Advertisement
Advertisement

T20 World Cup: ইতিহাসের চাকা ঘুরল মরুশহরে, পাকিস্তানের কাছে লজ্জার হার বিরাট-বাহিনীর

ব্যাটিং, বোলিং, ফিল্ডিং-তিন বিভাগেই পরাস্ত ভারত।

T20 World Cup: Pakistan wins in style against India | Sangbad Pratidin
Published by: Krishanu Mazumder
  • Posted:October 24, 2021 10:59 pm
  • Updated:October 24, 2021 11:32 pm  

ভারত: ১৫১-৭ (কোহলি ৫৭, পন্থ ৩৯)
পাকিস্তান: বিনা উইকেটে ১৫২ (রিজওয়ান অপরাজিত ৭৯, বাবর আজম অপরাজিত ৬৮)
পাকিস্তান ১০ উইকেটে জয়ী। 

সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ইতিহাসের চাকা অবশেষে মরুশহরে এসে ঘুরল। বিশ্বকাপে ভারতকে প্রথমবার হারাল পাকিস্তান। বিশ্বকাপের মঞ্চে ভারত বনাম পাকিস্তান (India vs Pakistan) ম্যাচ মানেই অবধারিত ভাবে তা ঢলে পড়বে ভারতের ক্যাম্পের দিকে। এই ছবিই এতদিন দেখে এসেছে ক্রিকেটবিশ্ব। এবারের টি টোয়েন্টি (ICC T20 World Cup) বিশ্বকাপের সব চেয়ে বিস্ফোরক ম্যাচের আগে ভারতের প্রাক্তন ক্রিকেটার হরভজন সিং কটাক্ষ করে প্রাক্তন পাক পেসার শোয়েব আখতারকে বলেছিলেন, ”ভারত সব অর্থেই শক্তিশালী দল। তোমাদের আর খেলার দরকার কী? তোমরা তো ওয়াকওভার দিতেই পারো!” শোয়েবের দেশ কিন্তু টি টোয়েন্টি বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচেই দুদ্দাড়িয়ে শুরু করল। ক্রিকেট মাঠে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ভারতকে ১০ উইকেটে হারিয়ে দিল। ভারতের সাত উইকেটে ১৫১ রানের জবাব দিতে নেমে ১৩ বল বাকি থাকতেই বিনা উইকেটে ১৫২ রান করে ম্যাচ জিতে নেয় পাকিস্তান। অধিনায়ক বাবর আজম ৬৮ ও রিজওয়ান ৭৯ রানে অপরাজিত থেকে যান। 

Advertisement

৫০ ওভারের বিশ্বকাপে সাত বার দেখা হয়েছিল ভারত ও পাকিস্তানের। প্রতিবারই জিতেছিল ভারত। রবিবারের মহারণের আগে টি টোয়েন্টি বিশ্বকাপে পাঁচ বার মুখোমুখি হয়েছিল দুই দেশ। ভারত ৫-০ জিতে এগিয়েছিল। অর্থাৎ ওয়ানডে ও টি টোয়েন্টি বিশ্বকাপ মিলিয়ে আগের ১২টি সাক্ষাতে ভারতই এগিয়েছিল ১২-০ ফলাফলে। কিন্তু বিশ্বকাপের ১৩ নম্বর সাক্ষাতে এসে বদলে গেল সব হিসেব। 

 

রবিবার ভারত প্রথমে ব্যাট করে ২০ ওভারে করে সাত উইকেটে ১৫১ রান। জবাবে পাকিস্তান আধিপত্য রেখেই ম্যাচটা জিতে নিল। গোটা দিন কেমন যাবে তা শুরু দেখে বোঝা যায়। টস জিতে পাক অধিনায়ক বাবর আজম ব্যাট করতে পাঠিয়েছিলেন ভারতকে। শুরুতেই বল হাতে আগুন জ্বালান শাহিন আফ্রিদি (Shaheen Afridi)। ম্যাচের চতুর্থ বলেই রোহিত শর্মার গুরুত্বপূর্ণ উইকেট তুলে নেন তিনি। ‘হিটম্যান’  তখনও খাতাই খোলেননি। ইনিংসের শুরুতে রোহিতের পা ঠিকঠাক চলে না। ঢিলেঢালা একটা ব্যাপার থাকে তাঁর খেলায়। কিন্তু সময় যত গড়াতে থাকে রোহিতের ব্যাট শাসন করতে শুরু করে বোলারদের। পাক ক্রিকেটাররা তা ভালই জানেন। বিশেষজ্ঞরাও আগেই জানিয়েছিলেন, শুরুতেই তুলে নিতে হবে রোহিতের মূল্যবান উইকেট। আফ্রিদি সেই কাজটাই করলেন। যে বলে মুম্বইকরকে ফেরালেন, তা এককথায় দুর্দান্ত। ডাগ আউটে রোহিত যখন ধীর পায়ে ফিরছেন, তাঁর শরীরী ভাষাই বলে দিচ্ছিল এই ডেলিভারি তিনিও হয়তো ইনিংসের শুরুতে আশা করেননি। 

[আরও পড়ুন: T20 World Cup: আফ্রিদির আগুনে বোলিং, বিরাটের ইনিংসে লড়াইয়ে থাকল ভারত]

