স্টাফ রিপোর্টার: অবশেষে বিএমডব্লু ফিরিয়ে দিলেন দীপা কর্মকার৷ শচীন তেণ্ডুলকর নিজের হাতে তুলে দিয়েছিলেন এই গাড়ি৷ দীপার সঙ্গে রিও-তে পদক পাওয়া দুই ক্রীড়াবিদ পি ভি সিন্ধু ও সাক্ষী মালিকের হাতে তুলে দিয়েছিলেন গাড়ির চাবি৷ শচীন জানিয়েছিলেন, দীপার কীর্তিতে তিনি অভিভূত৷ রিও-র মাটিতে পদক পাননি৷ কিন্তু ত্রিপুরাবাসীর জিমন্যাস্টের পারফরম্যান্স দেখে তিনি অবাক৷ অল্পের জন্য ওলিম্পিকে চতুর্থ হয়ে বিদায় নিয়েছিলেন দীপা৷ তবু গোটা দেশ জুড়ে তাঁকে নিয়ে তোলপাড় শুরু হয়ে যায়৷ শচীন নিজের হাতে গাড়ি তুলে দেওয়ায় দীপাও উচ্ছ্বাসে ভেসে গিয়েছিলেন৷ বলেছিলেন, তাঁর জীবনের স্মরণীয় মুহূর্ত৷ সেই বিএমডব্লু ফিরিয়ে দিলেন দীপা৷ কেন? এই নিয়ে দীপার প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি৷ বিশ্বস্ত সূত্রের খবর, দীপা এই সিদ্ধান্ত কিছুটা বাধ্য হয়েই নিয়েছেন৷ প্রথমত, এই গাড়ি নিয়ন্ত্রণ করা সহজ নয়৷ খরচ সাপেক্ষ৷ তাই এই গাড়ি নিতে চাননি৷ দ্বিতীয়ত, আগরতলায় খোলামেলা রাস্তা নেই যে বিএমডব্লু সহজে চালাতে পারবেন৷ এমনিতেই ছোট শহর৷ তার উপর লোকজন যাতায়াত করে রাস্তা জুড়ে৷ তাই ছোট গাড়ি যতটা স্বচ্ছন্দে চালানো যাবে বড় গাড়ি নয়৷ সবদিক বিবেচনা করে বিএমডব্লু ফিরিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় দীপার পরিবার৷ অমত করেননি কোচ বিশ্বেশ্বর নন্দীও৷
ত্রিপুরা জুড়ে অবশ্য এই নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে৷ অধিকাংশ ত্রিপুরাবাসী মনে করছে, বিএমডব্লু ফিরিয়ে পরোক্ষে অপমান করলেন স্বয়ং শচীনকেই৷ যেহেতু শচীন নিজেই গাড়ির চাবি তাঁর হাতে তুলে দিয়েছিলেন৷ এভাবে শচীনকে অপমান করার যুক্তি নেই৷ ত্রিপুরাবাসীদের মনে দীপা এই মুহূর্তে জায়গা করে নিলেও গাড়ি ফিরিয়ে দেওয়ার ঘটনাটি কেউ খোলা মনে নিতে পারছেন না৷
তার উপর জার্মানিতে চ্যালেঞ্জার্স কাপ খেলতে যাচ্ছেন না দীপা৷ নভেম্বরে চ্যালেঞ্জার্স কাপ হবে৷ ফেডারেশন জানিয়ে দিয়েছে, পুরো দলকে নিয়ে যেতে হবে৷ অর্থাৎ তিনজন করে পুরুষ ও মহিলা জিমন্যাস্ট পাঠানো চাই৷ কোচ বিশ্বেশ্বর নন্দীকে জানিয়ে দিয়েছে ফেডারেশন, যেভাবেই হোক ইতিমধ্যে যেন দিল্লিতে জাতীয় ক্যাম্প শুরু করা হয়৷ অথচ সেই ক্যাম্প এখনও পর্যন্ত শুরু হয়নি৷ বিশ্বেশ্বর বলেছিলেন, পুজোর পর ক্যাম্প শুরু করবেন৷ সেই হিসেবে পুজোর পর ক্যাম্প শুরু হওয়ার কথা৷ কিন্তু সেই ক্যাম্পে দীপাকে ডাকছেন না তিনি৷ তাঁর বদলে নেওয়া হচ্ছে অস্মিতা পালকে৷ কেন দীপা নয়? রিও থেকে ফেরার পর এখনও পর্যন্ত সেইভাবে প্র্যাকটিসে নামেননি তিনি৷
মাঝে মাঝে ফিজিক্যাল ফিটনেস করেন৷ তাও নিয়মিত নয়৷ ফলে দীপাকে এই মুহূর্তে জার্মানি নিয়ে গেলে কোনও অঘটন ঘটতেই পারে৷ ফিরতে পারেন পদক শূন্য অবস্থায়ে৷ এখন দীপার পক্ষে কোনও টুর্নামেণ্টে গিয়ে পদক না নিয়ে ফেরা মানে নিজের জনপ্রিয়তায় বিশাল ধাক্কা খাওয়া৷ তাই কোচ বিশ্বেশ্বর চাইছেন না কোনও ভাবেই দীপাকে এই মূহূর্তে আন্তর্জাতিক আসরে নামাতে৷ ফেডারেশন এই সিদ্ধান্ত মেনে নিয়েছে৷ সেই সঙ্গে পাশাপাশি এও জানিয়ে দিয়েছে, এবার যেন দীপা সংবর্ধনা ছেড়ে অনুশীলনে নামে৷
ফেডারেশনের এক কর্তা বলছিলেন, “আমাদেরকে বিশ্বেশ্বর জানিয়েছেন, দীপাকে এই মুহূর্তে তিনি কোনও প্রতিযোগিতায় নামাতে চান না৷ আমরা তা মেনে নিয়েছি৷ কিন্তু এও বলা হয়েছে, এবার সবকিছু ছেড়ে যেন প্র্যাকটিসে নামে৷ রিও ওলিম্পিকের পর মোটামুটি সকলেই নেমে পড়েছে প্র্যাকটিসে৷ ব্যতিক্রম শুধু দীপা৷ তাই এই ব্যাপারটাও আমরা নজরে আনতে বলেছি বিশ্বেশ্বরকে৷ এখন দেখা যাক তিনি কী করেন৷”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.