গৌতম গম্ভীর: রবিবার ইশ সোধিকে শুধু একবারই কঠিন পরীক্ষার মুখে পড়তে হয়েছিল। আর সেটা কখন জানেন? ম্যাচ শেষে সাংবাদিক সম্মেলনে। একজন ভারতীয় সাংবাদিক সোধিকে বলেন, হিন্দিতে একটা প্রশ্নের জবাব দিতে। উত্তরে সোধি বলে, “বুঝতে পারছি স্যর আমায় আজ খুব কঠিন পরীক্ষা দিতে হবে। আমার মা এটা দেখছেন। যদি একটুও ভুল হিন্দি বলি তাহলে অনিবার্য ভাবে মায়ের বকুনি খেতে হবে।”
সাংবাদিক সম্মেলন বাদ দিলে চলতি বিশ্বকাপে (T20 World Cup) বাকি সময়টা খুব বেশি সমস্যায় পড়তে হয়নি সোধিকে। বল হাতে রোহিত শর্মা আর বিরাট কোহলির মতো ব্যাটারদের একদম নাস্তানাবুদ করেছে নিউজিল্যান্ডের প্রতিভাবান স্পিনার। চার ওভারে ১৭ রান দিয়ে দু’উইকেট নেয়। সোধির স্পেলের বিশ্লেষণ করতে গিয়ে শুধু একটা শব্দই ব্যবহার করব- অবিশ্বাস্য।
আসল প্রশ্নটা কী জানেন? নিউজিল্যান্ডের বোলাররা দুর্দান্ত বোলিং করেছে নাকি ভারতের (Team India) ব্যাটিং খারাপ ছিল? বিপক্ষের জন্য প্রশংসা বরাদ্দ রাখতে কোনও অসুবিধা নেই। কিন্তু কোহলি (Virat Kohli) আর ওর দল একদমই নিজেদের সেরাটা দিতে পারেনি। নিউজিল্যান্ডকে একটু বেশিই বিশ্বমানের দেখিয়েছে কারণ ভারত নিষ্প্রভ ছিল। দূর থেকে দেখে মনে হল ভারতের কোনও নির্দিষ্ট প্ল্যানিং ছিল না। ক্রিকেটাররা বুঝতে পারেনি ওদের ঠিক কী করতে হবে। উইকেট সম্বন্ধেও কোনও আন্দাজ ছিল না। পিচ নিয়ে পড়াশোনো ঠিকঠাক হয়নি বলেই ভারত চেয়েছিল ১৭০ থেকে ১৮০ তুলতে। আর এমন একটা রানে পৌঁছতে গিয়েই ঝুঁকির শট মারতে গেল ভারতীয় ব্যাটাররা। নিটফল, ১১০ রানে থামতে হল ভারতকে। সত্যি বলতে এমন কন্ডিশনেও ভারতীয় ব্যাটারদের ক্ষমতা আছে সাবলীল ব্যাটিং করার। দলে একজন কোহলি তো আছে, যে সব সময় স্ট্রাইক রোটেট করতে পারে। লোকেশ রাহুল (KL Rahul) আছে যার গ্রাউন্ড স্ট্রোকগুলো দেখার মতো। সূর্যকুমার যাদব দলে ছিল না ঠিকই, তাতেও ও পাওয়ার প্লের পরেও রান করতে পারত। সংক্ষেপে বললে, রবিবার ভারতকে একটু ভেবেচিন্তে ব্যাটিং করতে হত। উলটে ভারতীয় ব্যাটাররা হার্ড হিটার হতে গিয়ে ব্যর্থ হল।
পরিষ্কার বলছি কোনও সময় মনে হয়নি কোহলি স্ট্র্যাটেজিস্ট হিসাবে দারুণ। রবিবারও স্ট্র্যাটেজিস্ট কোহলি আবারও হতাশ করল। মানছি পাকিস্তানের বিরুদ্ধে হেরেছে ভারত। তাতেও দল পালটানোর কী দরকার ছিল? আবার দেখলাম ব্যাটিং অর্ডার নিয়েও পরীক্ষানিরীক্ষা করা হল। রোহিত শর্মার জায়গায় ওপেন করল ঈশান কিষান। এমএস ধোনির ক্যাপ্টেন্সিতে অনেক ম্যাচ খেলেছি। জানি শুধুমাত্র একটা ম্যাচের রেজাল্টের উপর নির্ভর করে দল পালটাত না ধোনি। আমি নিশ্চিত কোহলির সিদ্ধান্তকে সাপোর্ট স্টাফের কোনও সদস্যই চ্যালেঞ্জ করে না।
দেখুন খুব বড় অঘটন না ঘটলে আমাদের বিশ্বকাপ অভিযান প্রায় শেষ। আর অঘটন ঘটার আগেও আমাদের আজ সাহসী একটা আফগানিস্তান দলের চ্যালেঞ্জ সামলাতে হবে। আফগানিস্তানের স্পিনাররা দারুণ ছন্দে আছে। ম্যাচের আগে শুধু বলব ভারতীয় দল যাতে অযথা খুব বেশি চাপ না নেয়। প্রথম দু’ম্যাচে যে ব্র্যান্ডের ক্রিকেট খেলেছে সেটা যাতে পালটায়। শরীরী ভাষা দেখে যেন মনে হয় ক্রিকেটাররা ইতিবাচক মানসিকতা নিয়েই মাঠে নেমেছে। বিশ্বাস করুন ঘুরে দাঁড়াতে এটুকুই যথেষ্ট!
(দীনেশ চোপড়া মিডিয়া/গেমপ্ল্যান)
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.