সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: আঠানব্বয়ের সেই রাত দিদিয়ের দেশঁ হয়তো কখনওই ভুলতে পারবেন না। ভুলতে পারবেন না আঠেরোর এই রাতও। দুই রাতের মধ্যে সাদৃশ্য অনেক। সেদিনও ফ্রান্স খেলেছিল বিশ্বকাপের ফাইনালে। সেদিনও সোনার পরি উঠেছিল ফ্রান্সের হাতেই। তবে সেদিনের খেলোয়াড়রা আজ আর কেউ মাঠে নেই। শুধু মাঠের বাইরে কমন লিংক হয়ে থেকে গেলেন দিদিয়ের দেশঁ। খেলোয়াড় এবং কোচ হিসেবে বিশ্বকাপ ছোঁয়ার বিরল কৃতিত্ব গড়লেন তিনি। বসলেন ব্রাজিলের জাগালো ও জর্মানির বেকেনবাওয়ারের সঙ্গে একাসনে।
গোটা ক্রোয়েশিয়া ফুটছিল এক অভূতপূর্ব জনজাগরণে। ছোট্ট একটা দেশ প্রথমবার বিশ্বকাপের ফাইনালে। জীবনের শেষ রক্তবিন্দু নিংড়ে দিয়ে বিশ্বকাপ ছিনিয়ে নিতে বদ্ধপরিকর ছিলেন মদ্রিচরা। ক্রোট প্রেসিডেন্টের উচ্ছ্বাস যেন হিল্লোল তুলেছিল গোটা বিশ্ববাসীর মনে। ভেসে গিয়েছিল আবেগের নৌকা। কিন্তু দিনের শেষে ফুটবলটা খেলা হয় অঙ্কে। দেশঁর থেকে ভাল তা বোধহয় আর কেউ জানেন না। গোটা টুর্নামেন্টে দেখা গিয়েছে দলের জয় নিশ্চিত হলেই ঘর সামলানোর স্ট্র্যাটেজি নিয়েছেন ফ্রান্স কোচ। তাতে সমালোচনা কম হয়নি। কবিতার শহর ফুটবলে কেন ছড়িয়ে দেবে না ফরাসি সুগন্ধ? দেশঁ জানতেন, শেষ বিচারে কথা বলে ফলাফল। আবেগের নৌকা আদরের হতে পারে, কিন্তু নিখুঁত বৈঠা বাওয়াই তরণীকে পারে পৌঁছায়। গোটা বিশ্বকাপ জুড়ে দেশঁ তাঁর টিমকে তাই বেঁধেছিলেন একসুরে। গ্রিজম্যানের পরিণতিবোধ আর এমবাপের তারুণ্যকে মিশিয়েছেন সঠিক অনুপাতে। পোগবার জেদকে জুড়ে দিয়েছেন তার সঙ্গে। আর ফাইনালে ফ্রান্স যে খেলা উপহার দিল, তাতে আর দেশঁর বিরুদ্ধে কোনও সমালোচনা থাকে না ফুটবলপ্রেমীদের। ক্রোটদের নাছোড় জেদ একদিকে, আর দেশঁর এই বাঁধা তারে বেজে ওঠা ফ্রান্স অন্যদিকে। শেষমেশ জয় হল দেশঁরই। আর তিনি পৌঁছে গেলেন ইতিহাসের বিরল ক্লাবে, যেখানে সদস্য মাত্র তিনজন। ব্রাজিলের জাগালো। যিনি খেলোয়াড় হিসেবে ১৯৫৮ এবং ১৯৬২-তে বিশ্বকাপ পেয়েছিলেন। আর কোচ হিসেবে কাপ ছুঁয়েছিলেন ১৯৭০-এ। জার্মানির বেকেনবাওয়ার একই কৃতিত্ব গড়েছিলেন ১৯৭৪ ও ১৯৯০-এ। আর থাকলেন দিদিয়ের দেশঁ। ১৯৯৮-এ বিশ্বকাপ ছুঁয়েছিলেন অধিনায়ক হিসেবে। আর ২০১৮-তে ফের ছুঁলেন সোনার পরি, এবার কোচ হয়ে। ফরাসি ফুটবলের ইতিহাসে তাঁর নাম তাই লেখা থাকবে সোনার জলেই।
[ বিপর্যয়ে পাশে দাঁড়িয়েছিল এমবাপের ফ্রান্স, সমর্থনে ঋণ শোধ সুন্দরবনের ]
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.