স্টাফ রিপোর্টার: কলকাতা লিগ শেষ হলে সুভাষ ভৌমিককে কোন পদে রাখা যায়, তা নিয়ে নানারকম ভাবনা চিন্তা হয়েছিল।
যদি সিনিয়র দলের কোচ আলেজান্দ্রোর প্রতি ‘খালিদ সুলভ ডায়ালগ’ না দেন, তাহলে হয়তো রেখে দেওয়া হলেও হতে পারে। কিন্তু এদিন মহামেডান ম্যাচের পর সুভাষ সম্পর্কে মারাত্মকভাবে মোহভঙ্গ হয়েছে কোয়েস কর্তাদের। আলোচনায় এমন তথ্যও উঠে এসেছে যে, সুভাষের শুধু সাফল্যর সময়ের কথাই ইস্টবেঙ্গলে বেশি করে আলোচনা হয়। অথচ সুভাষের কোচিংয়ে প্রচুর ব্যর্থতাও রয়েছে ইস্টবেঙ্গলের। যেগুলি নিয়ে আলোচনা প্রায় হয়ই না। ক্লাবকে ভবিষ্যতের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার পথে আর কোনও আবেগের রাস্তায় হাঁটতে চান না কোয়েস কর্তারা। তাই কলকাতা লিগে এফসিআই ম্যাচটাই এবারের জন্য ইস্টবেঙ্গলে সুভাষের শেষ ইনিংস হতে চলেছে। এখনও পর্যন্ত সেরকমই সিদ্ধান্ত।
ঠিক হয়েছে আলেজান্দ্রোর সঙ্গে কথা বলে ক্লাব ভেবে দেখবে, আই লিগের বাতিল এবং জুনিয়র দলের কয়েকজন ফুটবলারকে নিয়ে ডুরান্ড-সহ দ্বিতীয় সারির বেশ কিছু টুর্নামেন্টে খেলা যায় কি না। সেই ধরনের টুর্নামেন্টগুলিতে সুভাষকে কোচ করে পাঠানোর কথা ভাবা হয়েছিল। কিন্তু পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে ঠিক হয়েছে, সুভাষকে আর কোচিংয়ের দায়িত্বে রাখা যাবে না। কেননা, জুনিয়র দলের ফুটবলারদের আরও নিবিড়ভাবে অনুশীলন করাতে হবে, যা সুভাষের পক্ষে আর সম্ভব হবে বলে কোয়েস ইস্টবেঙ্গল কর্তারা মনে করছেন না। বিশেষ করে এদিনের মহামেডান ম্যাচ দেখার পর।
প্রথমে পিয়ারলেস। তারপর মহামেডান ম্যাচ দেখার পর কর্তাদের একটা বড় অংশের দাবি, ইস্টবেঙ্গলের খেলা দেখে মনেই হচ্ছে না দলটা প্রি-সিজন ট্রেনিং করেছে। সবে মরশুম শুরু হয়েছে আর তাতেই ফুটবলারদের চরম আনফিট লাগছে। রঘু নন্দীর মহামেডান ফুটবলারদের দেখে বরং ইস্টবেঙ্গল ফুটবলারদের থেকে বেশি ফিট লাগছিল। কিন্তু কেন এমনটা হল? ক্লাব তাঁবুতে পা দিলেই শোনা যাচ্ছে, এই সুভাষই গত মরশুমে খালিদের থেকে যখন কোচিংয়ের ভার নিয়েছিলেন, ফুটবলারদের কীভাবে ফিট রাখতে হয়, তা দেখানোর জন্য মরশুমের শেষে গিয়ে বিপ টেস্ট নিয়েছিলেন। সুভাষ হয়তো এই দলটাকে নিয়ে অনেক পরিশ্রম করেছেন, কিন্তু যেভাবে কোচিং করিয়ে বাইচুংদের সময় সাফল্য পেয়েছেন, এখন ঠিক সেভাবেই কোচিং করিয়ে আর সাফল্য আসছে না। তাই সুভাষকে যখন দরকারই লাগবে না, তখন শুধু শুধু আলেজান্দ্রোর ঘাড়ে কোনও চাপ তৈরি করতে চাইছে না কোয়েস। তারা চাইছে, দীর্ঘ সময়ের জন্য নিজের মতো করে কাজ করুন আলেজান্দ্রো। সুভাষকে রাখলে হয়তো এখন কিছু বলবেন না।
কিন্তু আলেজান্দ্রোর কোনও সময় ব্যর্থতা এলেই ফের ব্যাক্তিত্বের সংঘাত আসতে পারে। আর সুভাষ যেখানে ইস্টবেঙ্গলের একচেটিয়া কলকাতা লিগেও চরম ব্যর্থ, তখন নতুন করে কোচিং ডিপার্টমেন্টে আর ঝামেলা চাইছে না ইস্টবেঙ্গল। কলকাতা লিগটা জিতে গেলে হয়তো এখনই এভাবে বাতিল করে দেওয়া সম্ভব হত না। কিন্তু মিনি ডার্বিতে নাস্তানুবাদ হওয়ার পর ব্যর্থতার তকমা লাগিয়ে সুভাষকে বাতিল করে দিতে খুব একটা সমস্যা হবে না। তবে কোয়েস ইস্টবেঙ্গল কর্তারা চাইছেন, ব্যর্থতার দায়ভার নিয়ে সুভাষ নিজেই পদত্যাগ করুন।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.