স্টাফ রিপোর্টার: দুটো ম্যাচ জেতার পর টানা দুটো হার। এবার তাই ঘরের মাঠে মিনার্ভার বিরুদ্ধে স্টান্স বদলাচ্ছেন ইস্টবেঙ্গল কোচ আলেজান্দ্রো। চার ম্যাচ হওয়ার পর দলে ফিরতে চলেছেন সেন্ট্রাল মিডফিল্ডার কাশেম। ফিরতে চলেছেন উবেইদের জায়গায় গোলরক্ষক রক্ষিত দাগারও। পাহাড়ে প্রথম দুটো ম্যাচে পুরো পয়েন্ট পাওয়ার পর ইস্টবেঙ্গল সমর্থকরা যখন আই লিগে স্বপ্ন দেখা শুরু করেছেন, তখনই স্বপ্নভঙ্গ। অতঃপর ঘরের মাঠে মিনার্ভাকে হারিয়ে মঙ্গলবার পয়েন্টের খাতায় উপরের দিকে নাম তুলতে চাইছে ইস্টবেঙ্গল। প্রতিপক্ষ দল হিসেবে মিনার্ভা পড়লে ম্যাচটা শুধু মাঠের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকে না। বাইরেও লড়াই শুরু হয়। গত বছর থেকে ইস্টবেঙ্গল কর্তাদের বিরুদ্ধে একের পর এক অভিযোগের বোমা ফেলেছেন মিনার্ভা কর্নধার রঞ্জিত বাজাজ। এখন তাই ভারতীয় ফুটবলে ইস্টবেঙ্গল-মিনার্ভা মুখোমুখি হলেই মাঠের বাইরের লড়াই বড় হয়ে যায়। তার উপর এদিন আবার যুবভারতীতে ইস্টবেঙ্গল নিয়ে গোলাগুলি ছুঁড়লেন ভারতীয় ফুটবলের ‘ব্যাড বয়’ ইমেজের কর্তা।
কোয়েস ইস্টবেঙ্গলের সঙ্গে যুক্ত হওয়ার পর থেকে কিছুটা হলেও সমর্থকদের রোষ দলের উপর পড়েনি। অন্য সময় টানা দুই ম্যাচ হারার জন্য কোচ, কর্তাদের মুণ্ডপাত শুরু হয়ে যেত। এমনকী ফালোপার মতো গো-ব্যাক ধ্বনিও হয়তো উঠত। সেদিক থেকে আলেজান্দ্রো ভাগ্যবান। কিন্তু মঙ্গলবার ঘরের মাঠে দুর্বল মিনার্ভাকে হারাতে না পারলে চাপটা যে বাড়াবে তা বুঝে গিয়েছেন। তাই এদিন সাংবাদিক সম্মেলনে বললেন, “পয়েন্ট টেবিলে মিনার্ভা কোথায় তা দেখে শক্তির বিচার করতে বসলে মুশকিল। ম্যাচটা আমাদের জন্য যথেষ্ট কঠিন হবে।” মঙ্গলবারই প্রথম দলে অন্তর্ভুক্তি হয়ে যেত সালাম রঞ্জনের। কিন্তু জ্বরের জন্য দলের সঙ্গে প্র্যাকটিস করতে পারলেন না। তাই স্টপার লাইনে বোরহা আর জনি অ্যাকোস্টা। দুই স্টপারের মাঝে ফাঁকফোকর ঢাকতে একজন ব্লকার চান কোচ। সেই ভাবনা থেকে কাশেমকে প্রথম দলে রাখার ভাবনা। তার সঙ্গে ডিকা না, কমলপ্রীত তা বলেননি। অনেকে এমনও বলছেন, আলেজান্দ্রোর সময়ে ইস্টবেঙ্গলের প্রথম দল বলা মুশকিল। শেষ মুহূর্তে তিনি কী করে দেবেন কে জানে। যেমন আমনার ব্যাপারে অসম্মতি জানিয়ে দেওয়ার পরেও এদিন সাংবাদিক সম্মেলনে বললেন, “এখনও ফিট হওয়ার চেষ্টা চালাচ্ছে। দেখা যাক!” কিন্তু মিনার্ভা ম্যাচ থেকেই কি ঘুরে দাঁড়াতে পারবে ইস্টবেঙ্গল? আলেজান্দ্রো বললেন, “আগের দুটো ম্যাচের কথা মনে রাখছি না। ঘরের মাঠে আমরা জয়ে ফিরবই।”