ইনিংসের শুরুতেই ভারতের ইনিংসে ঠকঠকানি ধরিয়ে দেন আফ্রিদি। নিজের দ্বিতীয় ওভারে লোকেশ রাহুলের (৩) স্টাম্প ভেঙে দেন দুর্দান্ত ডেলিভারিতে। অথচ এই লোকেশ রাহুল এবারের আইপিএলে ৬২৬ রান করেছেন। শাহিন আফ্রিদির দুরন্ত গতির বলটা লোকেশ রাহুলের ডিফেন্স ভেঙে দিল। সেরা ফর্মের ওয়াসিম আক্রম, মহম্মদ আমিরকে তখন মনে করাচ্ছিলেন আফ্রিদি। ৬ রানে ২ উইকেট হারিয়ে ভারত তখন রীতিমতো ধুঁকছে। 

 

সূর্যকুমার যাদবকে ‘ক্রাইসিস ম্যান’ বলা হয়। আফ্রিদিকে ছক্কা হাঁকিয়ে চাপ কমানোর চেষ্টা একটা করেছিলেন তিনি। ভারত অধিনায়ক বিরাট কোহলির (Virat Kohli) সঙ্গে পার্টনারশিপে ২৫ রান জোড়েন তিনি। কিন্তু বেশিদূর টেনে নিয়ে যেতে পারেননি। হাসান আলির বলে সূর্যকুমার ফিরলেন মাত্র ১১ রান করে। উইকেট কিপার মহম্মদ রিজওয়ান পাখির মতো শরীর ছুঁড়ে সূর্যর ক্যাচ ধরেন। ভারত তখনও বিপন্মুক্ত নয়।  

ঋষভ পন্থ যে কোনও দিন যে কোনও সময়ে বিপজ্জনক হয়ে উঠতে পারেন। আজ সবদিক থেকেই মঞ্চ প্রস্তুত ছিল তাঁর জন্য। অন্য প্রান্তে অধিনায়ক বিরাট কোহলি। ভারত অধিনায়ক নিজের ছন্দে নেই তখন। শুরুর ধাক্কা সামলে পন্থ  ও কোহলি মিলে ৫৩ রানের পার্টনারশিপ গড়েন। পন্থ জমে যাওয়ার পরে উইকেট ছুড়ে দিলেন শাদাব খানের বলে। তার আগের ওভারেই হাসান আলিকে পরপর দু’ বলে দুটো ছক্কা হাঁকান পন্থ। কিন্তু শাদাব খানের পরের ওভারেই তুলে মারতে গিয়ে টাইমিংয়ের গন্ডগোলে বোলার শাদাব খানের হাতেই ধরা পড়লেন ভারতের তরুণ উইকেটরক্ষক। 

 

ভারতকে টানার কাজটা করলেন বিরাট কোহলি। তাঁর জন্যই ভারত ২০ ওভারের শেষে ভদ্রস্থ স্কোর করে। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে আইসিসি টুর্নামেন্টে কোহলি পাঁচশোর বেশি রান করে ফেললেন এদিন। অন্য প্রান্ত থেকে উইকেট যাচ্ছে নিয়ম করে, স্কোর বোর্ডে রান উঠছে না সেভাবে, কোহলি শেষ পর্যন্ত টিকে থাকলে বড় রান হতেই পারে। কোহলি সেই লক্ষ্যেই অবিচল ছিলেন। একটা দিক ধরে রাখলেন। ৪৫ বলে ৫০ রান করেন। শেষ পর্যন্ত কোহলিকে ৫৭ রানে ফেরালেন সেই শাহিন আফ্রিদিই। ৪ ওভারে ৩১ রানে তিনটি উইকেট নেন পাক পেসার।

আফ্রিদির জন্যই ভারতকে চাপে রাখতে পেরেছিল পাকিস্তান। কিন্তু ভারতের কোনও বোলার আফ্রিদি হয়ে উঠতে পারেননি। টি টোয়েন্টিতে ১৫১ রান খুব একটা বড় টার্গেট নয়। বিশেষ করে যে দলে রয়েছেন বাবর আজম, রিজওয়ানের মতো ব্যাট।তাদের থামিয়ে রাখতে গেলে শুরু থেকেই উইকেট তুলতে হত। কিন্তু ভুবনেশ্বর কুমার প্রথম ওভারে ১০ রান দিলেন। দ্বিতীয় ওভারে শামি দিলেন ৮ রান। ম্যাচ যত গড়াতে থাকল বাবর আজম ও রিজওয়ানের দাপট বাড়তেই লাগল। মহম্মদ শামি, বুমরা, ভুবির মতো বোলার থাকা সত্বেও একটা উইকেটও তুলতে পারল না ভারত। লজ্জার হার দিয়ে অভিযান শুরু করল ভারত। 

[আরও পড়ুন: T20 World Cup: ক্যাচ মিসেই ম্যাচ মিস, সুপার-১২ রাউন্ডের প্রথম ম্যাচেই মুখ থুবড়ে পড়ল বাংলাদেশ]

২০২৪ এর পূজা সংক্রান্ত সমস্ত খবর জানতে চোখ রাখুন আমাদের দেবীপক্ষ -এর পাতায়।

চোখ রাখুন
Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement