সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: মাথার উপর স্থায়ী ছাদ ছিল না। দু’বেলা দু’মুঠো খাবারও জুটতো না রোজ। অর্থের অভাবে একসময় ফুচকাও বিক্রি করতে হয়েছে তাকে। কিন্তু ইচ্ছাশক্তি দমেনি কখনও। ইচ্ছেডানায় ভর করেই স্বপ্নের উড়ান ভরেছিল। আর মাত্র ১৭ বছর ২৯২ দিন বয়সেই এসেছে সাফল্য। রোহিত-শচীনের সঙ্গে একই তালিকায় নাম লিখিয়ে নয়া রেকর্ডের মালিক যশস্বী এখন শিরোনামে।
যশস্বী জয়সওয়াল। কনিষ্ঠতম ব্যাটসম্যান হিসেবে প্রিমিয়ার ডিভিশনের ওয়ানডে টুর্নামেন্টে ডাবল সেঞ্চুরি হাঁকিয়েছে সে। অভিষেক মরশুমেই পাঁচ ইনিংসে তিনটি শতরান ঝুলিতে ভরেছে যশস্বী। বিজয় হাজারে ট্রফির এলিট গ্রুপ এ ম্যাচে ঝাড়খণ্ডের বিরুদ্ধে ২০৩ করেছে সে। তার ১৫৪ বলে ইনিংস সাজানো ছিল ১৭টি চার এবং ১২টি ছয় দিয়ে। ১৯৭৫ সালে ২০ বছর ২৭৩ দিন বছরে দক্ষিণ আফ্রিকার ঘরোয়া ক্রিকেটে এই রেকর্ড গড়েছিলেন অ্যালান ব্যারো। সম্প্রতি তরুণ তুর্কি কেরলের সঞ্জু স্যামসন ডাবল সেঞ্চুরি হাঁকিয়েছিলেন। সপ্তম ব্যাটসম্যান হিসেবে লিস্ট এ ক্রিকেটে এই নজির গড়ল যশস্বী। এর আগে এই কীর্তি করেছেন শচীন তেণ্ডুলকর, রোহিত শর্মা (তিনবার), শিখর ধাওয়ান, কেভি কৌশল এবং সঞ্জু। যশস্বীর চওড়া ব্যাটে ভর করেই তিন উইকেটে মুম্বই তোলে ৩৫৮ রান। ঝাড়খণ্ড অলআউট হয়ে যায় ৩১৯ রানে। এর আগে কেরল এবং গোয়ার বিরুদ্ধেও দুরন্ত ব্যাটিং উপহার দিয়েছে যশস্বী।
মাত্র এগারো বছর বয়সে উত্তরপ্রদেশের বাদোহি থেকে মুম্বই যায় যশস্বী। লক্ষ্য বাইশ গজে নিজেকে প্রমাণ করা। প্রথমে একটি ডেয়ারির দোকানে থাকত। কিন্তু সেখানে কাজে বিশেষ সাহায্য করতে না পারায় দোকানের মালিক তাকে তাড়িয়ে দেয়। তারপর কিছুদিন এক আত্মীয়ের বাড়িতে থেকে খেলাধুলো করে। কিন্তু জায়গার অভাবে সেখানে বেশিদিন ঠাঁই হয়নি। এরপর মুসলিম ইউনাইটেড ক্লাবের তাঁবুতে থাকতে শুরু করে উঠতি ব্যাটসম্যান। কিন্তু গরমে সেখানে ঘুমানো কঠিন হয়ে পড়ত। তাই অনেক সময় খোলা আকাশের নিচেই রাত কাটাত যশস্বী। কিন্তু খেলা চালিয়ে যাওয়ার জন্য অর্থের প্রয়োজনও ছিল। তাই পানি পুড়ি (ফুচকা) বিক্রি শুরু করে সে। বল বয় হিসেবেও রোজগার করেছে। এরপর আজাদ ময়দানে কোচ জোয়ালা সিংয়ের চোখে পড়তেই জীবন নয়া মোড় নেয়। বাকিটা ইতিহাস। মুম্বইয়ের তরুণের জীবন সংগ্রাম নিঃসন্দেহে অন্যদের অনুপ্রেরণা দেবে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.