গৌতম ভট্টাচার্য: মোটামুটি পরিচিত, সহ ক্রিকেটার আর বন্ধু–তিন শ্রেণিরই অভিজ্ঞতা বলে, সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় (Sourav Ganguly) যে কোনও পরিস্থিতিতে অকুতোভয়। বৃহস্পতিবার বিকেলে কথা বলে অবশ্য মনে হল, কুড়ি ঘণ্টা আগের অভিজ্ঞতা রাজ্যের আর সব নাগরিকের মতো তাঁকেও নড়িয়ে দিয়েছে।
The mango tree in the house had to be lifted, pulled back and fixed again .. strength at its highest 😂😂 pic.twitter.com/RGOJeaqFx1
— Sourav Ganguly (@SGanguly99) May 21, 2020
প্রশ্ন: কলকাতা শহরের অবস্থা এখন খুব খারাপ। আপনার পরিস্থিতি কী?
সৌরভ: জানি শহরের অবস্থা খারাপ। আমার এখানেও বাড়ির মধ্যে বেশ কিছু গাছ পড়েছে।
প্রশ্ন: তাও আপনার বাড়ি বেহালার মধ্যে। বেশ ঘনবসতি এলাকায়। ফাঁকা জায়গায় হলে আরও হয়তো তাণ্ডবের মধ্যে পড়তেন।
সৌরভ: যথেষ্ট পড়েছি। ইট ওয়াজ টেরিফাইং। আমার জীবনে এ রকম কখনও কিছু দেখিনি।
প্রশ্ন: বাড়ির মধ্যে তো একটা বড় লন আর গাছটাছ রয়েছে।
সৌরভ: সেগুলোই শুধু পড়েনি। বাড়ির বাইরের ল্যাম্পপোস্টটা পাঁচিল টপকে ভেতরে পড়েছে। বললাম তো, আমার সাতচল্লিশ বছর বয়স। জীবনে এমন বিভীষিকায় ভরা দিন দেখিনি।
প্রশ্ন: ক্রিকেটজীবনে এক-আধটা মিড এয়ার টার্বুলেন্সে আপনি পড়েছেন। সেগুলোকে তুলনায় রাখা যায়?
সৌরভ: না। কালকের সঙ্গে কোনও কিছুরই তুলনা হয় না।
প্রশ্ন: বাড়িতেই ছিলেন আগাগোড়া?
সৌরভ: হ্যাঁ। আগে থেকেই সাইক্লোনের ফোরকাস্ট ছিল। কিন্তু সেটা এই পর্যায়ে যেতে পারে দুঃস্বপ্নেও ভাবিনি। একটা সময় তো ভেবে কুলকিনারা করতে পারছিলাম না কোন বাড়িটা কোন সময় ধসে পড়বে? ইট ওয়াজ অ্যাবসোলিউটলি শকিং।
প্রশ্ন: বাড়িতে পাওয়ার আছে?
সৌরভ: হ্যাঁ।
প্রশ্ন: ইন্টারনেট?
সৌরভ: ইন্টারনেট নেই।
প্রশ্ন: অতীতে বাংলার ত্রাণের কাজে আপনাকে এগিয়ে আসতে দেখা গিয়েছে। আয়ালার সময় এগিয়ে এসেছিলেন। এবার কিছু ভাবছেন?
সৌরভ: টু আর্লি। তবে কোনওরকম প্রয়োজন হলে আমি সব সময় তৈরি। করোনাতেও তো নেমেছি। আমার কথা হল, দেখতে হবে কী হবে সাহায্য করা যায়? কী ভাবে সত্যি দুর্গতদের উপকার হবে? কী ভাবে এদের হাতে ত্রাণ পৌঁছবে?
প্রশ্ন: অতীতে ত্রাণের জন্য বড় বড় চ্যারিটি ম্যাচ খেলানো হয়েছে। আপনি যখন বোর্ড প্রেসিডেন্ট বাংলার জন্য এমন কিছু করা যায় না?
সৌরভ: প্রবলেম হচ্ছে এখন তো ঠিক নর্ম্যাল সময় নয়। করোনা রেস্ট্রিকশন রয়েছে প্রচুর।
প্রশ্ন: এখন তো আবার প্লেনটেন চালু হচ্ছে।
সৌরভ: হচ্ছে। কিন্তু দেখুন, শেষমেশ কোথায় গিয়ে দাঁড়ায়? ট্রেন চালু হয়ে আবার বন্ধ হয়ে গেল। একটা কথা মনে রাখতে হবে যে, রাজ্যে কিন্তু ৩১ মে পর্যন্ত অফিশিয়াল লকডাউন। তার ভবিষ্যৎ কী কেউ জানে না। সেই অবস্থায় আপনি ম্যাচের প্ল্যানিং করবেন কী ভাবে? আপনাকে অপেক্ষা করতেই হবে।
প্রশ্ন: বাংলা কিন্তু আপনাকে বাড়তি উদ্যোগ নিতে দেখলে ভরসা পাবে।
সৌরভ: আমি তো বললাম, ঠিক ভাবে কিছু করা হলে ত্রাণের জন্য নেমে পড়তে আমি তৈরি। বাংলার সত্যি প্রচুর ক্ষতি হয়ে গিয়েছে। দক্ষিণ আর উত্তর চব্বিশ পরগনা বিধ্বস্ত। গ্রাম বাংলার সাংঘাতিক খারাপ অবস্থা। আমাদের যে করে হোক গ্রামের মানুষদের কাছে পৌঁছতে হবে। ওখানে ত্রাণ পাঠাতে হবে।
প্রশ্ন: আজ একটা রটনা খুব শোনা যাচ্ছে। টি-টোয়েন্টি ওয়ার্লড কাপ নাকি হবে না।
সৌরভ: আমিও শুনেছি ওয়ার্ল্ড কাপ হবে না। আইসিসির এগজিকিউটিভ বোর্ড ২৮ মে মিট করছে। তারা ফাইনাল ডিসিশন নেবে।
প্রশ্ন: কিন্তু হবে না কেন?
সৌরভ: সবই কানাঘুষো। ঠিকঠাক জানি না। তবে অস্ট্রেলিয়া সরকারের হায়েস্ট লেভেল থেকে বোধহয় এতগুলো দেশকে অক্টোবর-নভেম্বরে এসে খেলার অনুমতি দেওয়া হচ্ছে না।
প্রশ্ন: তা হলে কি পুরো বাতিল?
সৌরভ: না পুরো বাতিল নয়। পরের বছর হয়তো হবে।
প্রশ্ন: সেই ফাঁকা সময়টায় তো স্বচ্ছন্দে আইপিএল হতে পারে?
সৌরভ: হতেই পারে। কিন্তু রেস্ট্রিকশন তো এখানেও কত রকম রয়েছে। কী করে আগাম প্ল্যানিং সম্ভব? আর একবার মনে করিয়ে দিচ্ছি, আমরা কিন্তু লকডাউনেই রয়েছি।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.