আইজল এফসি – ১ (লালদানমাউইয়া)
ইস্টবেঙ্গল- ০
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: পরপর দু’টি ড্রয়ের পর অবশেষে হার। আইলিগ জয়ের স্বপ্নে বড় ধাক্কা খেল ইস্টবেঙ্গল। সোমবার আইজল এফসির কাছে ০-১ গোলে হেরে গেল মর্গ্যান ব্রিগেড। খালিদ জামিলের দলের হয়ে একমাত্র গোলটি করেন লালদানমাউইয়া। আইলিগে এই প্রথম কোনও ম্যাচে হারল ইস্টবেঙ্গল। এর আগে প্রথম পর্বের ম্যাচে বারাসত স্টেডিয়ামে এই আইজলের সঙ্গেই ড্র করেছিল লাল-হলুদ ব্রিগেড।
এদিন দলে মোট চারটি পরিবর্তন করেছিলেন লাল-হলুদের সাহেব কোচ। রোমিও ফার্নান্ডেজ, অর্ণব, রাউলিন বোর্জেস এবং অবিনাশ রুইদাসকে প্রথম একাদশে রাখেন তিনি। ম্যাচ শুরুর তিন মিনিটেই প্লাজার পাস থেকে ওয়েডসনের নেওয়া শট আইজল গোলকিপার আলবিনোকে পরাস্ত করলেও ক্রসবারে লাগে। ভাগ্যদেবী প্রসন্ন থাকলে ওই শটটি থেকেই গোল পেয়ে যেতেন হাইতিয়ান ফুটবলার। প্রথমার্ধে বেশ গোছানো ফুটবলই খেলছিলেন ইস্টবেঙ্গলের খেলোয়াড়রা। কিন্তু কাজের কাজটি কেউই করতে পারছিলেন না। প্রথম একাদশে সুযোগ পেয়ে ভালই খেলছিলেন রোমিও। কিন্তু গোলমুখ খুলতে পারেননি।
অপরদিকে, ইস্টবেঙ্গলের বরাবরের গাঁট খালিদ জামিল নিজের রক্ষণকে বেশ সুন্দরভাবে সাজিয়েছিলেন। দুই বিদেশি এবং রোমিওকে খুব বেশি জায়গা দেননি তাঁর দলের খেলোয়াড়রা। প্রাথমিকভাবে ইস্টবেঙ্গলের আক্রমণের ঝাঁঝ বেশি থাকলেও কিছুটা ধাতস্থ হয়ে ঘরের মাঠে আইজলের খেলোয়াড়রাও ধীরে ধীরে খেলায় ফেরেন। প্রথমার্ধের শেষদিকে বেশ কয়েকটি গোলমুখী আক্রমণ শানায় তাঁরা। এরমধ্যেই ইস্টবেঙ্গলের রাইট ব্যাক রাহুল ভেকের বিরুদ্ধে বক্সের মধ্যে হ্যান্ডবলের অভিযোগ ওঠে। আইজল খেলোয়াড়রা পেনাল্টির আবেদন করলেও রেফারি তা নাকচ করে দেন। শেষপর্যন্ত প্রথমার্ধে খেলা গোলশূন্যভাবেই শেষ হয়।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই রোমিও এবং অবিনাশকে তুলে নেন ট্রেভর জেমস মর্গ্যান। রোমিওর জায়গায় রবিন এবং অবিনাশের জায়গায় মাঠে আসেন লালরিনডিকা রালতে। এরপর আক্রমণ-প্রতিআক্রমণে খেলা চলতে থাকে। ৫৫ মিনিটে হাতাহাতিতে জড়ান ইস্টবেঙ্গলের বিদেশি ডিফেন্ডার ইভান বুকেনিয়া এবং আইজলের লালরামচুল্লোভা। রেফারি দু’জনকেই হলুদ কার্ড দেখিয়ে সতর্ক করে দেন। ৫৬ মিনিটেই ফাউল করে হলুদ কার্ড দেখেন লালরিনডিকা রালতে। ম্যাচের একমাত্র গোলটি আসে ৫৮ মিনিটে। জয়েশ রাণের সেন্টার অর্ণব হেড করে ক্লিয়ার করার চেষ্টা করলে, সেটা এসে পড়ে লালদানমাউইয়ার পায়ে। প্রথম টাচেই লাল-হলুদ গোলকিপার রেহনেশকে কাটিয়ে গোল করে যান তিনি। এরপরও বেশ কয়েকবার গোলের সুযোগ পেয়েছিল আইজল। কিন্তু তা থেকে গোল হয়নি।
উল্টোদিকে, দ্বিতীয়ার্ধে লাল-হলুদ খেলোয়াড়দের মধ্যে জেতার সেই চেষ্টা মাঝেমধ্যেই হারিয়ে যাচ্ছিল। এরমধ্যেই ৬৬ মিনিটে চোট পাওয়ায় উইলিস প্লাজাকে তুলে নেন মর্গ্যান। তাঁর জায়গায় আসেন হাওকিপ। শেষদিকে চেষ্টা করেও গোল শোধ করতে পারেনি ইস্টবেঙ্গলের খেলোয়াড়রা।
এদিন মিজোরামের রাজীব গান্ধী স্টেডিয়ামে আইজলের সমর্থনে প্রচুর সদস্য-সমর্থক এসেছিলেন। গোটা ম্যাচেই পাহাড়ি দলটির জন্য একনাগাড়ে গলা ফাটাতে থাকেন তাঁরা। আইজলের বিরুদ্ধেই বারাসত স্টেডিয়ামে আইলিগের প্রথম ম্যাচটি খেলতে নেমেছিল ইস্টবেঙ্গল। সেই ম্যাচেও প্রথমে গোল করেছিল খালিদ জামিলের ছেলেরা। শেষমুহূর্তে বুকেনিয়া গোলশোধ করে দলের মান বাঁচিয়েছিলেন। কিন্তু এদিন ইস্টবেঙ্গলের রক্ষাকর্তা হিসেবে আর কেউ এগিয়ে আসতে পারলেন না।
এই ম্যাচ জিতে লিগ টেবিলে কলকাতার দুই প্রধানের আরও কাছে চলে আসল আইজল এফসি। ১০ ম্যাচ খেলে ২০ পয়েন্ট নিয়ে তৃতীয় স্থানে রয়েছে তাঁরা। অপরদিকে, ম্যাচ হারলেও ২১ পয়েন্ট নিয়ে লিগ টেবিলে শীর্ষে রয়েছেন মর্গ্যানের ছেলেরা। একম্যাচ কম খেলে সমসংখ্যক পয়েন্ট পেলেও গোলপার্থক্যে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে মোহনবাগান।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.