সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: মাত্র ২০ লক্ষ টাকায় তাঁকে দলে নিয়েছিল গুজরাট টাইটান্স (Gujarat Titans)। কিন্তু প্রথম ম্যাচ থেকেই দলের হয়ে ব্যাট হাতে জ্বলে উঠেছেন তিনি। ইম্প্যাক্ট প্লেয়ার হিসাবে প্রথম ম্যাচে নেমেছিলেন। পরের ম্যাচে চাপের মুখে ৬২ রানের ইনিংস আসে তাঁর ব্যাট থেকে। আইপিএলে তারকা হয়ে উঠেছেন তামিলনাড়ুর ব্যাটার সাই সুদর্শন (Sai Sudarshan)। মায়ের প্রশিক্ষণেই মাত্র ২১ বছর বয়সে আইপিএলের মঞ্চ মাতাচ্ছেন তিনি।
সুদর্শনের বাবা-মা দুজনেই খেলাধুলার সঙ্গে যুক্ত। মা উষা রাজ্যস্তরে ভলিবল খেলেছেন। বাবা জাতীয় স্তরের অ্যাথলিট ছিলেন। ১৯৯৩ সালের সাফ গেমসে তিনি দেশের প্রতিনিধিত্বও করেছেন। খেলাধুলার পরিবেশেই বড় হয়েছেন সুদর্শন। নানা কারণে বেশি দূর উন্নতি করতে পারেননি তাঁর মা। তাঁর ছেলে যেন সর্বোচ্চ পর্যায়ে খেলাধুলা করতে পারে, সেই চেষ্টায় দিনরাত এক করে পরিশ্রম শুরু করেন উষা।
বাবার হাত ধরে খেলার দুনিয়ায় এসে সাফল্য পেয়েছেন, এমন উদাহরণ প্রায়শই দেখা যায়। কিন্তু মায়ের কোচিংয়ে ক্রিকেট খেলছেন, সেরকম ভারতে খুব একটা দেখা যায় না। ২০২০ সালের অনূর্ধ্ব ১৯ বিশ্বকাপের দলে অল্পের জন্য সুযোগ পাননি সুদর্শন। সেই সময়েই উষা বুঝতে পারেন, সব ফরম্যাটের ক্রিকেট খেলতে গেলে ফিটনেসের উন্নতি করতে হবে। পেশায় স্ট্রেংথ ও কন্ডিশনিং কোচ উষা ছেলেকে বোঝান, ক্রিকেট খেলতে গেলে ফিট থাকাও খুবই প্রয়োজন। বিরাট কোহলির উদাহরণ দিয়ে বোঝান, চূড়ান্ত পর্যায়ের ফিটনেস থাকাটা ভাল ক্রিকেটার হওয়ার অন্যতম প্রধান শর্ত।
প্রথমে অবশ্য মায়ের কথা শুনতে খুব একটা আগ্রহী ছিলেন না সুদর্শন। কিন্তু লকডাউনের সময়ে ধীরে ধীরে ফিটনেসের প্রতি তাঁর আগ্রহ বাড়ে। নানারকম এক্সারসাইজ করতে শুরু করেন। উষা জানাচ্ছেন, এখন এক্সারসাইজ করতে খুবই ভালবাসেন গুজরাট টাইটান্সের নয়া তারকা। একটা দিনও শরীরচর্চা থেকে বিরতি নেন না সুদর্শন। তবে ছেলের খেলা টিভির সামনে বসে দেখেন না উষা। বরং সেই সময়ে ঘর বন্ধ করে পুজোয় ব্যস্ত থাকেন তিনি।
করোনা অতিমারীর পর থেকেই ক্রিকেটার হিসাবে দুরন্ত গতিতে সুদর্শনের উত্থান। তামিলনাড়ু প্রিমিয়ার লিগে সবচেয়ে বেশি দামি ক্রিকেটার হিসাবে তাঁকে কিনে নেয় লিকা কোভাই কিংস। সেখানে ভাল খেলার পুরস্কার হিসাবে আইপিএলে সুযোগ। বছর দুয়েক চেন্নাই সুপার কিংসের শিবিরে থাকার পর ২০২৩ সালের নিলামে তাঁকে কিনে নেয় গুজরাট টাইটান্স। যদিও প্রথম একাদশে সুযোগ পাওয়া নিয়ে তাঁর সংশয় ছিল। তবে কেন উইলিয়ামসন চোট পেয়ে ছিটকে যাওয়ায় তিন নম্বরে নিয়মিত খেলার সুযোগ নিশ্চিত হয়। নখিয়ার মতো গতির বোলারকে স্কুপ করে ছয় মারার দৃশ্য গেঁথে থাকবে ক্রিকেটপ্রেমীদের মনে। ক্রিকেট বিশেষজ্ঞদের তারিফ থেকে সাধারণ ক্রিকেটপ্রেমীদের প্রশংসা, সব ক্ষেত্রে এখন একটাই নাম- সাই সুদর্শন।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.