ডোম্মারাজু গুকেশ। ফাইল চিত্র।
১৭ বছরের হাই স্কুলের ছেলেমেয়েরা হয় অঙ্ক নিয়ে মাথার চুল ছেঁড়ে, নয়তো অবসরে ফুসকুড়ি ফাটায়। অথচ সমবয়সি গুকেশ দোম্মারাজু (Dommaraju Gukesh) চ্যাম্পিয়ন হলেন ক্যান্ডিডেটস টুর্নামেন্টে! এবার মুখোমুখি হবেন বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন চিনের ডিং লিরেনের। তাঁকে হারাতে পারলে ভারত থেকে উঠে আসবে কনিষ্ঠতম বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন। ক্যান্ডিডেটসের চূড়ান্ত রাউন্ডে হিকারু নাকামুরা-র সঙ্গে ড্র করেন গুকেশ। অন্যদিকে, ইয়ান নেপোমনিয়াশি ও ফাবিয়ানো কারুয়ানা-র ম্যাচও ড্র হয়। শীর্ষে থাকার সুবাদে প্রতিযোগিতায় জয়ী হন ডি. গুকেশ। তাঁর এক্সক্লুসিভ সাক্ষাৎকার নিলেন বোরিয়া মজুমদার।
আগে বলো, কেমন লাগছে?
গুকেশ: এই মুহূর্তে? অভূতপূর্ব! অদ্ভুত শান্তি। খুব খুশি আমি। শেষদিনটা খুবই চাপের ছিল, তবে আমি খুশি যে, সবকিছু একদম খাপে খাপ মিলে গেল।
কোন মুহূর্তটায় তুমি সবচেয়ে খুশি হয়েছিলে?
গুকেশ: আসলে, খেলার পর আমি হোটেলে ফিরে গিয়েছিলাম। তখনও ফাবি (ফ্যাবিয়ানো কারুয়ানা বনাম নেপোমনিয়াচি ম্যাচ) খেলছিল, আর আমি এসব থেকে একদম দূরে থাকতে চাইছিলাম তখন। তাই আমার কোচের (গ্রেগোর্জ গাজেউস্কি) সঙ্গে আমাদের খেলাটা নিয়েই এটা-সেটা বকবক করছিলাম। এমন সময় বাবা উত্তেজিত হয়ে পৌঁছল…।
ছুটতে-ছুটতে এলে না কি!
গুকেশ: হ্যাঁ, রীতিমতো ছুটতে-ছুটতেই…। বলল, তুই পেরেছিস! হয়তো এটাই আমার কাছে সেরা মুহূর্ত।
তোমার কী মনে হয়েছিল বলো, তুমি কতটা ভেবেছিলে যে তুমি জিতবে? এই টুর্নামেন্টের আগে…
গুকেশ: আমি আমার কথা তো ভাবিইনি। কেবল নিজেকে এটাই বলে চলেছিলাম, যদি নিজের সেরাটা ধরে রাখি, তাহলে টুর্নামেন্টের আর বাকি প্লেয়ারের মতো আমারও সমস্ত সুযোগ রয়েছে জেতার। আর সতি্য বলতে, আমি নিজেকে যেভাবে সংযত, সুস্থির রেখেছিলাম, তাতে এর থেকে ভাল আর কী-ই-বা চাইতে পারি।
টুর্নামেন্টে তোমার সবচেয়ে খারাপ সময়টা ছিল সম্ভবত সাত নম্বর রাউন্ডে আলিরেজা ফিরৌজার কাছে পরাজয়?
গুকেশ: আমি তো বলব, ওটাই আমার কাছে ‘টার্নিং পয়েন্ট’ ছিল। এই হারের আগে অবধি আমি বুঝতে পারিনি, জিতব বলে। কিন্তু, পরাজয়ের পর, একটা দিন বিশ্রাম নিয়ে, একেবারে ভেতর থেকে অনুভব করছিলাম, আমার সেরাটা খুঁজে পেয়েছি।
এ তো ভাবাই যায় না। এই পরাজয় তোমাকে ভেঙে দেয়নি বলছ!
গুকেশ: কিছুক্ষণের জন্য খুব খুবই ভেঙে পড়েছিলাম, এটা সতি্য। কিন্তু তারপর, আমি ভাবলাম, যদি এভাবেই খেলে যেতে পারি টানা, নিশ্চিতভাবে আমার কাছে ভাল সুযোগ আসবে।
তোমার কী মনে হয়, হেরে গিয়ে মাথা থেকে জেতার চাপটা চলে গিয়েছিল?
গুকেশ: না, তা ঠিক নয়। বরং বলব, এই পরাজয় আমাকে আরও আগুন দিয়েছে।
এ তো একেবারে ম্যাগনাস কার্লসেনের মতো বললে। সবাই বলে হেরে যাওয়ার পর কার্লসেন আরও বীরবিক্রমে ফিরে আসেন প্রতিবার!
গুকেশ: আমার তো মনে হয়, যে কোনও খেলোয়াড়ের ক্ষেত্রেই এটা ঘটে। এই হারটা আমার কাছে খুব স্পেশাল ছিল। আমি কিন্তু একেবারেই এই পরাজয়কে খুব ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গিতে দেখেছি এমন নয়। এটুকু বলতে পারি, এই হারের পর আমি যেন আরও আরও জ্যান্ত হয়ে উঠেছিলাম।
অসামান্য! মাত্র ১৭ বছর বয়স তোমার। ইতিমধ্যেই তোমার মধ্যে ওয়ার্ল্ড চ্যাম্পিয়নের গুণ দেখা যাচ্ছে।
গুকেশ: দেখা যাক, কী হয় সামনে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.