স্টাফ রিপোর্টার: পঁচিশে ডিসেম্বরের কলকাতায় টিম হোটেলের এক মহিলার সঙ্গে অভব্য আচরণ করে টিম থেকে বিতাড়িত হলেন দুই দিল্লি ক্রিকেটার! পত্রপাঠ তাঁদের বাড়ি পাঠিয়ে দেওয়া হল!দিল্লি টিম থেকে বহিষ্কৃত দুই ক্রিকেটার, লকশয় থারেজা এবং কুলদীপ যাদব।
শেষাক্ত জন অবশ্যই ভারতীয় চায়নাম্যান কুলদীপ যাদব নন। কিন্তু প্রথম জন লকশয় আবার টিমের সহ অধিনায়ক ছিলেন। গত পঁচিশ ডিসেম্বরই রাতে শহরে ঢুকেছে দিল্লি অনূর্ধ্ব-২৩ টিম। শোনা গেল, বড়দিনের উৎসব রাতেই কুৎসিত ঘটনাটা ঘটে। বাইপাসের ধারের যে হোটেলে উঠেছে দিল্লি টিম, সেখানেই উপস্থিত এক মহিলার সঙ্গে অভব্য আচরণ শুরু করে দেন দুই ক্রিকেটার লকশয় এবং কুলদীপ! প্রথমে উত্যক্ত করা, তার পর রাতে সেই মহিলার রুমের দরজায় গিয়ে নাকি নক করেন তাঁরা!
দিল্লি টিম প্রথম দিকে জানতেই পারেননি, ম্যাচ খেলতে এসে কী কাণ্ড ঘটিয়ে বসেছেন তাঁদের সহ-অধিনায়ক এবং এক ক্রিকেটার। হোটেলের রিসেপশনিস্ট প্রথমে ব্যাপারটা অনূর্ধ্ব-২৩ দিল্লি কোচ হিতেশ শর্মা এবং ম্যানেজার অতুল মাহিন্দ্রার কাছে রিপোর্ট। হতচকিত দু’জন প্রথমে বিশ্বাসই করতে চাননি, টিমের দুই ক্রিকেটার এ রকম কুকীর্তি ঘটিয়ে বসেছে বলে। কিন্তু এরপর হোটেলের তরফে সিসিটিভি ফুটেজ দেখানো হয় দিল্লি টিমকে। যেখানে পরিষ্কার দেখা যায়, দুই ক্রিকেটার এক মহিলাকে বিরক্ত করছেন। হোটেল রুমের দরজায় গিয়ে নক করছেন।
এরপর দুই ক্রিকেটারকে পত্রপাঠ দিল্লি ফেরত পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলা হয়।এমন দু’জনকে বদলে পাঠানো হয়, যাঁরা আবার শিবিরেই ছিলেন না। সে যাক গে যাক। পুরো ঘটনাটাই ভারতীয় বোর্ড প্রেসিডেন্ট সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়কে জানানো হবে। দিল্লি প্রবল চেষ্টা করেছিল ব্যাপারটাকে চেপে রাখতে। দিল্লির নির্বাচক কমিটির প্রধান বান্টু সিং পুরোপুরি মুখ বন্ধ করে দেন। এমনকী সিএবির তরফ থেকে যাঁকে অনূর্ধ্ব ২৩ দিল্লির স্থানীয় ম্যানেজার যাঁকে নিযুক্ত করা হয়েছিল, সেই কল্লোল সেনও বললেন যে তিনি কিছু জানেন না। কিন্তু গত রাত থেকেই লকশয়-কুলদীপের কীর্তির কথা জানাজানি হতে শুরু করে। বাংলা জুনিয়র এবং সিনিয়র দু’টো টিমের ক্রিকেটাররা জেনে যান দিল্লি টিমে কিছু একটা হয়েছে। মহিলা সংক্রান্ত কোনও ঝামেলায় তারা দু’জনকে দিল্লি ফেরত পাঠিয়েছে। ম্যাচের আগের দিন পনেরো জনের স্কোয়াড দুর্নীতিদমন শাখার অফিসারের হাতে তুলে দেওয়ার একটা নিয়ম আছে। সেই অনুযায়ী, ক্রিকেটার-সাপোর্ট স্টাফদের ছবি বসানো হয়। শোনা গেল, বৃহস্পতিবার দিল্লি টিম মিটিংয়ের পরে সেই লিস্ট নাকি দুর্নীতিদমন অফিসারকে দিতে পারেনি। দিয়েছে শুক্রবার সকালে।
রাতের দিকে দিল্লি ক্রিকেট সংস্থার সচিব বিনোদ তিহারা ফোনে বললেন, ‘‘আমি পুরো ব্যাপারটা জানি না। কিছু কিছু কানে এসেছে। এটা ঠিক যে, দু’জন ক্রিকেটারকে কলকাতা থেকে ফেরত পাঠানো হয়েছে। শুনলাম ওরা নাকি হোটেলে মাঝরাতে কারও ঘরে নক করছিল। তবে আমরা যদি দেখি ক্রিকেটাররা দোষী, তা হলে নির্বাসিত করে দেব।’’ এর বেশি কিছু ভাঙতে চাইলেন না দিল্লি ক্রিকেট সংস্থার সচিব। কিন্তু তাতে কী? কবেই বা শুধুমাত্র দরজায় নক করার জন্য ক্রিকেটারকে নির্বাসিত করার কথা ভাবা হয়েছে!
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.