ফ্রান্স: ৪ (মান্ডজুকিচ-আত্মঘাতী, গ্রিজম্যান-পেনাল্টি, পোগবা, এমবাপে)
ক্রোয়েশিয়া: ২ (পেরিসিচ, মান্ডজুকিচ)
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ব্রাজিল, আর্জেন্টিনা, জার্মানির মতো বড় বড় নাম ছিল না ঠিকই। থাকলে ফাইনালের লড়াই কেমন হতো, তা অজানা। কিন্তু সুপার সানডেতে লুঝনিকি যে অসম্ভব উত্তেজনা, দম বন্ধ করা উদ্বেগ আর অবিশ্বাস্য পারফরম্যান্সের সাক্ষী থাকল, তা অবিস্মরণীয়। মহারণের গল্পে পরতে পরতে ছিল রোমাঞ্চ। আত্মঘাতী গোল, পেনাল্টি গোল, ‘কমেডি গোল’ কী ছিল না! আর সেই সাম্রাজ্য বিস্তারের গল্পের রাজা হল ফ্রান্স। বিশ্বকাপের অন্যতম ফেভরিট হিসেবে যে সোনালি সফরের সূচনা করেছিলেন গ্রিজম্যানরা, তার ক্লাইম্যাক্সও লেখা হল স্বর্ণাক্ষরে।
বেলজিয়ামকে হারিয়ে সেমিফাইনাল জয়ই ইঙ্গিত দিয়েছিল, এ দল অপ্রতিরোধ্য। ফরাসি বিপ্লব ঘটিয়েই দম নেবে। এমবাপে, গ্রিজম্যানরা এদিন ফেরালেন ১৯৯৮ বিশ্বকাপের সেই ইতিহাসকে। যেদিন প্রথমবার ব্রাজিলকে মাটি ধরিয়ে বিশ্বকাপ ট্রফি হাতে তুলেছিলেন জিনেদিন জিদানরা। না, আর কোনও অঘটন নয়। ঘটনাবহুল বিশ্বকাপের হ্যাপি এন্ডিং হল হাফ ডজন গোল আর ফেভরিটের জয় দিয়েই।
⭐⭐#FRA
France have won the 2018 FIFA #WorldCup in Moscow! #FRACRO // #WorldCupFinal pic.twitter.com/fZhmJmxjVh
— FIFA World Cup (@FIFAWorldCup) July 15, 2018
বিশ্বকাপের ইতিহাসে যা কখনও হয়নি, রবিবাসীয় লুঝনিকি সাক্ষী থাকল সেই দৃশ্যের। ফাইনালের মঞ্চে আত্মঘাতী গোল। একটা আত্মঘাতী গোলই থামিয়ে দিয়েছিল ব্রাজিলের বিজয়রথ। একটা আত্মঘাতী গোল আয়োজক দেশের বিদায় নিশ্চিত করে দিয়েছিল। আর ইতিহাসের দোরগোড়ায় দাঁড়িয়ে সেই আত্মঘাতী গোলেই মৃত্যু হল ক্রোয়েশিয়ার রূপকথার সফরের। মান্ডজুকিচ বুঝতেও পারেননি তাঁর মাথা ছুঁয়ে যাওয়া বলটাতেই বিদায়ের গাঁথা লেখা হয়ে যাবে। চলতি বিশ্বকাপে একডজন আত্মঘাতী গোলের নজির তৈরি হল। কিন্তু একটা ভুল হলেও যে মেনে নেওয়া যেত। প্রথমার্ধেই যে আরও একটা বড় বিপর্যয় ঘটালেন পেরিসিচ। বক্সের ভিতর হ্যান্ডবল করে বসলেন। সেই ঘটনার খানিক আগেই তাঁর বাঁ-পায়ের দুর্দান্ত শটে যে গোলটা সমতায় ফিরিয়ে ছিল, তখন তা একেবারে ফিকে। কারণ তাঁর সেই ভুলই দালিচের রক্তক্ষয়ী সফরে ইতি টেনে দিল। ৪২ লক্ষের দেশে স্বপ্ন ভেঙে চুরমার হল। সোনার পরিকে খাঁচা বন্দি করতে পারলেন না দালিচ। আর ক্রোয়েশিয়ার গ্রহণের দিন পূর্ণিমার চাঁদের মতো ফ্রান্সের আকাশে উজ্জ্বল হয়ে উঠল একটা নাম। তিনি দিদিয়ের দেশঁ। ব্রাজিলিয়ান মারিও জাগালো এবং জার্মান কিংবদন্তি বেকেনবাওয়ারের পর ফুটবলার ও কোচ হিসেবে দলকে ট্রফি জয়ের স্বাদ দিলেন দেশঁ। তাঁর মগজাস্ত্রেই প্যারিসে আজ অকাল দীপাবলি।
প্রথমার্ধে দলের তরুণ তুরুপের দাসকে লুকিয়ে রেখেছিলেন দেশঁ। দ্বিতীয়ার্ধে ঝলসে উঠলেন তিনি। এমবাপের গোলেই দ্বিতীয়বার বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হওয়া নিশ্চিত হল ফ্রান্সের। গোটা টুর্নামেন্টে রাজার মতো দাপিয়ে খেললেন এই তরুণ তুর্কি। তার আগে আরও একটা গোল করে ব্যবধান বাড়িয়ে দিয়েছিলেন পোগবা। ফাইনালে এরপর শিরদাঁড়া সোজা রেখে খেলা মুখের কথা নয়। তারপরেও যে মান্ডজুচিক একটি গোল শোধ করেছিলেন, এও তো ক্রোটদের বড় পাওনা। অদ্ভুত, যে পেরিসিচ ও মান্ডজুকিচ ফাইনালে দুটি গোল করলেন, তাঁরাই ভাল খেলেও এদিন হারের অন্যতম কারণ হয়ে রইলেন। তবে আন্ডারডগ হিসেবে রাশিয়ায় পা রেখেও মাথা উঁচু করেই ফিরছে ক্রোয়েশিয়া।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.