন করতেন! দেখলাম, গতকাল এক চ্যানেল সাক্ষাৎকারে বেলজিয়াম উইঙ্গার বলেছেন, আটানব্বইয়ে ফ্রান্সের বিশ্বজয়ই তাঁকে ফুটবলার হওয়ার অনুপ্রেরণা দিয়েছিল। জিনেদিন জিদানের ভক্ত ছিলেন। জিদানের একটা জার্সি ছিল বাড়িতে। সেটাকেই হ্যাজার্ড-ভাইরা ভাগাভাগি করে পরতেন!

Advertisement

[শুধু ফুটবলের জন্য… পুতিনের ঘরেই এক হল ভারত-পাকিস্তান]

এত পর্যন্ত পড়লে মনে হবে, বিশ্বকাপ সেমিফাইনাল ঘিরে হানাহানির স্ফুলিঙ্গ আবহে থাকল কোথায়? পুরোটাই তো  ফ্রান্স-বেলজিয়ামের সুখের ছবি। সম্প্রীতির ছবি। দু’টো টিমের খেলার স্টাইল এক। এমনকী শেষ তিন সাক্ষাতের রেজাল্টও দু’দেশের কূটনৈতিক সম্পর্কের যথার্থ প্রতিবিম্ব- ড্র! কেউ হারেনি। কেউ জেতেনি। কিন্তু তার পরেও মঙ্গলবারের মতো সেন্ট পিটার্সবার্গে দু’টি দেশের পথ দু’টি দিকে বেঁকে যাচ্ছে। বিশ্বকাপ ফাইনাল খেলার অভিলাষে তো বটেই। তার চেয়েও বেশি বোধহয় দু’দেশের কোচদের ফুটবল-দর্শনে। দিদিয়ের দেশঁ এবং রবার্তো মার্টিনেজের ফুটবল দর্শন যে একেবারে মেলে না! ফ্রান্স—বেলজিয়াম সম্পর্কের যা সম্পূর্ণ পরিপন্থী। ফ্রান্সের দেশঁ যে কোনও মূল্যে ম্যাচ জিততে চান। ফুটবল-জীবনে একটা সময় জুভেন্তাসে খেলতেন দেশঁ। জুভেতে একটা কথা খুব চলে- জেতাটা গুরুত্বপূর্ণ নয়, আবার জেতাটাই সব! কাপ-সেমিফাইনাল যুদ্ধের আগে বিশ্ব ফুটবল-সমাজ বলছে,  জ্ঞানত হোক কিংবা অজান্তে, কোচ দেশঁর তন্ত্রীতে ব্যাপারটা ঢুকে গিয়েছে। তাঁর মতে, চোখের পক্ষে আরামদায়ক ফুটবল না খেললেও চলবে। কিন্তু জিতে ফেরো। বেলজিয়ামের মার্টিনেজ আবার পুরো উল্টো। মার্টিনেজ নিজে ক্যাটালান। ছোট থেকে তাঁর মজ্জায় স্প্যানিশ ফুটবলের সংস্কৃতি। যে সংস্কৃতি বল পজেশন রাখার। বিপক্ষকে প্রেস করার। জিতলে শুধু হবে না। ভাল খেলে জেতাটাও সমান জরুরি।

[‘লেডিলাক’-এর অনুপস্থিতিতেই হার? রাশিয়া ম্যাচে দেখাই গেল না হটেস্ট ফ্যানকে]

আজকের সেন্ট পিটার্সবার্গে যে দুইয়ের দেখা হচ্ছে। দেশঁর হাতে থাকবে আতোঁয়া গ্রিজম্যান, পল পোগবা, কিলিয়ান এমবাপেদের রিমোট। মার্টিনেজ আবার চালাবেন রোমেলু লুকাকু, এডেন হ্যাজার্ড, কেভিন দে’ব্রুইনদের। আপাত দৃষ্টিতে উপরের নামগুলো অত্যন্ত লোভনীয়। মারমার-কাটকাট এক বিশ্বকাপ।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement