ক্রোয়েশিয়া: ১ (মান্ডচুকিচ)
ডেনমার্ক: ১ (জর্জেনসেন)
টাইব্রেকারে ৩-২ ব্যবধানে জয়ী ক্রোয়েশিয়া
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: একই দিনে স্পেন-রাশিয়া ম্যাচের অ্যাকশন রি-প্লে হল। একটায় অঘটন ঘটল। আর অন্যটা অল্পের জন্য রক্ষা পেল। কে ভেবেছিল, যে ম্যাচে ৫৮ সেকেন্ডেই গোল হয়, সেই ম্যাচ গড়াবে পেনাল্টি শুটআউটে! কিন্তু ফুটবলের মজা তো এখানেই লুকিয়ে। শেষমুহূর্ত পর্যন্ত উত্তেজনা জিইয়ে রেখে কুড়ি বছর পর বিশ্বকাপের শেষ আটে পৌঁছে গেল ক্রোটবাহিনী। যাদের জন্য অপেক্ষা করছেন রাশিয়ানরা।
কুড়ি বছর আগে ১৯৯৮ বিশ্বকাপে দাভর সুকেরের ক্রোয়েশিয়া বিশ্বের তৃতীয় সেরা দলের খেতাব জিতে নিয়েছিল। মদ্রিচের বয়স তখন মাত্র ১২। প্রথমবার বিশ্বকাপে অংশ নেওয়া ক্রোটদের সেই উত্থান যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশটাতে ফুটবলের জোয়ার এনে দিয়েছিল। যার ফসল মদ্রিচ, রাকিতিচ, মান্ডজুকিচরা। মদ্রিচ তখনই মনে মনে ঠিক করেছিলেন, দেশকে বিশ্বকাপ এনে দেবেন। আর সে লক্ষ্যেই আরও একধাপ এগোলেন অধিনায়ক। তবে তাঁর পেনাল্টি মিসে দল হারলে চিরতরের মতো খলনায়ক হয়ে যেতেন। টাইব্রেকারে গোল করে তাঁর মান বাঁচালেন সতীর্থ রাকিতিচ।
Incredible. Simply incredible.
Not sure we’ll see a shoot-out like that again for a while! Five saves, but #CRO take it.#CRODEN pic.twitter.com/BDF10UDA0T
— FIFA World Cup 🏆 (@FIFAWorldCup) July 1, 2018
গ্রুপ লিগের শেষ ম্যাচে আইসল্যান্ডের বিরুদ্ধে প্রথম দলের ৯জন ফুটবলারকে বিশ্রামে পাঠিয়েছিলেন দালিচ। তবে নক-আউটে কোনও ঝুঁকি না নিয়ে ৪-২-৩-১ ছকে সর্বশক্তি নিয়েই ঝাঁপিয়েছিলেন ডেনমার্কের বিরুদ্ধে। এদিকে ৪-১-৪-১ ছকে দল সাজিয়েছিলেন ডেনমার্কের কোচ হেরেইড। নিঝনি নভগরদ স্টেডিয়ামের গ্যালারিতে তখনও নিজেদের আসনে থিথু হননি দর্শকরা। তার আগেই সবাইকে চমকে দিয়ে গোল করলেন জর্জেনসেন। লং থ্রো ইনকে কাজে লাগিয়ে ডিলানির পাস থেকে গোল করে ম্যাচের প্রথম মিনিটেই ডেনমার্ককে এগিয়ে দিলেন তিনি। ড্যানিশ তারকাদের জন্য এর চেয়ে ভাল সূচনা আর কী-ই বা হতে পারত? কিন্তু ভুললে তো চলবে না, উলটো দিকে দলটার নাম ক্রোয়েশিয়া। চলতি বিশ্বকাপের শুরুতেই যারা মেসির আর্জেন্টিনাকে তিন গোল দিয়ে অঘটন ঘটিয়েছিল। তবে অঘটন শব্দটা এক্ষেত্রে না ব্যবহার করাই ভাল। যতই দলের নাম আর্জেন্টিনা হোক, পারফরম্যান্সে এবার তাদের থেকে অনেকটাই এগিয়ে দালিচের ছেলেরা। এদিনও মাত্র ১ মিনিট ৫২ সেকেন্ড পর গোল শোধ করে মান্ডজুচিক বুঝিয়ে দিলেন তাঁরা লম্বা রেসের ঘোড়া। এত সহজে যুদ্ধক্ষেত্রে হার মানবেন না। তবে এরপর খেলার গতি অনেকটাই স্লথ হয়ে যায়। গোলে দু-একটা শট নিলেও ক্রোটদের সেই চেনা ছন্দে দেখা গেল না। মাঠ মাঝ থেকে সেভাবে বল সাপলাই হল না। উলটে একটু সতর্ক হয়েই খেললেন রাকিতিচ, রেবিচরা। ড্যানিশরা বেশ চাপেই রেখেছিলেন তাঁদের। ফলে ম্যাচ গড়ায় এক্সট্রা টাইমে। তবে পেনাল্টি থেকে মদ্রিচ গোল মিস না করলে ম্যাচ টাইব্রেকারে গড়াত না। আর দুই দলের গোলকিপাররা যে খেল দেখালেন, তা অনেকদিন মনে থাকবে ফুটবলপ্রেমীদের। তবে কথায় বলে, যার শেষ ভাল তার সব ভাল। তাই ম্যাচের ফলাফলেই ক্রোটদের সব ত্রুটি চাপা পড়ে গেল।
Kasper Schmeichel takes the final @Budweiser #ManoftheMatch award of the day 👏#CRODEN #WorldCup pic.twitter.com/2XfblBT7ki
— FIFA World Cup 🏆 (@FIFAWorldCup) July 1, 2018
নানা ইতিহাসের সাক্ষী রাশিয়ায় এবার বিশ্বকাপেও রচিত হচ্ছে ভিন্ন স্বাদের ইতিহাস। যার বেশিরভাগটা জুড়ে থাকছে শুধুই অঘটনের কাহিনি। পাতা উলটাতে গিয়ে অবিশ্বাস্য মনে হতেই পারে। মেনে নিতেও হয়তো ইচ্ছে করবে না। কিন্তু ইতিহাস তো মিথ্যে বলে না। এ বিশ্বকাপে কখনও ভেঙে পড়েছে জার্মান দুর্গ, তো কখনও একই রাতে অপমৃত্যু হয়েছে ফুটবলের দুই মহাতারকার রূপকথার। রবিবারের প্রথম ম্যাচও তো ব্যতিক্রমী নয়। সেখানেও হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের পর প্রথমবার নক-আউট খেলা রাশিয়ার কাছে হেরে বিদায় নিতে হয়েছে ২০১০ বিশ্বজয়ী স্পেনকে। পরের ম্যাচেও কি তবে…? না, সুকেরের বিশ্বজয়ের স্বপ্নেই বরং নতুন করে চাড়া লাগালেন মদ্রিচ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.