ঊষা ঊত্থুপ: দেশে যাঁরা ক্রিকেট খেলেছেন, তাঁদের মধ্যে শচীন শ্রেষ্ঠতম। এ আর নতুন কথা কী! আমি বলতে চাই, দীর্ঘদিন ধরে ভারতবাসীর কাছে শচীন এক আবেগেরই সমনামী হয়ে থেকেছেন। শচীন ব্যাট হাতে নামলেই আমাদের মধ্যে যেমন উত্তেজনা, তেমনই ভয় কাজ করে। আমরা কিছুতেই চাইতাম না যে, শচীন আউট হয়ে যান। জানি, তাহলেই ভারত চাপে পড়ে যাবে। তাঁকে ঘিরেই আমাদের স্বপ্ন ডানা মেলত। আমাদের উপভোগ-উচ্ছ্বাস সবই শচীনকে (Sachin Tendulkar) কেন্দ্র করে। এতগুলো মানুষের আবেগের ভরকেন্দ্র হয়ে ওঠা তো মুখের কথা নয়।
আমার মতে শচীনের সব থেকে বড় গুণ হল, তিনি নিরহংকার-নম্র। যদি একবার কেউ নিজের ইগোকে মাথায় ওঠার সুযোগ দেয়, তাহলে সেখানেই সব শেষ। শচীনকে দেখে এটা শেখা যায়, যে, একজন মানুষ জীবনে প্রায় সবকিছু অর্জন করেছেন, তার পরও কী অসামান্যভাবে অহংহীন হয়ে থাকতে পারেন। শচীন এমন এমন কাজের মাইলস্টোন তৈরি করে রেখেছেন জীবনে, যা আমাদের অনেক কিছু শিখিয়ে দেয়। সে ১৯ বছর বয়সে আগুনে বোলিংয়ের মুখোমুখি হওয়া হোক বা ২২ বছর ধরে বিশ্বকাপের জন্য অপেক্ষা-ওঁর জীবনের পরতে পরতে লুকিয়ে আছে শিক্ষা। খারাপ সময়ের মধ্য দিয়ে আমরা সকলেই যাই।
সেই প্রতিকূলতাকে অতিক্রম করতে হবে, চ্যালেঞ্জের চোখে চোখ রেখে দাঁড়াতে হবে। শচীন আমাদের তা হাতেকলমে করেই দেখিয়েছেন। তিনি যদি ৪১ বছর বয়সে ভারতরত্ন খেতাব অর্জন করতে পারেন, তবে যে কোনও খেলোয়াড়ই সেই স্বপ্ন দেখতে পারেন। সত্যি বলতে শচীন হলেন আমাদের আকাঙ্ক্ষার সেই বিন্দু, যেখানে আমরা পৌঁছতে চাই। আর এ তো কাল্পনিক কোনও চরিত্র নয়, রক্তমাংসের মানুষ। ফলে যা কিছু আপাত অসম্ভব বলে মনে হয়, তা যে সম্ভব করে তোলা যায়, শচীনের জীবন যেন আমাদের কাছে সাফল্যের সেই বেদমন্ত্র।
ব্যক্তিগতভাবে শচীনের জন্য গান গেয়েছি আমি, তা নিশ্চিতই আমার কাছে বিশেষ স্মরণীয় মুহূর্ত। একবার এক অনুষ্ঠানে মারাঠি গান গাইছিলাম। শচীন স্বতঃস্ফূর্তভাবেই সেখানে অংশ নিয়েছিলেন। এত বড় মাপের মানুষ, আবার ঠিক যেন পাশের বাড়ির ছেলেটি। ওঁর ৫০তম জন্মদিনে আমি শুভেচ্ছা জানাই। শচীন তো আমাদের জাতীয় সম্পদ, যাঁকে নিয়ে ভারতবর্ষ গর্ব করেছে, আগামীতেও করবে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.