বিরাটের সঙ্গে আলাপচারিতায় প্রাক্তন ক্যারিবিয়ান পেসার হল।
দেবাশিস সেন, বার্বাডোজ: দুই পৃথিবীর বোধহায় দেখা হল বার্বাডোজে। একসময়ের ত্রাস ধরানো ক্যারিবিয়ান পেসার ওয়েসলি হল আত্মজীবনী গ্রন্থ ‘আনসারিং টু দ্য কল’ তুলে দিলেন বিরাট কোহলি ও রোহিত শর্মার হাতে। কোহলির হাতে বই তুলে দিয়ে হল তাঁকে পরামর্শ দিয়ে বলেন, ”তুমি আরও কয়েকটা সেঞ্চুরি করে ফেলো দ্রুত।” শচীন তেণ্ডুলকরের একশো সেঞ্চুরির রেকর্ডের পিছনে ধাওয়া করছেন কোহলি। ওয়েসলি হল তা জানেন না, এমন নয়। কোহলিও যাতে সেঞ্চুরির এভারেস্টে আরোহন করতে পারেন, সেই পরামর্শই যেন তারকা ভারতীয় ক্রিকেটারকে দিয়ে গেলেন ওয়েসলি হল।
সেই ওয়েসলি হল। ১৯৬০ সালের সেই টাই টেস্টের অন্যতম নায়ক। ইতিহাসের প্রথম টাই টেস্টের শেষ বলটি করতে যাওয়ার আগে যাঁকে ফ্র্যাঙ্ক ওরেল বারবার বলছিলেন, ”ওয়েস, মনে রেখো, তুমি যদি নো বল করো, তাহলে তুমি কখনও বার্বাডোজে ফিরতে পারবে না।”
ম্যাচের শেষ ওভার করেন ওয়েসলি হল। সেই ওভারে অস্ট্রেলিয়ার দরকার ছিল মাত্র ৬ রান। হাতে তিন উইকেট। শেষ ওভারেই তিনটি উইকেট হারায় অস্ট্রেলিয়া। ওভারের দ্বিতীয় বলে বেনোকে ফেরান ওয়েস হল। তার পরে দুটো রান আউট হওয়ায় অল আউট হয়ে যায় অজিরা। ব্রিসবেনের সেই টাই টেস্টে ওয়েস হল নেন ৯টি উইকেট। সেই কিংবদন্তি হল এসেছিলেন ভারতের অনুশীলনে। সেখানেই দেখা হয় ভারত অধিনায়ক রোহিত শর্মা, বিরাট কোহলির সঙ্গে।
এই যুগের অন্যতম সেরা ব্যাটার বিরাট কোহলির সঙ্গে আলাদা করে কথা বলেন কিংবদন্তি ক্যারিবিয়ান তারকা। কোহলির (Virat Kohli) সঙ্গে আলাপচারিতায় মেতে ওঠেন তিনি। কোহলিকে তিনি বলেন, ”আমার কাছে আসার জন্য ধন্যবাদ। তুমি প্র্যাকটিসে এসেছিলে। প্র্যাকটিস করতে এসে আমার মতো ওল্ড ম্যানকে পেলে।” জবাবে স্মিত হাসি মুখে ঝুলিয়ে কোহলি বললেন, ”নট অ্যাট অল। মাই প্লেজার।”
স্কুলে পড়ার সময়ে তিনি ছিলেন উইকেট কিপার-ব্যাটাসম্যান। কিন্তু সেই হলই পরবর্তীকালে কিংবদন্তি ফাস্ট বোলার হয়ে ওঠেন। কিংবদন্তি ফাস্ট বোলার কোহলিকে বলেন, ”আমি অনেক গ্রেট প্লেয়ার দেখেছি। তুমি একজন সত্যিকারের গ্রেট। আমি তোমাকে বলছি, কারণ এটাই সত্যি। ঈশ্বর তোমার মঙ্গল করুন। ভারতের হয়ে তুমি খেলা চালিয়ে যাবে বলেই আমার বিশ্বাস। আমি তোমার পরিসংখ্যান জানি। তোমার সেঞ্চুরির সংখ্যা আশি। আরও কয়েকটা সেঞ্চুরি করে ফেলো।” ওয়েস্ট ইন্ডিয়ান কিংবদন্তি পেসারের কাছ থেকে বইটি সংগ্রহ করার পরে তাঁর সঙ্গে ছবিও তোলেন কোহলি। ২০২২ সালে প্রকাশিত হয় হলের আত্মজীবনী ‘আনসারিং টু দ্য কল’। তাঁর বর্ণময় ক্রিকেট পরিক্রমাই তুলে ধরা হয়েছে। চলতি বছর সেই আত্মজীবনীর দ্বিতীয় অংশ প্রকাশিত হয়েছে। এই অধ্যায়ে হলের সেনেটর এবং রাজনৈতিক জীবন নিয়ে লেখা হয়েছে। হল বলছেন, ”আমি আজ তিনটি বই দিলাম। একটা বই দিয়েছি অধিনায়ক রোহিত শর্মাকে। আর দুটি বই বিরাট কোহলি আর কোচ রাহুল দ্রাবিড়কে। তিন জনই গ্রেট প্লেয়ার। গ্রেট প্লেয়াররাও সম্মানিত হচ্ছে দেখে ভালো লাগে। অনেক সময়ে গ্রেটরা উপেক্ষিত থেকে যান।”
বৃহস্পতিবার টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের (T20 World Cup 2024) সুপার এইটে ভারত নামছে আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে। হলের পেপ টক নিশ্চয়ই তাতাবে কোহলিকে। বাকি উত্তর পাওয়া যাবে বার্বাডোজে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.