সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: মাঠে নেমে ফুটবল খেলেন এগারো অশ্বারোহী৷ আর গ্যালারিতে বসে তাঁদের প্রতি পাসে-ড্রিবলে খেলাটা খেলেন লক্ষ লক্ষ সমর্থকরা৷ গোলে বল জড়ান খেলোয়াড়রাই, তাঁদের ব্যক্তিগত দক্ষতায়৷ কিংবা টিম গেমের ফসল হিসেবে৷ আর বাইরে থেকে মনে মনে যেন সে গোলের অংশীদার হয়ে থাকেন ওই সমর্থকরাও৷ তাঁদের নাম স্কোরবোর্ডে লেখা থাকে না৷ তবে কারও কারও নাম লেখা থাকে ইতিহাসে৷ যেমন থাকবে ব্রাজিলের সুধীর কুমার ক্লোভিস ফার্নান্ডেজের নাম৷
[ আজ বিশ্বকাপে শুরু ব্রাজিলের অভিযান, মেসি-রোনাল্ডোর পর নেইমারের দিকে তাকিয়ে বিশ্ব ]
হ্যাঁ, ফুটবল খেলোযাড়রাই খেলেন বটে৷ তবে তাঁদের সঙ্গেই মনে মনে খেলে যান সমর্থকরা৷ যেমন এই ক্লোভিস৷ যেমন শচীনের জন্য গায়ে তেরঙ্গা এঁকে সারা বিশ্বে ঘুরে বেড়ান সুধীর কুমার৷ আর ফুঁ দেন জয়ের শঙ্খে৷ সুতরাং সমর্থক ছাড়া কোথাও যেন ফুটবলারের কৃতিত্বও জৌলুস হারায়৷ বিপক্ষকে পর্যুদস্ত করে যখন তাঁরা গ্যালারির সামনে চলে আসেন, তখন ওই কোটি কণ্ঠের নিনাদই তাঁদের মাথায় পরিয়ে দেয় জয়ের তাজ৷ আজও কোনও সোনার ট্রফি এই মুহূর্তের গৌরবকে পরাস্ত করতে পারেনি৷ সমর্থক তো অনেকেই থাকেন৷ তবে সুধীর কুমারের মতো ক্লোভিসও ব্যতিক্রম৷ ব্রাজিলের খেলোয়াড়, সমর্থকরা সকলেই তাঁকে চেনেন৷ শুধু সাম্বার দেশ নয়, তাঁকে চেনেন গোটা বিশ্বের ফুটবলপ্রেমীরা৷ গত বিশ্বকাপে জার্মানদের নাৎসি জেদ তখন ছিন্নভিন্ন করে দিচ্ছে সাম্বার স্বপ্নের খেলাঘর৷ দিশেহারা মার্সেলোরা কী করবেন বুঝে উঠতে পারছেন না৷ হাটখোলা রক্ষণে বারবার আক্রমণ হানছেন জার্মানিরা আর গোলের খই ফুটছে৷ গ্যালারিতে কেঁদে আকুল সমর্থকরা৷ ঠিক তখনই হাতে বিশ্বকাপের রেপ্লিকা নিয়ে উঠে দাঁড়িয়েছিলেন ক্লোভিস৷ তখনও তিনি আশা ছাড়েননি৷ বৃথা আশা মরিতে মরিতেও মারে না৷ তবু আশার ছলনে ভুলি কী ফল লভিনু হায়! কবির আক্ষেপই সেদিন ম্যাচ শেষে অশ্রুবিন্দু হয়ে ফুটে উঠেছিল বৃদ্ধ ক্লোভিসের চোখে৷ তবে ফুটবলে স্পিরিটই শেষ কথা৷ বিশ্বকাপ থেকে সেবার বিদায় নিয়েছিল ব্রাজিল৷ ক্লোভিসও তাঁর বিশ্বকাপের রেপ্লিকাটা তুলে দিয়েছিলেন জার্মানি সমর্থকদের হাতে৷ সেরাকে যিনি শিরোপা দিতে পারেন অকপটে, তাঁর হৃদয়ের প্রশস্ততা গোটা বিশ্বের কাছেই অনুকরণীয় হয়ে ওঠে৷ ক্লোভিসও তাই থেকেছেন৷
[ বিশ্বকাপে ম্যাচ চলাকালীন লোডশেডিং নয়, কড়া নির্দেশ রাজ্যের ]
১৯৯০ থেকে ২০১৪, টানা গ্যালারিতে হাজির থেকে বিশ্বকাপ দেখেছেন৷ ব্রাজিল যেখানে সেখানেই তিনি৷ এর মধ্যে দুবার ব্রাজিলের হাতে বিশ্বকাপ উঠতেও দেখেছেন (১৯৯৪, ২০০২)৷ ব্রাজিলের ‘দ্বাদশ ব্যক্তি’ হয়ে উঠেছিলেন তিনি৷ তবে এবার নেইমাররা গ্যালারিতে আর তাঁকে পাবেন না৷ ২০১৫-তে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছেন ব্রাজিলের এই পরম ভক্ত৷ ব্রাজিলকে হয়তো সমর্থনে যুদ্ধজয়ের সাহস দিতে পারতেন, কিন্তু ক্যানসারের সঙ্গে লড়াইটা যে একা একাই লড়তে হয়। সে লড়াইয়ে হেরে গিয়েছেন ক্লোভিস।
Clovis Fernandes followed Brazil for seven consecutive World Cups, from 1990-2014.
In 2015 he sadly passed away from cancer.
His sons Frank and Gostavo are now in Russia continuing his legacy.
The beautiful game. pic.twitter.com/cbLrer8Cv0
— FourFourTweet (@FourFourTweet) June 14, 2018
তবে তাঁর লিগ্যাসি ফুরোয়নি৷ এবার ব্রাজিলের হয়ে গলা ফাটাতে তৈরি তাঁর দুই পুত্র ফ্রাঙ্ক ও গুস্তাভো৷ হাতে সেই বিশ্বকাপের রেপ্লিকা৷ নেইমাররা যখন বিশ্বকাপ অভিযানে মাঠে নeমতে চলেছেন, তখন বাবার মতোই ফুটবল আরাধনার কাজটি চালিয়ে যাবেন তাঁরাও৷
The son of World Cup icon Clovis Acosta Fernandes will continue his legacy this time around after Clovis passed away in 2015😢❤⚽ #Brasil #WorldCup pic.twitter.com/mN3iyYj3Pq
— Juan “WorldCup” Direction (@JuanDirection58) June 15, 2018
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.