বেলজিয়াম– ১ (থরগ্যান)
পর্তুগাল – ০
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডোর (Cristiano Ronaldo) স্বপ্ন শেষ। গতবারের চ্যাম্পিয়ন পর্তুগালের (Portugal) দৌড় থেমে গেল ইউরো কাপের প্রি কোয়ার্টার ফাইনালেই। রোনাল্ডোর বিদায়ে গ্ল্যামার হারাল ইউরো কাপ। পাঁচ-পাঁচটা ইউরো কাপ খেলেছেন ‘সিআর ৭’। দীর্ঘ ফুটবল জীবনে অনেক উত্থান-পতন দেখেছেন। বলকে কথা বলিয়ে গোলের পর গোলও করেছেন। রেকর্ড এসে ধরা দিয়েছে তাঁর কাছে। এহেন রোনাল্ডোর এটাই ছিল শেষ ইউরো কাপ। ৩৬-এর রোনাল্ডো শেষ ইউরোটা রাঙিয়ে দিয়ে যাবেন, এমন আশায় বুক বেঁধেছিলেন পর্তুগিজ সমর্থকরাও। কিন্তু প্রি কোয়ার্টার ফাইনালেই থেমে গেল রোনাল্ডোর ইউরো অভিযান। মধুরেণ সমাপয়েৎ আর হল না। সেভিয়ার মাঠে বেলজিয়াম (Belgium) ১-০ গোলে জিতে কোয়ার্টার ফাইনালে চলে গেল। সেখানে তাদের জন্য অপেক্ষা করছে রবার্তো ম্যানচিনির ইটালি।
একদিকে ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো। অন্যদিকে রোমেলু লুকাকু। ইন্টার মিলানের হয়ে সিরি আ জিতে এবারের ইউরোয় নেমেছেন বেলজিয়ামের দীঘল চেহারার স্ট্রাইকার। অন্যদিকে দামামা বাজিয়ে ইউরো কাপ শুরু করেছেন ‘সিআর সেভেন’। বেলজিয়ামের বিরুদ্ধে ইউরোর সবচেয়ে বিস্ফোরক ম্যাচটার আগেই পাঁচ-পাঁচটা গোল করা হয়ে গিয়েছিল পর্তুগিজ মহানায়কের। ১০৯ টি আন্তর্জাতিক গোল করে আলি দায়িকে ছুঁয়েছেন এই ইউরোতেই। সেখানে লুকাকুর নামের পাশে লেখা তিন-তিনটি গোল। দুই মহানক্ষত্রর কেউই অবশ্য গোল পাননি।
দিনের শেষে রোনাল্ডো-লুকাকুর মঞ্চে নায়ক হিসেবে অবতীর্ণ হলেন থরগ্যান হ্যাজার্ড। ৪২ মিনিটে তাঁর ডান পায়ের ‘মিসাইল’ পর্তুগিজ গোলকিপার রুই প্যাট্রিসিয়োর নাগাল এড়িয়ে জালে আছড়ে পড়ে। বিরতির ঠিক আগে থরগ্যানের ওরকম গোল বেলজিয়াম শিবিরে এনে দেয় বাড়তি আত্মবিশ্বাস। দ্বিতীয়ার্ধে সেটাই দেখা গেল ফিফার ক্রমতালিকায় একনম্বর দেশের খেলায়। রোনাল্ডোর মতো ‘গোলমেশিন’ থাকা সত্বেও সমতা ফেরানো সম্ভব হয়নি পর্তুগালের পক্ষে। রোনাল্ডোকে এক ইঞ্চি জমিও ছাড়া হয়নি। ফুটবলে সময় আর স্পেস একই। একজন ফুটবলারকে সময় দেওয়া আর জায়গা দিয়ে দেওয়া একই ব্যাপার। সবাই জানেন রোনাল্ডো বল নিয়ে দৌড়নোর সময় পেয়ে গেলে ভয়ংকর হয়ে ওঠেন। সেই দৌড়টাই এদিন তাঁকে দৌড়তে দেননি রবার্তো মার্টিনেজের ছেলেরা।
প্রথমার্ধে দু’দলের কেউই সেভাবে আক্রমণের রাস্তা নেয়নি। একে অপরের শক্তিপরীক্ষা করতেই ব্যস্ত ছিল। রোনাল্ডোর কাছ থেকে দেখা যাচ্ছিল না দৌড়তে দৌড়তে সেই বিখ্যাত ‘স্টেপ ওভার’। প্রথমার্ধে দারুণ একটা ফ্রি কিক অবশ্য নিয়েছিলেন। কিন্তু কুর্তোয়া শরীর ছুঁড়ে তা বাঁচান। এর মধ্যেই প্রথমার্ধের শেষের দিকে থরগ্যান হ্যাজার্ডের সেই কামানদাগা শটে গোল। দ্বিতীয়ার্ধে অন্য এক পর্তুগালকে দেখা যাবে ভেবেছিলেন অনেকেই। কিন্তু ভয়ংকর হতে দেখা যায়নি গতবারের চ্যাম্পিয়নদের। দ্বিতীয়ার্ধে বেলজিয়ামের মানব প্রাচীরে আছড়ে পড়ে রোনাল্ডোর একটা ফ্রি কিক। ঠিকঠাক মারতে না পারায় মাথা নাড়তে দেখা যায় তাঁকে। হয়তো বুঝতে পেরেছিলেন দিনটা তাঁর নয়। তাঁর সতীর্থরা চেষ্টা করেছিলেন ঠিকই, কিন্তু সবাই জানেন রোনাল্ডো রং না ছড়ালে পর্তুগালকেও ম্লান দেখায়।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.