স্টাফ রিপোর্টার: আগেরদিন ম্যাচ হেরে এমনিতেই মানসিক ভাবে হতাশায় নিমজ্জিত ইস্টবেঙ্গল শিবির। তারমধ্যে এদিন আবার প্র্যাকটিসে রক্তারক্তি কাণ্ড। অজ্ঞান হয়ে প্র্যাকটিস থেকেই সোজা হাসপাতালে। যেখানে দুই ফুটবলারের মাথায় প্রচুর সেলাইও পড়ে।
আই লিগের শুরুতেই পর পর দুটো ম্যাচে জয় পেয়ে টগবগ করে ফুটছিল লাল-হলুদ শিবির। কিন্তু মঙ্গলবার ঘরের মাঠে চেন্নাই সিটি এফসি একেবারে সাধারণের স্তরে নামিয়ে আনে ইস্টবেঙ্গলকে। প্রথম দুটি ম্যাচ দেখার পর যখন মনে হচ্ছিল, এতদিন আই লিগ না পাওয়ার যন্ত্রণা হয়তো এবার নতুন কোচ আলেজান্দ্রোর হাত ধরে মুক্তি পেতে চলেছে, ঠিক তখনই চেন্নাই ম্যাচের পর ইস্টবেঙ্গলের পারফরম্যান্স রীতিমতো প্রশ্নের মুখে ফেলে দিয়েছে ইস্টবেঙ্গল সমর্থকদের স্বপ্নকে। স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে, এরকম পারফরম্যান্স অব্যাহত থাকলে তো এবারও মরশুম শেষে স্বপ্নভঙ্গর বেদনায় বিদ্ধ হতে হবে।
মঙ্গলবার ম্যাচের ভুলত্রুটিগুলি শুধরে নেওয়ার জন্যই এদিন সকালে প্র্যাকটিস ডেকেছিলেন আলেজান্দ্রো। আর সেখানেই অঘটন। প্র্যাকটিস ম্যাচের মধ্যেই শূন্যে একটা বলে দু’জনেই হেডে উঠেছিলেন মেহতাব সিং আর ট্রায়ালে থাকা অস্ট্রেলিয়া থেকে আসা ভারতীয় বংশোদ্ভূত সিদ্ধার্থ সিং। দু’জনেই বলের দখল নেওয়ার জন্য এতটাই সচেষ্ট ছিলেন যে, বলে হেড না দিয়ে একে অপরের মাথাতেই হেড দিয়ে দিলেন। তারপর দু’জনেই মাটিতে পড়ে গিয়ে অজ্ঞান। এমনকী মাথা ফেটে গিয়ে রক্তপাত হতে থাকে দু’জনের। স্বাভাবিকভাবেই প্র্যাকটিসে থাকা বাকি ফুটবলাররা ভয় পেয়ে যান। সঙ্গে সঙ্গে এই দুই ফুটবলারকে স্টেডিয়াম সংলগ্ন বাইপাসের ধারে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত, দু’জনের মাথাতেই বেশ কয়েকটি সেলাই পড়েছে। যদিও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে।
তবে যা পরিস্থিতি তাতে মেহতাব সিং বেশ কয়েকদিনের জন্য মাঠের বাইরে চলে গেলেন। আর সিদ্ধার্থ সিং যেহেতু ট্রায়ালের মধ্যে রয়েছেন তাই তাঁর চোটটা দলের খেলার উপর প্রভাব পড়বে না। তার উপর শুক্রবার জানা যাবে, ইস্টবেঙ্গলের উপর থেকে ফুটবলার সইয়ের উপর নির্বাসন ফেডারেশন তুলছে কি তুলছে না। তাই সিদ্ধার্থ সিংয়ের চোটটা হয়তো এই মুহূর্তে ইস্টবেঙ্গলের উপর প্রভাব ফেলবে না। কিন্তু মেহতাব সিংয়ের চোটটা অবশ্যই সমস্যায় ফেলবে।
[ঘরের মাঠেই নিভল মশাল, চলতি আই লিগে প্রথম হার ইস্টবেঙ্গলের]
এদিকে, পরের ম্যাচ ২৪ নভেম্বর আইজল এফসির বিরুদ্ধে আমনাকে খেলানোর জন্য ভাবনা চিন্তা শুরু হয়ে গেল ইস্টবেঙ্গলে। কেন না, মুখে স্বীকার না করলেও ইস্টবেঙ্গল টিম ম্যানেজমেন্ট বুঝে গিয়েছে, দলের আসল সমস্যাটা এখন স্ট্রাইকার নয়। মিডফিল্ডে। আর তাই আমনাকে খেলানোর জন্য তোড়জোড় শুরু। কিন্তু আমনা নিজে কি পারবেন? সিরিয়ান মিডফিল্ডার নিজেও চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন মাঠে নামার। তিনি মনে করছেন, পরের আইজল ম্যাচের আগে হয়তো সুস্থ হয়ে উঠতে পারবেন। হয়তো খেলার জায়গাতেও চলে আসবেন। কিন্তু টিম ম্যানেজমেন্ট মনে করছে, হয়তো পরের ম্যাচের আগে সুস্থ হয়ে উঠতে পারেন, কিন্তু নব্বই মিনিট খেলার মতো জায়গাতে হয়তো পৌঁছবেন না। আমনা বললেন, “প্রত্যেক ফুটবলারের জীবনেই এরকম খারাপ সময় আসে। তবে চোটের জন্য খেলতে পারছি না বলে সত্যিই খারাপ লাগছে। চেষ্টা করছি, পরের ম্যাচ থেকেই মাঠে নেমে পড়তে।”
ছবি: অচিন্ত্য রায়
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.