নাইজেরিয়া: ১ (মোজেস-পেনাল্টি)
আর্জেন্টিনা: ২ (মেসি, রোজো)
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: অনুগতজনে কি এভাবে প্রবঞ্চনা করতে হয় লিও মেসি? কবে শোনাবে তোমার রুপকথার গল্প? চলতি বিশ্বকাপে আসমুদ্র হিমাচল এ প্রশ্নই তুলেছিল। অজানা আতঙ্কে বারবার কেঁপেছে ভক্তদের বুক। আর ডুকরে কেঁদে উঠেছে হৃদয়। কিন্তু বিশ্বাস ছিল। ঈশ্বর নিরাশ করবেন না। আর প্রতিবারের মতো এবারও বিশ্বাসে আঘাত লাগেনি। সবুরে মেওয়া ফলল মঙ্গল-রাতে। সমালোচনায় বিদ্ধ, হতাশায় নিমজ্জিত আর সাদা-নীল জার্সিতে হারিয়ে যাওয়া সেই ঈশ্বরের দর্শন মিলল সেন্ট পিটার্সবার্গ স্টেডিয়ামে। যিনি আর্জেন্টিনার নতুন ভোরের রচনা করলেন নিজে হাতে। যিনি বুঝিয়ে দিলেন তাঁর পায়ে ফুটবল আরও কুলীন হয়ে ওঠে। শুধু গোল করে নয়, অধিনায়ক ও কোচ হিসেবেও এদিন দলকে অমূল্য জয়টি উপহার দিলেন লিও মেসি।
GOAAAALLLL!!!! LEO
MESSI HAS ARRIVED!!!#ARG #NGA #NGAARG #WorldCup pic.twitter.com/exUSmTG8Lh
— FIFA World
Cup (@WorIdCupUpdates) June 26, 2018
খেলার ১৪ মিনিট বয়সে যখন দুই ডিফেন্ডারকে কাটিয়ে বল জালে জড়ালেন, তখন মেসির চেয়েও বেশি উচ্ছ্বসিত গ্যালারিতে বসে থাকা মানুষটি। ক্রীড়া দুনিয়া যাঁকে ফুটবলের রাজপুত্র বলেই চেনে। প্রথম ম্যাচ থেকেই মেসির উপর সম্পূর্ণ ভরসা রেখেছিলেন মারাদোনা। আইসল্যান্ডের বিরুদ্ধে পেনাল্টি মিস কিংবা ক্রোয়েশিয়ার কাছে হার, কোনও পরিস্থিতিতেই মেসির মাহাত্ম্যকে খাটো করেননি মারাদোনা। উলটে দুষেছেন কোচ সাম্পাওলিকে। আর তাঁর এ দোষারোপ যে নেহাত অহেতুক নয়, তা তো এদিনই প্রমাণিত। মাসচেরানোকে সঙ্গে নিয়েই প্রথম একাদশ বেছেছিলেন। অ্যাগুয়েরোকে বসিয়ে হিগুয়েনকে আনেন। উইংয়ে জুড়ে দেন ডি মারিয়াকে। আর নিজের হাতে দল সাজাতেই বডি ল্যাঙ্গুয়েজ পালটে যায় মেসির। যা গত দুই ম্যাচে কোথাও যেন হারিয়ে গিয়েছিল। সাইডলাইনে দাঁড়িয়ে থাকা সাম্পাওলি তখন
নেহাতই মোমের পুতুল। নিজের অপদার্থতা ঢাকতে কোথায় মুখ লুকোবেন, তিনিই জানেন।
Moses, as cold as
ice! #NGAARG pic.twitter.com/wu6V3mIt6k
— David Kappel
(@kappilinho) June 26, 2018
ফ্রিকিক থেকে এদিন বল বারে লেগে বেরিয়ে না গেলে এলএম টেনের পাশে জোড়া গোল লেখা থাকত। তবে মেসির গোলেও ছিটকে যাওয়ার আশঙ্কা কাটেনি। কারণ পেনাল্টি থেকে নাইজেরিয়াকে সমতায় ফিরিয়ে দিয়েছিলেন মজেস। আর্জেন্টিনার আকাশ থেকে কালো মেঘ সরল অন্তিম লগ্নে রোজোর গোলে। কিন্তু মেসিদের বিরুদ্ধে যেভাবে সমানে লড়াই চালিয়ে গেল সুপার ইগলস, তা নিঃসন্দেহে প্রশংসনীয়। দ্বিতীয়ার্ধের শেষে গোলের দারুণ সুযোগ হাতছাড়া না করলে ম্যাচের ফল অন্যরকম হতেই পারত। তবে হ্যান্ডবল হওয়া সত্ত্বেও কেন পেনাল্টি দেওয়া হল না, সে প্রশ্ন ইতিমধ্যেই তুলেছেন নাইজেরীয় তারকারা।
দেশের জার্সি গায়ে অনেক কিছু প্রমাণ করা যে বাকি তাঁর। প্রত্যাবর্তনের পর যে নিজের উপস্থিতির জানান দিতে হবে তাঁকে। সেই সফরের শুভ সূচনা করে ফেললেন সুপারস্টার। দেশের হয়ে সবে তো ৬৫টা গোল হল। এখনও অনেকটা পথচলা বাকি।
মেসিময় হয়ে থাকল এদিনের রাশিয়ার পরিবেশ। ওস্তাদের মার তো শেষরাতেই হয়। তাই তো উত্তেজনা চরমে পৌঁছে দেওয়ার পর শেষমেশ চারটি পয়েন্ট নিয়ে শেষ ষোলোয় পৌঁছে গেল মেসি এবং কোং। ৩০ জুন নক-আউটে তাদের প্রতিপক্ষ ফ্রান্স। তবে ৯ পয়েন্ট নিয়ে গ্রুপ ডি-এর শীর্ষে থেকে নক-আউটে গেল ক্রোয়েশিয়া। আর এবারের মতো বিশ্বকাপ থেকে বিদায় নিল আইসল্যান্ড ও নাইজেরিয়া।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.