সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ২০১৯ সালে বিসিসিআইয়ের মসনদে বসেছিলেন সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়। এবার ‘সিংহাসনচ্যুত’ হওয়ার পথে ভারতের প্রাক্তন অধিনায়ক। নেপথ্যে ক্রিকেটীয় কারণ নাকি মাঠের বাইরের ইস্যু? এই নিয়েই শুরু হয়ে গিয়েছে তরজা। দ্বিতীয়বার বোর্ড প্রেসিডেন্টের পদের দৌড়ে সৌরভের না থাকাকে রাজনৈতিক প্রতিহিংসা হিসেবেই ব্যাখ্যা করছে তৃণমূল কংগ্রেস। যদিও বিজেপির পালটা দাবি, এর সঙ্গে রাজনীতির কোনও সম্পর্ক নেই।
একুশের বিধানসভা নির্বাচনের আগে শিরোনামে উঠে এসেছিল সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের নাম। তাঁকে বাংলার মুখ করে তৃণমূলের বিরুদ্ধে লড়তে চেয়েছিল গেরুয়া শিবির। এমনকী বঙ্গ সফরে এসে মহারাজের বাড়িতে মহাভোজও খেয়েছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। উপস্থিত ছিলেন একাধিক বিজেপি নেতা-সাংসদ। কিন্তু তারপরও বরফ গলেনি। রাজনীতিতে যোগ দিতে আগ্রহী নন মহারাজ। নিজের এই অবস্থান থেকে একটুও সরেননি সৌরভ। পরবর্তীতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে এক মঞ্চেও দেখা গিয়েছিল সৌরভকে। যদিও সেখানেও নিজের গায়ে রাজনীতির রং লাগতে দেননি ‘দাদা’। তবে তৃণমূলের দাবি, বিজেপির ‘শর্ত’ না মানাতেই সভাপতির পদ হারাতে হচ্ছে সৌরভকে (Sourav Ganguly)।
তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ (Kunal Ghosh) বলেন, “উনি বাংলার গর্ব। তিনি নেই। অথচ রাজনীতিবিদ পিতার পুত্র (জয় শাহ) থাকছেন। আসলে পরিবারতন্ত্র। বিজেপি আবার পরিবারতন্ত্র নিয়ে কথা বলেন। বড় নেতার পুত্র থাকলেন। আর এক নেতার পুত্র দায়িত্বে আসছেন। এটা নিয়ে প্রশ্ন থাকছেই। তবে সৌরভ নিজে ব্যাখ্যা দেওয়ার যথার্থ লোক। তার নিজের মানসিক পরিস্থিতি কী, সেটা বোঝা যাচ্ছে না। তবে সারা বাংলার মানুষের কাছে বিজেপি প্রচার করল তাদের দলে আসছেন সৌরভ। এই জোয়ার যখন তারা তৈরি করেছিল, তার ভাটার পরিস্থিতিও বিজেপিকে সহ্য করতে হবে। তার দায় নিতে হবে। এটার সঙ্গে রাজনীতি আছে কিনা সে দিকে যাচ্ছি না।”
একই সুর তৃণমূল সাংসদ শান্তনু সেনের টুইটেও। “রাজনৈতিক প্রতিহিংসার আরও একটা উদাহরণ। অমিত শাহর ছেলেকে সচিব পদে রেখে দেওয়া যাচ্ছে। কিন্তু বাদ সৌরভ। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের রাজ্যের বলেই কি সৌরভের সঙ্গে এমনটা হল? নাকি বিজেপিতে যোগ না দেওয়ায়?” প্রশ্ন তাঁর।
এদিকে, সিপিএম নেতা অশোক ভট্টাচার্য বলছেন, “খেলার দুনিয়া থেকে রাজনীতিকে দূরে রাখা উচিত। আজকাল অনেক ফুটবল ক্লাবে রাজনৈতিক দলের পতাকা দেখা যায়। যা কাম্য নয়। এক্ষেত্রেও চাইব রাজনীতির রং যেন না লাগে। সৌরভও যেন রাজনীতি থেকে দূরে থাকে।”
Another example of political vendetta.
Son of @AmitShah can be retained as Secretary of #BCCI.
But @SGanguly99 can’t be.
Is it because he is from the State of @MamataOfficial or he didn’t join @BJP4India ?
We are with you Dada!
— DR SANTANU SEN (@SantanuSenMP) October 11, 2022
তবে ভারতীয় বোর্ডে সৌরভের অধ্যায় শেষের সঙ্গে রাজনৈতিক যোগের অভিযোগ মানতে নারাজ পদ্মশিবির। বিজেপির সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলছেন, “এমন তো কোনও চুক্তি ছিল না যে তিনিই সভাপতি পদে থেকে যাবেন। কিংবা সকলে একসঙ্গে চলে যাবেন। তাই অযথা এর সঙ্গে রাজনীতিকে যোগ করার অর্থ নেই। সৌরভ বিরাট বড় ক্রিকেটার। তাঁকে কেউ ছোট বা বড় করতে পারবে না। এটা ঠিক যে সৌরভকে বিজেপি দলে চেয়েছিল, কিন্তু তার সঙ্গে এর কোনও যোগ নেই।” শুধু বিসিসিআই-ই নয়, সৌরভের আইসিসিতেও যাওয়ার সম্ভাবনাও ক্ষীণ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.