[আমনার পর রঞ্জনকেও ছাঁটলেন ইস্টবেঙ্গলের স্প্যানিশ কোচ]
মিনার্ভা কর্নধার রঞ্জিত বাজাজ এত কিছু রাখঢাক করে বলতে পারেন না। জানালেন, “ভারতীয় ফুটবলে সবচেয়ে বেশি ব্যান আর জরিমানা বোধহয় আমাকেই করা হয়েছে। কিন্তু যা সত্যি, তা বলবই।” এরপরই বললেন, “ইস্টবেঙ্গল-মোহনবাগান ছাড়া ভারতীয় ফুটবল চলবে না। কালকেই ইস্টবেঙ্গল-মোহনবাগান ঘোষণা করে দিক, আইএসএল খেলবে না। দেখবেন, বন্ধ হয়ে যাবে আইএসএল। এই দুই ক্লাবের ভারতীয় ফুটবলে যেমন প্রভাব, তেমন দুই ক্লাবের খারাপ কাজও ভারতীয় ফুটবলকে মারাত্মক চাপে ফেলে। এতদিন ধরে যারা ইস্টবেঙ্গল চালিয়েছেন, তারা রীতিমতো অপেশাদারিত্ব দেখিয়েছেন। এখন নতুন সংস্থার হাতে ক্লাবের ফুটবল টিমের দায়িত্ব। আশা করব, এবার সব ঠাক ঠাক চলবে।”
[জল্পনার অবসান, আমনাকে ছেড়েই দিল ইস্টবেঙ্গল]
কিছুদিন আগেও সুখদেব সিং ইস্যুতে ইস্টবেঙ্গল কর্তাদের নানাভাবে বিদ্ধ করেছেন রঞ্জিত বাজাজ। সে প্রসঙ্গে টেনে বললেন, “আমার ঘরে এসে কেউ চুরি করে চলে যাবে। আমি চুপচাপ দাঁড়িয়ে থাকব নাকি পুলিশে অভিযোগ করব? ইস্টবেঙ্গল-মোহনবাগানের মতো আমার টাকার জোর নেই। এই মরশুমে যারা ভাল খেলবে, সেই চার-পাঁচজন ফুটবলারকে সামনের মরশুমে বড় ক্লাবে দিয়ে ট্রান্সফার ফি-র টাকায় আমার দল করব। এবার ইস্টবেঙ্গল যদি টেবিলের তলা দিয়ে সেই ফুটবলার নিয়ে আমাকে পেটে মারতে চায়, তাহলে কোথাও না কোথাও অভিযোগ করতেই হয়। আমার অভিযোগ সত্যি বলেই তো ফেডারেশন শাস্তি দিয়েছে ইস্টবেঙ্গলকে।” শাস্তির মেয়াদ আগেই শেষ হয়ে যাওয়া প্রসঙ্গে মিনার্ভ কর্নধার বললেন, “এরকমটা হতেই পারে। কিন্তু শাস্তির আওতায় তো পড়েছে। এবার থেকে ভারতীয় ফুটবলের কোনও দল এরকম অন্যায় করার আগে দু’বার ভাববে। তবে এটাও ঠিক, অনেকের মতো আমিও ইস্টবেঙ্গল-মোহনবাগান ম্যাচ দেখার জন্য সেই ছোটবেলা থেকে তাকিয়ে থাকতাম।”
এদিকে, এদিনও ভিসা পেলেন না ইস্টবেঙ্গলের ষষ্ঠ বিদেশি কোলাডো। ফলে ভারতে আসা পিছিয়ে যাচ্ছে তাঁর। চেষ্টা হচ্ছে ৮ ডিসেম্বরের আগে এনে গোকুলাম ম্যাচ যদি খেলানো যায়।
[ছোটদের ডার্বি ঘিরে ফের উত্তপ্ত ময়দান, সমর্থকদের হাতে আক্রান্ত সাংবাদিক]
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.