স্টাফ রিপোর্টার: হতাশ হয়ে আইএফএ অফিসে বসেছিলেন সচিব উৎপল গঙ্গোপাধ্যায়৷
সচিব হিসেবে সর্বাধিক দিন আইএফএ-র চেয়ারে বসার রেকর্ড তিনিই গড়েছেন৷ আর তাঁর আমলেই কি না, বাংলার ফুটবলের সবচেয়ে চর্চিত ‘ডার্বি’ ম্যাচটাই হল না! হতাশ সচিব বলছিলেন, “প্লিজ, এটাকে বাংলার ফুটবলের কালো দিন বলবেন না৷ বলুন, হতাশজনক দিন৷ সবরকম চেষ্টা করেছিলাম ম্যাচটা করার৷ হল না৷ পারলাম না৷”
মঙ্গলবার রাতে মোহনবাগান চিঠি দিয়ে অনুরোধ করেছিল, ম্যাচটা বৃহস্পতিবার করার জন্য৷ আইএফএ সঙ্গে সঙ্গে জানিয়ে দেয়, সম্ভব নয়৷ বুধবার সকালেও একই অনুরোধ মোহনবাগানের৷ তাতেও টলানো যায়নি উৎপল গঙ্গোপাধ্যায়কে৷ বুধবার তাই ওয়াকওভারের বাঁশি বাজার সঙ্গে সঙ্গে আইএফএ সচিব বলছিলেন, “এনাফ ইজ এনাফ৷ এবার একটা হেস্তনেস্ত হবেই৷ আইএফএ-কে যে যা খুশি বলে যাবে, আর হতে দেব না৷” জানালেন, লিগ শেষ হলেই মিটিং ডাকবেন৷ পেরেন্টবডি সম্পর্কে বিরূপ মন্তব্য করায় দুই প্রধানের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া যায় কি না, তা নিয়ে আলোচনা করা হবে৷
ডার্বি না খেলার জন্য তিন পয়েন্ট হারাতে পারে মোহনবাগান৷ শাস্তিস্বরূপ আরও দু’পয়েন্ট কাটতে লিগ সাব কমিটিকে প্রমাণ করতে হবে যে তারা না জানিয়ে ওয়াকওভার দিয়েছে৷ মোহনবাগান সহ সচিব সৃঞ্জয় বোস বলেন, “আমরা অন্যায়টা কোথায় বলেছি৷ কেউ মোহনবাগানের ক্ষতি করলে আমরা চুপ করে বসে থাকব না৷ আমাদের টালিগঞ্জ ম্যাচ দেওয়া হচ্ছে ১৪ সেপ্টেম্বরের পর৷ আর ইস্টবেঙ্গলের সব ম্যাচ শেষ করে দেওয়া হচ্ছে ১৪ সেপ্টেম্বরের মধ্যে৷ কেন? কেন না, আইএফএ জানে, ১৪ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত আইএসএল-এর সব ফুটবলারকে ইস্টবেঙ্গল রেখে দিচ্ছে৷ ওদের স্বার্থ দেখতে গিয়ে ডার্বি একটা দিনও পিছোতে পারল না আমাদের পেরেন্টবডি! মোহনবাগানের সঙ্গে তাদের আচরণ সত্ বাবা-মার মতো৷”
ইস্টবেঙ্গলের শীর্ষ কর্তা দেবব্রত সরকার আবার বলেন, “ডার্বি ম্যাচ আমরা খেলতে চেয়েছিলাম ৫ সেপ্টেম্বর৷ তারপর এরিয়ান৷ ৯-১০-এর মধ্যে মহামেডান৷ যাতে আইএসএলে সব ফুটবলার ছেড়ে দেওয়া যায়৷ কিন্তু আমাদের দাবি মানেননি আইএফএ সচিব৷” পরে যা স্বীকার করলেন উৎপলবাবু৷ শুনে সৃঞ্জয় বোস বললেন, “এসব তথ্য আগে বের হয়নি কেন? এখন একে অপরকে বাঁচানোর চেষ্টা করছে৷”
ডার্বির আগে কল্যানীতে একটা দিন প্র্যাকটিস করতে চেয়েছিল মোহনবাগান৷ উৎপলবাবু তার উত্তরে বলেন, ‘‘বড় ম্যাচের দিন ঘোষণার পর তো ১৪ দিন সময় পেয়েছিল, যায়নি কেন?” এতে মোহনবাগান সহ-সচিব পাল্টা দেন, “আমাদেরও টাকার গাছ নেই৷ নিজেদের খরচে দু’দিন আগে থাকার পর যদি পূর্ত দফতর বলত, স্টেডিয়াম ঠিক নেই৷ তখন কী হত? শেষ পর্যন্ত তো অস্থায়ী গ্যালারি বাতিল করতেই হল৷” এভাবেই বিবৃতির তরজা চলল সারাদিন৷ নতুন নতুন যুক্তি, অভিযোগ, পাল্টা অভিযোগের শেষ নেই৷ একেবারে সন্ধ্যায় আইএফএ সচিব বলছিলেন, “সব কিছুতেই ক্লাবগুলি শেয়ার চায়৷ লভ্যাংশের শেয়ার৷ এবার তো ক্ষতি হল৷ তাহলে সেটা তো কেউ শেয়ার করবে না৷”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.